হবিগঞ্জের বানিয়াচংয়ে স্বামী-সন্তানকে বেঁধে রেখে তাদের সামনেই এক সংখ্যালঘু গৃহবধূকে ধর্ষণ করেছে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতার ছোট ভাই। গুরুতর আহত অবস্থায় ওই গৃহবধূকে সদর আধুনিক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনায় দুইজনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। তবে বুধবার বিকাল পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। এ ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন হিন্দু মহাজোটের জেলা সভাপতি অ্যাডভোকেট ত্রিলোক কান্তি চৌধুরী বিজন। তিনি বলেন, এটি চরম বর্বরতা। কোনো অবস্থাতেই এ বর্বরতা মেনে নেয়া যায় না। তিনি বলেন, এ ঘটনায়ও এখন পর্যন্ত কোনো আসামি গ্রেফতার না হওয়া অত্যন্ত দুঃখজনক। অবিলম্বে আসামিদের গ্রেফতার পূর্বক দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। বানিয়াচং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নির্মলেন্দু চক্রবর্তী জানান, মামলা দায়েরের পর থেকেই আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত আছে। মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণে জানা যায়, বানিয়াচং উপজেলার উত্তর সাঙ্গর গ্রামের সংখ্যালঘু ওই গৃহবধূকে বেশ কিছু দিন ধরে কুপ্রস্তাব দিয়ে আসছিল একই গ্রামের মনু মিয়া। কিন্তু লোক-লজ্জার ভয়ে তিনি বিষয়টি নিয়ে কারও সঙ্গে কথা বলেননি। গত ১৪ জানুয়ারি স্বামী ও সন্তান মেলায় চলে যান। এ সুযোগে মনু ঘরে ঢুকে তাকে ধর্ষণ করে। বিষয়টি স্বামীকে অবহিত করলে তিনি স্থানীয় মুরুব্বীদের কাছে বিচারপ্রার্থী হন। এরপর ১৬ জানুয়ারি সালিশে মনু নিজের অপরাধ স্বীকার করায় তাকে গ্রাম পুলিশের সহায়তায় শিকল দিয়ে বেঁধে রাখা হয়। পরদিন সংসদ সদস্য ও উপজেলা নির্বাহী অফিসারের মাধ্যমে ব্যবস্থা গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। এর পর ১৭ জানুয়রি তার ভাই উস্তার মিয়া জোরপূর্বক তাকে ছাড়িয়ে নিয়ে যায়। ওইদিনই মধ্যরাতে মনুসহ ২/৩ জন আবারও ওই গৃহবধূর বাড়িতে যায়। সিঁধকেটে ঘরে প্রবেশ করে প্রথমে গৃহবধূর স্বামীকে অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে হাত-পা বেঁধে ফেলে দুর্বৃত্তরা। পরে স্বামী ও সন্তানের সামনেই তাকে ধর্ষণ করে মনু। তখন গৃহবধূ চিৎকার দিলে তারা পালিয়ে যায়। আশপাশের লোকজন এসে তাকে উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। খবর পেয়ে হিন্দু মহাজোট নেতৃবৃন্দসহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতাকর্মীরা তাকে দেখতে হাসপাতালে ছুঁটে যান। এ ঘটনায় মঙ্গলবার রাতে মনু মিয়া ও তার ভাই উস্তার মিয়াকে আসামি করে থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। এলাকাবাসী জানান, মনু স্থানীয় মন্দরী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি ইদ্রিস মিয়ার ছোট ভাই।