ঈদের আগেই কোটা সংস্কার ও নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলনকারী সব শিক্ষার্থীর নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করেছে বিএনপি।
রোববার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ দাবি জানান দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
বিবৃতিতে আন্দোলনকারী কিশোর-কিশোরী ছাত্রছাত্রীদের নামে মিথ্যা মামলা, গ্রেফতার ও রিমান্ডে নেয়ার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন তিনি।
মির্জা ফখরুল বলেন, শিক্ষার্থীদের রিমান্ডসহ মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবি করছি। ফটোগ্রাফার শহিদুল আলমসহ সত্য কথা বলার জন্য যারা গ্রেফতার হয়েছেন, তাদেরও মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারসহ ঈদের আগেই মুক্তির দাবি জানাচ্ছি।
বিবৃতিতে বিএনপি মহাসচিব বলেন, গত কয়েক মাসে বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজ ও স্কুলের ছাত্রছাত্রীরা দুটি ভিন্ন ইস্যুতে আন্দোলন করে আসছিল। এ আন্দোলনের প্রকৃতি ছিল সম্পূর্ণভাবে ভিন্নধর্মী। শিক্ষার্থীদের কোটা সংস্কার ও নিরাপদ সড়কের দাবিতে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন প্রচলিত রাজনৈতিক ও পেশাজীবীদের আন্দোলনের সঙ্গে কোনো মিল নেই।
‘বাসের চাপায় সহপাঠীদের মৃত্যুতে স্কুল-কলেজে পড়ুয়ারা রাস্তায় দাঁড়িয়ে ছিল প্রতিবাদ জানাতে। ভবিষ্যতে প্রাণহানি থেকে সহপাঠীদের বাঁচানোসহ বিভিন্ন দাবি-দাওয়া নিয়ে কোমলমতি শিশু-কিশোরদের এ আন্দোলন ছিল সবার জন্য শিক্ষণীয়। কিন্তু সরকার বলপ্রয়োগের মাধ্যমেই নির্দোষ আন্দোলন দমাতে সর্বশক্তি নিয়োগ করেছে।’
মির্জা ফখরুল বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহযোগিতায় সরকারি ছাত্র-যুব সংগঠনের ক্যাডাররা এ শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের ওপর সশস্ত্র আক্রমণ চালায়। এতে শিশু-কিশোর ও তরুণরা রক্তাক্ত হয়েছে, শারীরিক হামলায় ক্ষতবিক্ষত হয়েছে। এই দৃশ্য জাতির মর্মমূলে নাড়া দিয়েছে, জাতি এখন স্তম্ভিত ও ব্যথিত।
তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদের রক্তাক্ত করার পরও সরকারের দমন-পীড়ন থামছে না। শুরু হয়েছে মিথ্যা মামলা দিয়ে নির্বিচারে শিক্ষার্থীদের গ্রেফতার ও রিমান্ডে নেয়ার হিড়িক।
মির্জা ফখরুল বলেন, ইতিমধ্যে উসকানি, ভাঙচুরের মিথ্যা অভিযোগে ৫১টি মামলায় আন্দোলনরত প্রায় ৯৯ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এ গ্রেফতার অভিযানে শিশু ও ছাত্রীদেরও ছাড়া হয়নি, যা সবচেয়ে অমানবিক, আতঙ্কজনক ও নজিরবিহীন ঘটনা।
আন্দোলন নিয়ে স্বাধীনভাবে মতপ্রকাশের জন্য আলোচিত্রী শহিদুল আলমসহ লেখক-শিল্পী, কলাকুশলী ও অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট কেউ-ই সরকারের রোষানল থেকে রেহাই পাননি। দেশ যেন এখন জুলুমের বৃত্তে অন্ধকূপে পরিণত হয়েছে, বলেন মির্জা ফখরুল।