পশ্চিমবঙ্গের কলকাতায় জঙ্গি সংগঠন আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের (এবিটি) আরেক সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে সেখানকার স্পেশাল টাস্কফোর্স (এসটিএফ)। গত বৃহস্পতিবার রাতে শিয়ালদহ স্টেশনসংলগ্ন জগৎ সিনেমা হল থেকে শাহদাত হোসেন ওরফে বাবু নামে ওই জঙ্গিকে গ্রেপ্তার করা হয়। শাহদাতের বাড়ি বাংলাদেশের যশোরের বেনাপোলে বলে দাবি করেছে এসটিএফ।
এসটিএফের ভাষ্যমতে, এ নিয়ে গত তিন দিনে এবিটির তিন বাংলাদেশি জঙ্গি কলকাতায় গ্রেপ্তার হলো। এর আগে গত মঙ্গলবার কলকাতা থেকে এবিটির আরো তিন সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের মধ্যে দুজন বাংলাদেশি। তারা হলো সামসাদ মিয়া ওরফে তানভীর ও রিয়াজুল ইসলাম ওরফে সুমন।
মঙ্গলবার দুই বাংলাদেশির সঙ্গে মনোতোষ দে নামে এক ভারতীয় নাগরিককে গ্রেপ্তার করা হয়। সে এবিটি জঙ্গিদের অস্ত্রের জোগান দিত বলে ভাষ্য এসটিএফের।
এসটিএফ বলছে, সামসাদ ও রিয়াজুলকে জিজ্ঞাসাবাদ করে শাহদাতের সন্ধান মিলেছে। সে রাজ্যে জঙ্গিদের যাতায়াত ও বাসস্থানের ব্যবস্থা করত। তার বিরুদ্ধে ভুয়া পরিচয়পত্র তৈরিরও অভিযোগ রয়েছে।
এসটিএফের বরাত দিয়ে ভারতীয় পত্রিকা টাইমস অব ইন্ডিয়া ও আনন্দবাজারের অনলাইন সংস্করণে বলা হয়েছে, সামসাদ ও রিয়াজুলকে জিজ্ঞাসাবাদ করে এসটিএফ গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পেয়েছে। এসব তথ্য বাংলাদেশকে জানানো হয়েছে।
এসটিএফের সূত্র দিয়ে টাইমস অব ইন্ডিয়া জানায়, ওই দুই জঙ্গিদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে, বাংলাদেশের মুক্তমনা ব্লগারদের হত্যার পরিকল্পনা করেছিল। ব্লগারদের নতুন একটি তালিকাও (হিটলিস্ট) করেছে তারা। ওই তালিকার শীর্ষে আছে ব্লগার ফারুক সাদিকের নাম। তাছাড়া আরও যাদের নাম ছিল এই হিটলিস্টে তারা হলেনঃ ব্লগার আসিফ মহিউদ্দিন, আরিফুর রহমান, অমি রহমান পিয়াল, মোঃ শরিফুল ইসলাম, সুরঞ্জয় সরকার, আরমান আহমেদ, রাসেল পারভেজ, সুব্রত শুভ, ইমরান এইচ সরকার, আব্দুল গাফফার চৌধুরী, তসলিমা নাসরিন, দাউদ হায়দার, নাইমুল ইসলাম, আসাদ নুর, রুজভেল্ট হালদার, সৈয়দ সামুন আলী, সৈয়দ সানভী অনিক হোসেন, সাইফুল ইসলাম, আব্দুল আহাদ শান্ত, আরিফ রহমান, শিপন আহমেদ, তুরিন আফরোজ, ওমর ফারুক লুক্স, মোঃ আব্দুর রহমান, শাম্মি হক, প্রমুখ।
এসটিএফ আরো বলছে, জঙ্গিরা বাংলাদেশের বিভিন্ন কারাগারে বন্দি এবিটি নেতাদের ছাড়ানোর ছকও কষেছিল।
কলকাতায় গ্রেপ্তার সামসাদ ও রিয়াজুল এবিটি সদস্য বলে নিশ্চিত করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের উপকমিশনার মহিবুল ইসলামও। তিনি বলেন, ‘আমরাও তাদের খুঁজছিলাম। তাদের গ্রেপ্তার করার পর ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা বিষয়টি আমাদের জানিয়েছেন। ’
সূত্রের বরাত দিয়ে ভারতীয় গণমাধ্যম জানায়, সামসাদ ও রিয়াজুল গত বছরের জুলাই মাসে ভারতে প্রবেশ করে। ভুয়া ‘আধার’ কার্ড (জাতীয় পরিচয়পত্র) তৈরি করিয়ে স্থায়ী হয় সামসাদ। সে বাংলাদেশের সিলেটে একটি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে পড়েছে বলে স্বীকার করেছে।