বিআরটিএ অফিসের পাশে বিএনপি ও ২০ দলের ডাকা হরতালের দিন মিনিবাসে অগ্নিসংযোগ মামলা ও পৃথক আরেকটি ঘটনায় বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামির মিছিলের সময় পেট্রোল বোমায় আঘাত করে মোহনা টিভির একটি মাইক্রোবাস ভাংচুরের ঘটনায় পৃথক দুটি মামলায় সন্দেহভাজন আসামী মামুন হাসান ও ইসমাইল হোসেন পুলিশের সাথে বন্দুক যুদ্ধে নিহত হয়েছেন।
গতকাল শনিবার, রাত তিনটায় ধামরাই উপজেলার কালামপুরের একটি ব্রিক ফিল্ড এ এই বন্দুক যুদ্ধের ঘটনা ঘটে।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রেজাউল মাসুদ জানিয়েছেন, মিনিবাস অগ্নিসংযোগের আসামী মামুন ও ইসমাইল একই মামলা সহ আরও কয়কেটি মামলায় সন্দেহভাজন কয়েকজন পলাতক আসামী কালামপুরে মেট্রো ব্রিক ফিল্ডের পাশে অবস্থান করছে শুনে সেখানে অভিযান চালায় ডিবি পুলিশের গোয়েন্দা শাখার একটি একটি দল। দুর্বৃত্তরা পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে গুলি ছুড়ে, পুলিশ ও পাল্টা গুলি ছুড়লে সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যায়।
পরে ঘটনাস্থল থেকে মামুন ও ইসমাইলের মৃত দেহ উদ্ধার করা হয়, এই সময় সেখান থেকে সন্ত্রাসীদের ব্যবহৃত দুটি পিস্তল, একটি এলজি ও তিন রাউন্ড কার্তূজ উদ্ধার করা হয়েছে, উল্লেখ করেন তিনি।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ইসমাইল হোসেন ২০১৫ সালে জামাত-বিএনপির ডাকা মিছিলের সময় পেট্রোল বোমায় আঘাত করে মোহনা টিভির একটি মাইক্রোবাস ভাংচুরের মামলা এবং মামুন হাসান ২০১৫ সালে ফেব্রুয়ারি মাসে বিআরটিএ অফিস ভবনের পাশে একটি মিনিবাসে অগ্নিসংযোগের পৃথক দুটি মামলায় সন্দেহভাজন আসামী। সে সময় সে মামলায় সকল আসামীকে গ্রেফতার করতে না পারলেও মামুন ও ইসমাইলকে সেসময়ই গ্রেফতার করা হয় এবং এতদিন তারা জেল হাজতে ছিলেন। তবে গত মাসে তারা জামিনে জেল হাজত থেকে ছাড়া পান। তারা দুজনই বিএনপির অঙ্গসংগঠন কাফরুল থানা ছাত্রদলের সক্রিয় কর্মী। জামিনে ছাড়া পাওয়ার পর থেকেই পুলিশ ধারণা করছিলো জামিনে ছাড় পাওয়া এ দুই আসামী তাদের দলের অন্য সদস্যদের সাথে যোগাযোগ করবে এবং বড় কোন নাশকতা চালাতে পারে বলেও পুলিশের কাছে সংবাদ ছিল। এবং এ সন্দেহের কারনেই ডিবি পুলিশের একটি গোয়েন্দা সংস্থা তাঁদের মুক্তির পর থেকেই তাদেরকে নিয়মিত অনুসরণ করছিলো। এবং গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তারা জানতে পারেন যে, সে মামলায় অভিযুক্ত আসামী মামুন ও ইসমাইল তাঁদের বাকি সাথিদের সাথে বড় কোন নাশকতার পরিকল্পনা করতে কামালপুরের ব্রিক ফিল্ডের কাছে দেখা করতে যাবে, এবং সে কারনেই পুলিশ সেখানে অভিযান চালায়।
ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি রাজীব আহসান বলেন, বিরোধী বিরোধী দলের আন্দোল সংগ্রামকে ব্যহত করতেই বিচার বহির্ভূত হত্যাকান্ড শুরু হয়েছে।
দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, মামুন ও ইসমাইল দুইজনই কাফরুল থানা ছাত্রদলের সক্রিয় কর্মী ছিলেন। মামলা দিয়েও তার কণ্ঠ রুদ্ধ করতে না পেরে এবং বিএনপির নেতাকর্মীদের স্তব্ধ করতেই তাদেরকে ক্রস ফায়ারে হত্যা করা হয়েছে। যদি তারা আসামী হতো বা কোন নাশকতার সাথে জড়িত থাকতো তাহলে দেশের প্রচলিত আইনানুযায়ী তাঁদের বিচার করা যেতো। তিনি ক্রসফায়ারে ছাত্রদল কর্মীকে হত্যার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান।