সৌদি অ্যারাবিয়ান এয়ারলাইন্সের ফ্লাইট (এসভি ৩৮০২) মিসরের কায়রো থেকে জেদ্দা হয়ে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছছে ২০ নভেম্বর রাতে (মঙ্গলবার দিবাগত রাত)। যাত্রীবাহী এ ফ্লাইটে পেঁয়াজ আসার কথা জানিয়েছিল বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। তবে ফ্লাইটটি ঢাকায় পৌঁছলেও সেই ফ্লাইটে কোনও পেঁয়াজ আসেনি। হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের সৌদি অ্যারাবিয়ান এয়ারলাইন্স অফিস জানিয়েছে, এসভি ৩৮০২ ফ্লাইটটি রাত ১২টার দিকে ঢাকায় অবতরণ করেছে। তবে সেই ফ্লাইটে কোনও পেঁয়াজ আসেনি। বৃহস্পতিবার ঢাকায় সৌদি অ্যারাবিয়ান এয়ারলাইন্সের একটি কার্গো ফ্লাইট আসবে। সেই ফ্লাইটে হয়তো পেঁয়াজ আসতে পারে।
শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উদ্ভিদ সঙ্গনিরোধ কেন্দ্রের উপপরিচালক রতন কুমার সরকার বলেন, ‘আমাদের একটি টিম ২৪ ঘণ্টা প্রস্তুত আছে। আমদানিকারকরা যেকোনো সময় ছাড়পত্রের আবেদন করলে আমরা তাদের সহায়তা করবো।’
এদিকে বিমানবন্দরের হ্যান্ডলিং এজেন্ট বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স রাতে পেঁয়াজ আসার খবরে জনবল প্রস্তুত রেখেছে। পেঁয়াজ দ্রুত খালাস করতে ঢাকা কাস্টম হাউসের পক্ষ থেকেও প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে বলে জানান সহকারী কমিশনার সাজ্জাদ হোসেন। তিনি বলেন, ‘আমাদের কাছে এখনও কেউ পেঁয়াজের চালান খালাস করার আবেদন জানায়নি। তবে ২৪ ঘণ্টা আমাদের প্রস্তুতি রয়েছে। পেঁয়াজ বিমানবন্দরে পৌঁছলে দ্রুত শুল্ক কার্যক্রম সম্পন্ন করতে সহায়তা করা হবে।’
এদিকে মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) সচিবালয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে সংবাদ সম্মেলনে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেছেন, ‘সরকার বিশেষ উদ্যোগ নিয়ে আকাশ ও সমুদ্রপথে পেঁয়াজ আমদানি শুরু করেছে। আকাশপথে আমদানি করা হচ্ছে ৫০ হাজার মেট্রিক টন পেঁয়াজ। মিসর থেকে আমদানি করা পেঁয়াজ সৌদি এয়ারলাইন্সের একটি উড়োজাহাজে ঢাকার পথে রয়েছে। পেঁয়াজবাহী সৌদি এয়ারলাইন্সের এসভি ৩৮০২ ফ্লাইটে মিসরের কায়রো থেকে জেদ্দা হয়ে ঢাকা শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছবে ২০ নভেম্বর গভীর রাতে।’
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ‘প্রতিদিন প্যাসেঞ্জার ও কার্গো ফ্লাইটে পেঁয়াজ অব্যাহতভাবে ঢাকায় আসবে। এসব পেঁয়াজ বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীন ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) এর মাধ্যমে ন্যায্যমূল্যে বিক্রি করা হবে। টিসিবির ট্রাক সেল ও নিয়োজিত ডিলারের মাধ্যমে সারাদেশে এ পেঁয়াজ বিক্রি করা হবে। এছাড়া সমুদ্রপথে ১২ হাজার মেট্রিকটন পেঁয়াজ দেশে পৌঁছাতে শুরু করেছে। দেশি পেঁয়াজ বাজারে উঠেছে। পেঁয়াজের মূল্যও দ্রুতগতিতে কমছে।’
প্রসঙ্গত, দেশে দৈনিক প্রায় ৬ হাজার মেট্রিক টন পেঁয়াজের চাহিদা রয়েছে। প্রতিবছর আট থেকে দশ লাখ মেট্রিক টন পেঁয়াজ আমদানি করা হয়। বেশির ভাগই প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভারত থেকে আমদানি করা হয়। ভারত পেঁয়াজ রফতানি বন্ধ করলে এবং মিয়ানমার পেঁয়াজের মূল্য কয়েকগুণ বাড়ালে বিকল্প হিসেবে মিসর ও তুরস্ক থেকে পেঁয়াজ আমদানি শুরু করে সরকার। সমুদ্রপথে পেঁয়াজ আসতে বেশি সময় লাগার কারণে আকাশপথে আনছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।