গত ১৬-ই ফেব্রুয়ারী রবিবার ঢাকায় অবস্থিত সাইবার ট্রাইবুনালে ‘এথিস্ট নোট’ নামক একটি ম্যাগাজিনে সাথে সম্পৃক্ত ৬২ জন ব্যাক্তি ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে একটি ধর্ম অবমাননার মামলা দায়ের করা হয়। এসময় ট্রাইবুনালের বিচারক আশ শামছ জগলুল হোসেন উপস্থিত ছিলেন।
মামলার বাদী হৃদয় কাজী হেফাজতে ইসলামীর একজন কর্মী বলে জানা যায়। এইদিন এই মামলাকে ঘিরে আদালতে তীব্র উত্তেজনা দেখা যায় এবং হেফাজতের শত শত কর্মীরা আদালত প্রাঙ্গন ঘিরে রাখে। মামলা দায়েরের পর তারা নারায়ে তাকবীর আল্লাহ হু আকবর বলে স্লগান দিতে দিতে দিতে গুলিস্তান জিরো পয়েন্টের দিকে অগ্রসর হয়। এই সময় এই মিছিল থেকে কিছু রিকশা ও গাড়ি ভাংচুর করা হয়।
আদালত সূত্রে জানা যায় মামলার বাদী হৃদয় কাজী “এথিস্ট নোট” নামক একটি ইসলাম বিদ্বেষী ম্যগাজিনের বিরুদ্ধে ডিজিটাল সিকিউরিটি আইনের ২৮ ধারা মোতাবেক ধর্ম অবমাননার মামলা দাখিল করেন। এই মামলায় মূল আসামী জোবায়ের হোসেন নামক এক লেখককে মূল আসামী দেখানো হয়।
আরো জানা যায় যে এই উক্ত ম্যাগাজিনটি দীর্ঘদিন ধরেই বাংলাদেশের শান্তি প্রিয় ইসলামী জনতার আবেগের বিরুদ্ধে অত্যন্ত কদর্য ভাষায় ইসলামকে আক্রমণ করে লেখালেখি চালিয়ে আসছে। আরিফুর রহমান সম্পাদিত ও সেক্যুলার পাব্লিশার্স কর্তৃক প্রকাশিত এই ম্যাগাজিনটির বিরুদ্ধে ইসলাম বিদ্বেষের অভিযোগ বেশ পুরোনো। এই মামলাতে সর্বমোট ৬২ জন ব্যাক্তিকে আসামী করা হয় যারা হচ্ছেন সৈয়দ সানভী অনিক হোসেন, ইসরাত রশিদ, তানজিলা তাজ রিসা, মোঃ ডলার বিশ্বাস, রুমানা আফরোজ রাখি, কাজী মোশাররফ, আদনান সাকিব, আবু হানিফ, রাজিব কুমার সাহা, এম ডি ওমর ফারুক, আশেফ আবরার টিটু ,সৈয়দ সামুন আলী, তাহেরা সুলতানা, মোহাম্মদ ওমর সানী, যুবায়ের হোসেইন, সুজন চন্দ্র দেব , সাইফুল ইসলাম , খায়রুল্লাহ খন্দকার, আনুপ চক্রবর্তী সহ আরো অনেকেই
এই ব্যাপারে বাদী হৃদয় কাজীর সাথে কথা যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, “এই এথিস্ট নোট’ ম্যাগাজিনটি ইসলামের শত্রু। এইখানকার লেখকেরা ক্রমাগতভাবে প্রতিদিন ইসলামকে নানাভাবে অপমান ও অপদস্ত করে যায় কিন্তু সরকার কিংবা তাদের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয় একটি কথাও বলে না”
তিনি বলেন, এই ম্যাগাজিনে ইশরাত রশিদ, মোহাম্মদ সানী, আনিছুজ্জামান সহ ব্যাক্তিরা বাংলাদেশের ইসলামের মূল কান্ডারী হযরত শাহ আহমেদ শফী হুজুরকে নিয়ে অত্যন্ত কদর্য ভাষায় লেখা লিখেছে যা সরাসরি ইসলাম অবমাননার সামিল।
তিনি আরো বলেন, “আল্লাহর জমিনে কোনো নাস্তিকের বাচ্চার ঠাঁই হবে না। আর েইসব লেখদের নিয়ে দেশে নিয়ে এসে প্রকাশ্যে বায়তুল মোকাররম মসজিদের সামনে শিরচ্ছেদ করতে হবে”
বাংলাদেশে তো প্রকাশ্যে শিরচ্ছেদের আইন নেই বা পদ্ধতি নেই তাহলে তিনি কেন এমন দাবী করছেন, এই প্রশ্নের জবাবে জনাব হৃদয় বলেন, ৯৮% মুসলমানের দেশে শরীয়া আইন করতে হবে, তা না হলে এই দেশে কোন সরকার টিকে থাকবে না।
এই ব্যাপারে মূল আসামীদের কারো সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়ে উঠেনি। এদিকে এই ঘটনার রেশ ধরে গতকাল সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলো ছিলো অত্যন্ত সরব। সেখানে নানাবিধ মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে।
এই ব্যাপারে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের সাথে যোগাযোগ করা হলে তাঁরা এই ব্যাপারে কোনো রকমের মন্তব্য করা হবে না বলে আমাদের প্রতিবেদককে জানান।