যুক্তরাজ্য বি এন পি’র ইস্ট লন্ডন যুব্দলের আইন বিষয়ক সম্পাদক মোহাস্মদ ওমর সানী’র বিরুদ্ধে গতকাল কুষ্টিয়ার সদরের বাজার এলাকায় আশে পাশের অঞ্চলে ছাত্রলীগের কর্মীরা দেয়াল লিখন করে ও পোস্টারিং করে। এই সময় কিছু উৎসাহী কর্মী ওমর সানী’র ছবির উপর জুতো দিয়েও আঘাত করতে দেখা যায়। এই সময় ছাত্রলীগের একটি ঝটিকা মিছিল বের হয় এবং মিছিল থেকে বিভিন্ন বাসা বাড়ীতে ইট, পাথর নিক্ষেপ করে বলে আমাদের সংবাদদাতা সূত্রে জানা গেছে। এই সময় এলাকায় চাঞ্চল্যকর অবস্থা তৈরী হয়।
উল্লেখ্য যে গত ২শরা অক্টোবর জামালপুরের আদালতে জনাব সানী সহ লন্ডনের বি এন পি প্রধান আব্দুল মালেক, কয়সর আহমেদ গংদের বিরুদ্ধে একটি মানহানির মামলা দায়ের করা হয়। এই মামলাতে একই সাথে আসামী হিসেবে আরো রয়েছেন বি এন পি’র মহাসচিব ফখরুল ইসলাম আলমগীরের জামাতা ফাহাম আব্দুস সালাম এবং প্রখ্যাত ব্লগার ও মানবাধিকার কর্মী পিনাকী ভট্টাচার্য্যকে। আমাদের আদালত সূত্রে জানা যায় যে এই মামলার নাম্বার ২৮৮(১) ২০১৯। মামলার বাদী খন্দকার আলাল নামের এক ব্যাক্তি।
আমাদের সংবাদদাতার সুত্রে আরো জানা যায় যে, পোর্টাল বাংলাদেশ নামক একটি অনলাইন পত্রিকায় এম ডি এনামুল হক একটি কলাম লিখেন গত ১৭-অগাস্ট ২০১৯ ইং তারিখে, যার শিরোনাম ছিলো “স্বৈরাচার হাসিনাকে নির্মূল করা এখন সময়ের দাবী”। এই লেখাতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে কঠোর সমালোচনা করা হয়। এই ছাড়াও আরো অনেক ব্যাক্তির সাক্ষাৎকার এখানে উদ্বৃত করা হয় যেখানে প্রধানমন্ত্রীর পায়ু পথে ক্যানসার হয়েছে বলে বলা হয় এবং দেশের রাজনীতি নিয়ে উষ্কানিমূলক বক্তব্য প্রদান করা হয়।
এই লেখাতে মোহাম্মদ ওমর সানীর উদ্বৃতি দিয়ে বলা হয়, ‘আমরা যে বাংলাদেশকে চিনতাম , জানতাম আজকের বাংলাদেশের সাথে এর কোন মিল নেই। খুনি অবৈধ হিটলারি দল/ সরকার / বর্তমান সরকার বাংলাদেশের বারোটা বাজিয়ে দিয়েছে। শেখ হাসিনা নামক এই ডাইনীকে প্রাণে নাশ না করা পর্যন্ত আমাদের প্রিয় বাংলাদেশ এই হিটলারের দল থেকে মুক্তি পাবে না।’
এইসব লেখা, বক্তব্যে ক্ষিপ্ত হয়ে মোহাম্মদ আলাল মামলা দেয় বলে জানা যায়। এদিকে কুষ্টিয়ার বারখাদা ও মীনাপাড়ার ছাত্রলীগের উদ্যোগে এই দেয়াল লিখন ও পোস্টারিং-এর ফলে সেখানে জনমনে চাঞ্চল্য তৈরী হয়েছে। একটি সূত্রে জানায় সেখানে ছাত্রলীগ কর্মীদের তান্ডবে অনেক দোকান পাট বন্ধও হয়ে পড়ে।
এই ব্যাপারে মীনাপাড়ার ছাত্রলীগের নেতা সাইদুজ্জামানের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ওমর সানী এই মীনাপাড়ার ছেলে। তার পুরো পরিবার বি এন পি’র পক্ষে কাজ করে এবং এদের প্রধান কাজ হচ্ছে আমাদের প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে কুৎসা রচনা করা। আমরা সানীর বিরুদ্ধে মামলার কথা জানতে পেরেছি তাই তার নাগরিকত্ব বাতিলের আহবান জানিয়েছি।
নাগরিকত্ব বাতিলের আহবান জানিয়ে তার বিচার চাইছেন কিভাবে, এই প্রশ্নের উত্তরে ফয়সাল বলে, তাকে দেশে ফিরিয়ে এনে বিচার করতে হবে এবং তারপর তার নাগরিকত্ব বাতিল করতে হবে।
এই ব্যাপারে ছাত্রলীগের সভাপতি লিখন ভট্টাচার্য্যের সাথে কথা বলার জন্য তাঁর মুঠোফোনে ফোন করলে তিনি ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, এটা কেন্দ্রীয়ভাবে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। ইতি মধ্যে মির্জা ফকরুলের জামাতা ও পিনাকী ভট্টাচার্য্যের ব্যাপারেও তাদের নিজ নিজ শহরে ছাত্রলীগ প্রচারণা চালাবে। একই সাথে তিনি বলেন, ‘আমরা শুনেছি এই ওমর সানী, লন্ডনের বি এন পি’র সন্ত্রাসী আবদুল মালেকের সাথে একাত্ন হয়ে বাংলাদেশ হাইকমিশনে বঙ্গবন্ধুর ছবি ভাংচুর করে। এত বড় স্পর্ধা দেখাবার জন্য শাতি তাকে পেতেই হবে।’
এই পোস্টারিং ও দেয়াল লিখনের ব্যাপারে স্থানীয় কমিশনারের সাথে যোগাযোগ করলে তার ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।