বর্তমান সময়ের মতো ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো তার পুরো ক্যারিয়ারে এতটা স্ট্রাগল করেননি সম্ভবত। ২০১৮ সালে রিয়াল মাদ্রিদ ছেড়ে যাওয়ার পর থেকেই তার এই স্ট্রাগল পিরিয়ড চলছে। জিততে পারেননি কোনো ইউরোপীয়ান কিংবা বৈশ্বিক শ্রেষ্ঠত্ব। কেবল ক্লাব ও লিগ পর্যায়ে কয়েকবার সেরা হয়েছেন, যা তার সঙ্গে ঠিক মানানসই নয়। অথচ রিয়ালে থাকতে নিজেকে নিয়ে গেছেন ফুটবল ইতিহাসের অন্যতম সেরা খেলোয়াড়ের পর্যায়ে।
২০১৮ পর্যন্ত জয় করেছেন পাঁচবার ব্যালন ডি’অর, পাঁচবার চ্যাম্পিয়নস লিগ শিরোপা, পর্তুগালের হয়ে ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপ, ন্যাশন্স লিগ। কিন্ত এরপর থেকেই তার ক্যারিয়ারে খরা চলছে। জুভেন্টাসে পাড়ি জমানোর পর দলটি সিরি আ লিগের শিরোপাও হারাতে থাকে। অথচ লিগ শিরোপা জেতা নিজেদের অভ্যাসে পরিণত করে ফেলেছিল তারা। রোনালদোকে ১০০ মিলিয়ন ইউরো দিয়ে চুক্তি করানোটা যেন ইতালিয়ান জায়ান্টদের জন্য অভিশাপ হয়ে দাঁড়ায়।
গোলস্কোরার
২০১৮/১৯ মৌসুমে জুভেন্টাসে নিজের প্রথম বছরে সিরি আ লিগে মাত্র ২১ গোল করতে সক্ষম হন ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো। যা লিগের চতুর্থ সর্বোচ্চ গোলস্কোরার। সংখ্যাটা খারাপ না হলেও রিয়ালে থাকতে তিনি যা করেছেন সেটার সঙ্গে কোনোভাবেই মানানসই নয়। পরের মৌসুমে করেন ৩১ গোল। এবং জুভেন্টাসে নিজের তৃতীয় ও শেষ মৌসুমে ২৯ গোল করেন, ব্যক্তিগত পুরস্কারও জেতেন। কিন্তু দলগতভাবে কোনো সাফল্য পাননি। কেবল ইতালিয়ান কাপ ঘরে তুলতে সক্ষম হয়েছে ক্লাবটি।
ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডেও একই গল্প
গত মৌসুমে জুভেন্টাস ছেড়ে দ্বিতীয়বারের মতো ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডে ফিরে আসেন ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো। ওল্ড ট্রাফোর্ডে তিনি নিজের প্রথম চ্যাম্পিয়নস লিগ শিরোপা ও ব্যালন ডি’অর জয় করেন। তাই সেই ঘটনার পুনরাবৃত্তি করার স্বপ্ন নিয়েই রেড ডেভিলসদের ঢেড়ায় পা রাখেন পর্তুগিজ ফরোয়ার্ড। কিন্তু বছরটি ২০০৬ সালের পর রোনালদোর ক্যারিয়ারের সবচেয়ে বাজে সময় গেছে।
সব ধরনের প্রতিযোগিতা মিলিয়ে করেন ২৪ গোল। যা রোনালদোকে ক্লাবের সর্বোচ্চ গোলস্কোরার বানালেও দল হিসেবে ছিলেন ব্যর্থ। প্রিমিয়ার লিগে ৬ষ্ঠ হয়ে চ্যাম্পিয়নস লিগে খেলার যোগ্যতা হারিয়েছেন। একটি শিরোপাও ঘরে তুলতে পারেনি। জায়গা হয়েছে ইউরোপা লিগে। তাইতো আবারও ইউনাইটেড ছাড়ার জন্য উঠেপড়ে লেগেছেন সর্বকালের অন্যতম সেরা এই ফুটবলার।
যদিও তাকে এখন পর্যন্ত কোনো দলই কিনতে আগ্রহ দেখাচ্ছে না। চেলসি, রিয়াল মাদ্রিদ, বায়ার্ন মিউনিখ ও পিএসজির নাম শোনা গেলেও পরবর্তীতে তারা সবাই ‘না’ করে দিয়েছেন। সর্বশেষ গুঞ্জন উঠে অ্যাতলেটিকো মাদ্রিদে যেতে পারেন ক্রিশ্চিয়ানো। সে জন্য নাকি তারা অ্যান্তেনিও গ্রিজম্যানকেও ছাড়তে রাজি। তবে সেই সম্ভাবনা উড়িয়ে দিয়েছে অ্যাতলেটিকো কর্তৃপক্ষ। তারা পর্তুগিজ ফরোয়ার্ডকে কেনার সম্ভাবনোকে ‘অসম্ভব’ বলে দাবি করেছে।