বিসিএস শিক্ষা ক্যাডারের প্রভাষক মো. আব্দুর রাজ্জাকের বিরুদ্ধে ‘অল ক্যাডার দ্বিতীয় পত্র নিরীক্ষা ও হিসাব’ বই হুবহু নকল করে প্রকাশ করার অভিযোগে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালকে এই নির্দেশ দেওয়া হয়।
অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, ১০টি মাধ্যমিক স্কুল প্রকল্পে বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের অভিযোগে এর আগে এই কর্মকর্তাকে বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওএসডি) করে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতর।
শিক্ষা মন্ত্রণালয় জানায়, বিসিএস শিক্ষা প্রশাসন একাডেমির ভারপ্রাপ্ত সিনিয়র লাইব্রেরিয়ান মো. এনামুল হকের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয় মহাপরিচালককে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে।
জানতে চাইলে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের পরিচালক (কলেজ ও প্রশাসন) অধ্যাপক শাহেদুল খবির চৌধুরী বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করা হচ্ছে।’
মন্ত্রণালয়ের গত ২৩ জুনের অফিস আদেশে জানা গেছে, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওএসডি) হিসাববিজ্ঞান বিষয়ের প্রভাষক মো. আব্দুর রাজ্জাক বর্তমানে নেয়াখালী সরকারি কলেজে বদলির আদেশাধীন রয়েছেন। তার বিরুদ্ধে ‘অল ক্যাডার দ্বিতীয় পত্র নিরীক্ষা ও হিসাব শিরোনামে বইটি হুবহু নকল করে প্রকাশ করার অভিযোগ উত্থাপিত হয়েছে। বই নকল করার অভিযোগ করেছেন বিসিএস শিক্ষা প্রশাসন একাডেমির ভারপ্রাপ্ত সিনিয়র লাইব্রেরিয়ান মো. এনামুল হক।
মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতর সূত্রে আরও জানা গেছে, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলার গ্রেফতারি পরোয়ানাভুক্ত আসামি মো. আব্দুর রাজ্জাক এর আগে একটি প্রকল্পের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছিলেন। প্রকল্প নিয়ে বিব্রতকর পরিস্থিতি তৈরি হলে সেই প্রকল্পের ক্ষতি হয়। ১০টি মাধ্যমিক স্কুল প্রকল্পে গবেষণা কর্মকর্তা থেকে তাকে প্রত্যাহার করা হলে প্রকল্পে বহাল থাকতে মন্ত্রণালয়ে লিখিত পত্র দেন তিনি। তদবির করে ব্যর্থ হলে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের সাবেক মহাপরিলক অধ্যাপক ড. সৈয়দ মো. গোলাম ফারুকসহ কয়েকজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আদালতে মামলাও করেন তিনি। মামলায় হেরে যাওয়ার পর শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তাকে অনুরোধ করে তাৎক্ষণিক পরিস্থিতি মোকাবিলা করেন। তবে সামাজিক যোগোযোগমাধ্যমে বিভিন্ন বিষয় উপস্থাপন করে বিতর্কে জড়ানোর কারণে তার বিরুদ্ধে থানায় মামলা করা হয়। মামলায় তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত।
জানতে চাইলে অভিযুক্ত বিসিএস ক্যাডারের কর্মকর্তা প্রভাষক মো. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘আমি এ ধরনের একটি বই লিখছি, সেটি এখনও প্রকাশ হয়নি। বই প্রকাশের আগেই অভিযোগ করা হয়েছে। কারা এসব করাচ্ছে, আমি তা জানি।’
আদালতের গ্রেফতারি পরোয়ানার বিষয়টি স্বীকার করে এ প্রভাষক বলেন, ‘থানার ডিজি আদালতে নিষ্পত্তির পর সাইবার ক্রাইমে অভিযোগ করা হয়েছে।’
প্রসঙ্গত, প্রভাষক আব্দুর রাজ্জাকের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হলে গত ১০ আগস্ট তিনি জামিন নিয়েছেন।