মুসিগঞ্জের মেঘনা নদী থেকে নিখোঁজ হওয়া সাংবাদিক বিভুরঞ্জন সরকারের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এরপর আজ শনিবার সকালে তার মরদেহ মুন্সিগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে ময়নাতদন্ত শেষে ঢাকায় নিয়ে আসা হবে পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। বিভুরঞ্জনের ছেলে ঋত সরকার এই তথ্য নিশ্চিত করে বলেছেন, আজ মরদেহ ময়নাতদন্তের পর ঢাকায় আনা হবে।
প্রথমে গতকাল শুক্রবার রাত পৌনে ৯টার দিকে মুন্সিগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের মর্গে মরদেহ শনাক্ত করেন তার পরিবার, যেখানে তিনি জানিয়েছেন, বাবার মরদেহ মুন্সিগঞ্জের মেঘনা নদী থেকে ভাসমান অবস্থায় উদ্ধার করা হয়।
৭১ বছর বয়সী বিভুরঞ্জন সরকার দৈনিক আজকের পত্রিকায় জ্যেষ্ঠ সহকারী সম্পাদক হিসেবে কাজ করতেন। বৃহস্পতিবার (২১ আগস্ট) সকাল ১০টার দিকে রাজধানীর সিদ্ধেশ্বরীর বাসা থেকে বেরোনোর পর তার খোঁজ না পেয়ে পরিবার রাতেই রমনা থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করে।
পরের দিন, শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে মুন্সিগঞ্জের গজারিয়া উপজেলার বলাকির চর এলাকার মেঘনা নদী থেকে নিখোঁজ এই সাংবাদিকের মরদেহ ভাসমান অবস্থায় উদ্ধার করে নৌ পুলিশ। কলাগাছিয়া নৌ পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক মোহাম্মদ সালেহ আহমেদ পাঠান জানান, স্থানীয়রা নদীতে মরদেহ ভাসতে দেখে ৯৯৯ নম্বরে ফোন করে খবর দেন। এরপর তারা ঘটনাস্থলে গিয়ে বিকেল ৩:৪৫-এ মরদেহ উদ্ধার করেন। রাতের বেলায় সেই মরদেহ মুন্সিগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের মর্গে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়।
এদিকে, ঋত সরকার বৃহস্পতিবার রাতে রমনা থানায় জিডি করে জানান, তার father বিভুরঞ্জন সরকার বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার দিকে কর্মস্থলে যাওয়ার কথা বলে বাসা থেকে বের হন। তার পরিকল্পনা ছিল ওই দিন বিকেল ৫টার মধ্যে বাড়ি ফেরার। তার মোবাইল ফোনও বাড়িতে রেখে গিয়েছিলেন।
অন্যদিকে, বিভুরঞ্জনের লেখা একটি ‘খোলা চিঠি’ অনলাইন মাধ্যমে প্রকাশ পায়, যেখানে তিনি নিজের জীবন, ক্যারিয়ার ও পারিবারিক বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে লিখেছেন। সেখানে তিনি উল্লেখ করেছেন যে, বৃহস্পতিবার সকাল সোয়া ৯টায় ই-মেইল মাধ্যমে এই চিঠি পাঠিয়েছেন, যা তিনি জীবনের শেষ লেখা হিসেবেও উল্লেখ করেছেন। তাঁর এই লেখায় তিনি সাংবাদিকতা জীবনের বিভিন্ন ঘটনা, বর্তমান সরকারের পরিস্থিতি, ব্যক্তিগত অসুস্থতা, মেয়ের উচ্চতর পরীক্ষায় ব্যর্থতা, ছেলেকে চাকরি না হওয়া এবং নিজের সামাজিক ও অর্থনৈতিক দুর্দশার বিষয়ে বিবরণ দিয়েছেন।