বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যে পররাষ্ট্র মন্ত্রী পর্যায়ের উচ্চপর্যায়ের বৈঠক চলছে। ঢাকার হোটেল সোনারগাঁয়ে অনুষ্ঠিত এই মুখোমুখি বৈঠকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন ও পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্র মন্ত্রী মোহাম্মদ ইসহাক দার। এই বৈঠকে ছয়টি গুরুত্বপূর্ণ চুক্তি ও সমঝোতা স্বাক্ষরিত হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
সকাল সাড়ে ৮টায় পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রী বাণিজ্য উপদেষ্টার সঙ্গে প্রাতঃরাশের একান্ত বৈঠক করেছেন। এরপর সকাল ১০টার দিকে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকের আগে তৌহিদ হোসেন ও মোহাম্মদ ইসহাক দার একান্ত বৈঠক করেন। এরপর আনুষ্ঠানিকভাবে এই বৈঠক শুরু হয়, যেখানে দুই দেশের প্রতিনিধিদলের নেতৃত্বে থাকছেন সংশ্লিষ্ট মন্ত্রীগণ। কূটনৈতিক সূত্র জানায়, এই আলোচনা প্রধানত দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক, আঞ্চলিক সহযোগিতা এবং পারস্পরিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয় নিয়ে স্থাপিত হবে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, ইসহাক দারের সফর উপলক্ষে মধ্যাহ্নভোজের আয়োজন করা হয়েছে। বিকেল ৪টা ১৫ মিনিটে তিনি রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন। এরপর পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বিনিয়োগ উন্নয়ন সংক্রান্ত কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক ও আলোচনা করবেন।
আরো জানা যায়, তিনি বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া এবং জামায়াতে ইসলামীর নেতা ডা. শফিকুর রহমানের সঙ্গেও সাক্ষাৎ করতে পারেন। সফর শেষ করে রোববার রাতে তিনি একটি বিশেষ ফ্লাইটে ঢাকা ছাড়বেন।
বৈঠকে স্বাক্ষরের জন্য যেসব চুক্তি ও সমঝোতা রয়েছে, সেগুলোর মধ্যে রয়েছে ভিসা অব্যাহতি, সাংস্কৃতিক বিনিময়, দুই দেশের ফরেন সার্ভিস একাডেমির মধ্যে সহযোগিতা, যৌথ গ্রুপ গঠন করে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ উন্নয়ন, বিঅআইআইএসএস ও পাকিস্তানের সমপর্যায়ের প্রতিষ্ঠানের মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতা এবং বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা (বাসস) ও পাকিস্তানের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থার মধ্যে সমঝোতা। পাশাপাশি দুই দেশের মান নিয়ন্ত্রণ সংস্থা ও কৃষি গবেষণা প্রতিষ্ঠানের চুক্তি সইয়ের বিষয়েও আলোচনা চলছে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, রাজনীতি, বাণিজ্য, অর্থনীতি, আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক নানা বিষয় নিয়ে এই বৈঠকে আলোচনা হবে। বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে বাণিজ্য সম্প্রসারণ এবং আন্তঃসংযোগের বিষয়গুলো। পাকিস্তানের বাণিজ্যমন্ত্রী বর্তমানে ঢাকায় অবস্থান করছেন। বাংলাদেশ থেকে আশা করা হচ্ছে, ১৯৭১ সালের গণহত্যার জন্য পাকিস্তানের পক্ষ থেকে নিঃশর্ত ক্ষমা চাওয়া, যুদ্ধকালীন ক্ষতিপূরণ, পাকিস্তানে থাকা বাংলাদেশের নাগরিকদের প্রত্যাবাসন, যৌথ সম্পদের বিতরণ ও ১৯৭০ সালের ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত প্রাপ্ত বৈদেশিক সাহায্যের ঋণ আদায়ের বিষয়গুলোও আলোচনায় আসবে।