অক্টোবর মাসে বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যে সরাসরি বিমান যোগাযোগ শুরু করতে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন পাকিস্তানের উপ-প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার। তিনি বলছেন, পাকিস্তানের রাষ্ট্রীয় পতাকা সংস্থাআইএ-র বেসরকারীকরণ সম্পন্ন হলে, ঢাকা রুটে সরাসরি ফ্লাইট চালু করতে সক্ষম হবে তারা।
রবিবার (২৪ আগস্ট) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতকালে এই আশা প্রকাশ করেন তিনি। এই বৈঠকে দু’দেশের সম্পর্ক জোরদার, বাণিজ্য সম্প্রসারণ, যুবসমাজের মধ্যে সরাসরি যোগাযোগ, শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক বিনিময় বৃদ্ধির পাশাপাশি আঞ্চলিক সংস্থাসার্ককে পুনরুজ্জীবিত করার বিষয়ে আলোচনা হয়।
ইসহাক দার ড. ইউনূসকে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ শাহবাজ শরিফের শুভেচ্ছা পৌঁছে দেন। তিনি বলেন, আমাদের প্রধানমন্ত্রী আপনাকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। ড. ইউনূস জবাবে উল্লেখ করেন, প্রধানমন্ত্রী শরিফের সঙ্গে আমার যখনই দেখা হয়েছে, আমরা সার্ক নিয়ে আলোচনা করেছি। আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি এক রকম। সার্ক আমাদের দুই দেশের অন্যতম অগ্রাধিকার। এসময়, তিনি পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ও দেশের জনগণের প্রতি শুভেচ্ছা জানান।
দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতার সম্ভাবনা ও বাণিজ্য সম্প্রসারণ প্রসঙ্গে ইসহাক দার বলেন, আমাদের দুই অর্থনীতি পরিপূরক; নানা কাজে একসঙ্গে কাজ করার সুযোগ রয়েছে। তিনি দারিদ্র্য বিমোচন ও সমাজের উন্নতিতে ড. ইউনূসের অবদানকেও প্রশংসা করেন। বলেন, বাংলাদেশ এক আপাত একনিষ্ঠ সরকার প্রধান পেয়েছে, যিনি বিশ্বজনতার অনুপ্রেরণা।
ঢাকায় অবস্থানকালে ইসহাক দার জ্বালানি ও বাণিজ্য বিষয়ক উপদেষ্টা ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। তিনি উল্লেখ করেন, সার্কভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে সম্পর্ককে অগ্রাধিকার হিসেবে দেখানো হয়। তিনি জোর দেন, দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য উন্নত করার এবং সাধারণ মানুষের সঙ্গে সম্পর্ক বাড়ানোর ওপর। তিনি বলেন, আমি সার্ককে উৎসাহিত করি। পাকিস্তানসহ সার্কের সকল দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক আমার অগ্রাধিকার।
সাংস্কৃতিক বিনিময়ে ইসহাক দার সাক্ষাৎকালেও বলেন, যখন পাকিস্তানি শিল্পীরা বাংলাদেশে গান করেন, সবাই তাদের প্রতিভার প্রশংসা করে। এই অনুভূতি আমাদের ঐক্যবদ্ধ করে।
১৩ বছর পর প্রথমবারের মতো বাংলাদেশ সফরে এসে পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী দার জানান, নৌ ও আকাশ যোগাযোগ উন্নত করার পরিকল্পনা চলছে। তিনি বলেন, অক্টোবরে ‘ফ্লাই জিন্নাহ’ নামক সরাসরি ফ্লাইট চালুর আশা রয়েছে বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যে। পাকিস্তানের রাষ্ট্রীয় পতাকা সংস্থা পিআইএ-র বেসরকারীকরণ শেষ হলে, তারা ঢাকা রুটে সরাসরি ফ্লাইট চালু করবে।
উভয় পক্ষই আশাবাদ ব্যক্ত করেন যে, বাণিজ্য, সাংস্কৃতিক বিনিময় এবং আঞ্চলিক সহযোগিতা বাড়ানোর মাধ্যমে একটি স্থিতিশীল ও সমৃদ্ধ দক্ষিণ এশিয়া গড়ে তোলা সম্ভব।
প্রধান উপদেষ্টা ও এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সার্কভুক্ত দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের জন্য নিযুক্ত আন্তর্জাতিক দূত লুৎফে সিদ্দিকীও।