কনটেন্ট ক্রিয়েটর তৌহিদ আফ্রিদির গ্রেপ্তারের পর তাঁর অতীত কর্মকাণ্ড নিয়ে মুখ খুলেছেন তাঁর ঘনিষ্ঠ বন্ধু ও সহকর্মী তানভীর রাহী। এক বিশেষ সাক্ষাৎকারে তিনি আফ্রিদিকে ‘ভয়ংকর’ বলে আখ্যা দেন এবং ইউটিউব ইন্ডাস্ট্রিতে তার প্রভাব, ব্যক্তিজীবন ও আচরণের নানা অজানা দিক উদঘাটন করেন।
সম্প্রতি তানভীর রাহীর একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেগো ভাইরাল হয়েছে। সেখানে তিনি বলেন, ক্যামেরার সামনে আফ্রিদির মনোভাব একরকম হলেও ব্যক্তিজীবনে তিনি সম্পূর্ণ ভিন্ন মানুষ—ক্যামেরার বাইরে তিনি ভয়ংকর একজন ব্যক্তি। ইউটিউব ইন্ডাস্ট্রিতে তার বিপরীতে সবাই ভয় পায় বলে মন্তব্য করেন তিনি।
রাহী বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় অনেকেই আফ্রিদির বিরোধিতা করেছিলেন। তিনি নিজেও ওই সময় আফ্রিদির রাগের শিকার হয়েছিলেন। তানভীর রাহী জানিয়েছেন, ‘রাগ উঠলে সে বেল্ট খুলে আমাদের কুত্তার মতো পেটাতো।’
প্রাচীন স্মৃতি উদ্দীপনা করে রাহী আরও বললেন, ‘যখন ওর মনে হতো কেউ তার বিরুদ্ধে কাজ করছে, তখন সে ফোন করতো। ক্ষমতা দেখাতো। আন্দোলনের দুই-তিন মাস পরে এক রাতে আমাকে ভিডিও কল দেয়। আমি ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম। ফোন ধরার পর বলে, তোর সঙ্গে একজনের কথা বলাবো—সে শিগগিরই দেশের বড় মাপের একজন হবে। এরপর সে আমাকে ভিপি নূরের সঙ্গে কথা বলিয়ে দেয়। পরে বলে, বুঝছিস আমার অবস্থানটা? সাবধানে থাকিস।’
সবশেষে তিনি বলেন, ৫ আগস্টের পরও দেশ ভালোই ছিল আফ্রিদির জন্য। তিনি ও অন্যরা চেয়েছিলাম যে সে তার মতো থাকুক আর আমরা আমাদের মতো থাকি। কিন্তু সেটি আর হয়নি।
আফ্রিদির চরিত্র প্রসঙ্গে রাহী বলেন, ‘তার মনুষ্যত্বের অভাব, শুধু প্রতিশোধের চিন্তা। কারে কারে ধরবে, কারে কারে মারবে—এই ভাবনা তার মাথায়। আল্লাহ কখনও এমন মানুষকে ছাড় দেন না।’
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মামলায় যাত্রাবাড়ী থানায় হত্যা মামলার আসামি হিসেবে রবিবার (২৪ আগস্ট) রাতে বরিশাল মহানগরের বাংলাবাজারে সিআইডির বিশেষ অভিযানে গ্রেপ্তার হন তৌহিদ আফ্রিদি। এরপর তাকে পাঁচ দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয় আদালতের মাধ্যমে। মামলায় তিনি ১১ নম্বর আসামি।
এই মামলায় প্রধান আসামি হিসেবে রয়েছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দ্বিতীয় নম্বর আসামি সাবেক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এবং তৃতীয় আসামি পুলিশের সাবেক আইজিপি আব্দুল্লাহ আল মামুন। মামলায় আরও ২২ নম্বর আসামি হিসেবে আছেন তৌহিদ আফ্রিদির বাবা, মাইথিভির চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিন সাথী, যিনি গত ১৭ আগস্ট ঢাকা মহানগর পুলিশ গ্রেপ্তার করে।