দেশের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের জন্য নির্ধারিত রাষ্ট্রীয় পদমর্যাদাক্রম নিয়ে আপিলের অনুমতি দিয়েছেন দেশের সর্বোচ্চ আদালত। এ তালিকা নিয়ে আপিল শুনানির জন্য আগামী ৪ নভেম্বর দিন নির্ধারণ করেছে আদালত।
বৃহস্পতিবার (২৮ আগস্ট) সকাল সাড়ে ৯টায় বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলামের নেতৃত্বে ৬ বিচারপতির আপিল বেঞ্চ এ আদেশ দেন। আইনসঙ্গত শুনানির জন্য আবেদনে ছিলেন ব্যারিস্টার সালাউদ্দিন দোলন ও অ্যাডভোকেট আহসানুল করিম। এসময় ইন্টারভেনর হিসেবে অংশ নেন ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল। অন্যদিকে, ৬৯ আইনজীবীর পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট ইশরাত হাসান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান এবং অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার অনীক আর হক।
বিচারপতিদের এ সিদ্ধান্তের আলোকে অভিযোগকারীরা জানান, মামলার গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বিবেচনা করে আদালত পুনরায় আপিল শুনানির নির্দেশ দিয়েছেন।
উল্লেখ্য, এর আগে, ৩০ জুলাই দেশের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের রাষ্ট্রীয় পদমর্যাদার ক্রম নির্ধারণের রায়ের বিরুদ্ধে রিভিউ আবেদন শোনার কাজ সম্পন্ন হয়। এছাড়া, ২৭ এপ্রিল প্রথম আপিল বিভাগের রায়ের ওপর ভিত্তি করে রিভিউ শুনানি শুরু হয়।
প্রসঙ্গত, গত ৯ জানুয়ারি দেশের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের জন্য রাষ্ট্রীয় পদমর্যাদার ক্রম নির্ধারণে দ্রুত রিভিউ শুনানির আবেদন করে বিচারকদের সংগঠন জুডিসিয়াল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন। প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে ৫ সদস্যের আপিল বিভাগে তখন আবেদন করেন ব্যারিস্টার নিহাদ কবির, সঙ্গে আরও দফায় দফায় ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেলরা যুক্ত হন।
অফিসিয়াল রায় অনুযায়ী, ২০১৫ সালের ১১ জানুয়ারি রাষ্ট্রীয় পদমর্যাদাক্রম নির্ধারণের সিদ্ধান্ত নেয়া হয় এবং তার পুরো বিষয়বস্তু প্রকাশ পায় ২০১৬ সালের ১০ নভেম্বর। এতে বলা হয়, সংবিধান-সর্বোচ্চ আইন হিসেবে, রাষ্ট্রীয় পদমর্যাদাক্রমকে গুরুত্বের সঙ্গে মান্য করা উচিত এবং সাংবিধানিক পদাধিকারীদের স্থান যথাযথভাবে রাখতে হবে।
রায় অনুযায়ী, জেলা জজ ও সমমর্যাদার বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তারা পদমর্যাদাক্রমে ২৪ থেকে ১৬ নম্বরের মধ্যে উঠে আসবেন, যেখানে সরকারের সচিবরা থাকবেন উচ্চতর স্তরে। অতিরিক্ত জেলা জজ ও সমমর্যাদার কর্মকর্তাদের অবস্থান হবে জেলা জজদের ঠিক পরেই, অর্থাৎ ১৭ নম্বর পজিশনে।
এমনকি, এই রাষ্ট্রীয় পদমর্যাদাক্রম কেবলমাত্র রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠান-আচার বা অন্যান্য আনুষ্ঠানিকতায় ব্যবহার হবে, নীতিগত সিদ্ধান্ত বা অন্য কার্যক্রমে এর প্রয়োগ নয়।
উল্লেখ্য, ১৯৮৬ সালের ১১ সেপ্টেম্বর ‘ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স’ তৈরি ও প্রজ্ঞাপন আকারে প্রকাশিত হয়। এরপর ২০০০ সালে এই নীতিমালা সংশোধিত হয়। এ বিষয়ে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে হাইকোর্টে রিট করেছিলেন বাংলাদেশ জুডিসিয়াল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক মহাসচিব আতাউর রহমান। হাইকোর্টের ২০১০ সালের রায়ে ওই ওয়ারেন্ট বাতিল ও সংশ্লিষ্ট নির্দেশনা দেওয়া হয়।
আজকের খবর/ এমকে