আফগানিস্তানের পূর্বাঞ্চলীয় এলাকাগুলোতে শক্তিশালী ভূমিকম্পে ব্যাপক বিধ্বস্ত হয়েছেন। এই প্রাকৃতিক দুর্যোগের ফলে এখন পর্যন্ত মৃত্যুর সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়ে ৬২২ জনে পৌঁছেছে, যেখানে আহত হয়েছেন এক হাজারের বেশি মানুষ। দেশের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই তথ্য নিশ্চিত করেছে, যার আগে রাষ্ট্রিয় টেলিভিশন আফগানিস্তান (আরটিএ) তখনই জানিয়েছিল যে নিহতের সংখ্যা ৫০০।
বিবিসি ও রয়টার্সের খবরে জানানো হয়েছে, তালেবান সরকারের সূত্রে বলা হয়েছে, কুনার প্রদেশে শুধুমাত্র এই ভূমিকম্পের কারণে শত শত মানুষ মারা যেতে পারেন। এই অঞ্চলসমূহ পাহাড়ি ও দুর্গম হওয়ায় উদ্ধার অভিযান কঠিন হয়ে পড়েছে।
রিখটার স্কেলে এই ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৬। এর কেন্দ্র ছিল ভূপৃষ্ঠের মাত্র ৮ কিলোমিটার গভীরে, এবং এরপর থেকে কমপক্ষে আরও তিনটি আফটারশক অনুভূত হয়েছে। কেন্দ্রের কাছাকাছি অঞ্চলে, যেমন কাবুলে কিছু সময়ের জন্য কম্পন অনুভূত হয়, আর ৪০০ কিলোমিটার দূরে ইসলামাবাদে তা অনুভূত হয়।
উদ্ধারকর্মীরা জানিয়েছেন, বহু ঘরবাড়ি ধ্বংস হয়ে গেছে বা ধসে পড়েছে, যার নিচে চাপা পড়েছেন বেশ কিছু মানুষ। বিভিন্ন ছবি ও ভিডিও দেখানো হয়েছে যেখানে আহত ব্যক্তিদের হেলিকপ্টার দিয়ে হাসপাতালে নেওয়া হচ্ছে, বিশেষ করে দুর্গম পাহাড়ি এলাকাগুলোতে কাজের বাধা তৈরি হয়েছে ভূমিধস ও বন্যার কারণে।
প্রথমিক তথ্য অনুযায়ী, কুনার ও নানগারহার প্রদেশে এখন পর্যন্ত ১১5 জন আহত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। চিকিৎসকদের সাথে তালেবান প্রতিরক্ষা কর্মীরা পরিস্থিতি মোকাবেলা করছেন। গুরুতর আহতদের কাবুল বা আশেপাশের শহরগুলোতে হেলিকপ্টার দিয়ে স্থানান্তর করা হচ্ছে।
প্রাথমিকভাবে ধ্বংসের পরিমাণ দেখে মনে হচ্ছে, ভবিষ্যতে আরও বড় আকারে সহায়তা দরকার পড়বে। রোগীদের জন্য রক্তের দরকার বাড়ছে, এবং এখনই হাসপাতালে বেশ কয়েক ডজন স্বেচ্ছাসেবক রক্তদান করতে উপস্থিত হয়েছেন। এ পর্যন্ত নয়জনের মৃত্যুর খবর Confirmed।
নানগারহার জেলা ডেপুটি গভর্নর আজিজুল্লাহ মুস্তাফা জানিয়েছেন, তাদের এলাকায় প্রায় ৩০ জনকে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছে। দেশটির দুই প্রদেশে মোট আহতের সংখ্যা ১১৫, যারা চিকিৎসাধীন।
আফগানিস্তানে এই ভূমিকম্পটিতে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কুনার ও নানগারহার প্রদেশ। এই দুই অঞ্চল পাকিস্তান সীমান্তের কাছাকাছি অবস্থিত। ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ছিল জালালাবাদ শহর থেকে ২৭ কিলোমিটার দূরে, যা দেশের পঞ্চম বৃহত্তম শহর।
সপ্তাহের শেষে, বন্যার কারণে অনেক বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল, এতে পাঁচজনের মৃত্যু হয়। এই ভূমিকম্পের বিভিন্ন আফটারশকও চলমান থাকায় আতঙ্কে ভুগছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। নিয়মিত খবর অনুযায়ী, মানুষের মধ্যে ভয়-উৎকণ্ঠা বৃদ্ধি পেয়েছে।
উদ্ধার প্রক্রিয়ায়, প্রতিবেশী অঞ্চলের বাসিন্দারা ও পরিবহন ব্যবস্থা বাধা পেলেও, হেলিকপ্টার দ্বারা দ্রুত আহতদের উদ্ধার করা হচ্ছে। উপজেলা ও জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তা ও চিকিৎসকরা, দুর্গম এলাকায় দ্রুততর কাজের জন্য আন্তর্জাতিক ও মানবিক সংস্থাগুলোর সহযোগিতা চাচ্ছেন।
বিশ্লেষণে দেখা যাচ্ছে, এই প্রাকৃতিক দুর্যোগ এক নতুন চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা দিচ্ছে, যেখানে উদ্ধারকার্য আরও সুসংগঠিত ও সহায়তামূলক হওয়া জরুরি।