বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে দীর্ঘমেয়াদি জ্বালানি চুক্তি স্বাক্ষর করেছে, যার মাধ্যমে আগামী ১৫ বছরে প্রবেশাধিকার পাচ্ছে এক্সিলারেট এনার্জি নামের মার্কিন বহুজাতিক কোম্পানি। এই চুক্তির আওতায় তারা ধাপে ধাপে বাংলাদেশে সাড়ে ৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের (প্রায় ১ লাখ ৪ হাজার ৫৫০ কোটি টাকা) মূল্যমানের তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) সরবরাহ করবে।চুক্তির জন্য বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ দিক উল্লেখযোগ্য। এক্সিলারেট এনার্জি এই জন্য ২৩২টি কার্গো এলএনজি সরবরাহ করবে, যার মধ্যে ২০২৬-২০২৭ সালে ২৮টি কার্গো আসবে। এরপর ২০২৮ থেকে ২০৪০ সাল পর্যন্ত বছরে ১৬টি করে কার্গো প্রেরিত হবে। এ কারণে এই প্রকল্পে দেশের জাতীয় অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব পড়বে বলেই মনে করছে সংশ্লিষ্ট বিশ্লেষকেরা।গেলupo বৈঠককালে বাংলাদেশের সরকারের সঙ্গে আলোচনায় যুক্তরাষ্ট্রের এই কোম্পানির প্রতিনিধিরা দেশের জ্বালানি চাহিদা মেটাতে এই দীর্ঘমেয়াদি চুক্তি কার্যকর করার দিকগুলো আলোচনা করেন। এই চুক্তি অনুযায়ী, গড়ে বছরে প্রায় ৬০০ মিলিয়ন ডলার খরচ হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এর পাশাপাশি, আন্তর্জাতিক স্পট মার্কেট থেকেও এলএনজি ক্রয় করা হবে, যেখানে ইতোমধ্যেই প্রায় ১৬টি কার্গো ৬৩৭ মিলিয়ন ডলার মূল্যের সরবরাহ সম্পন্ন হয়েছে। ভবিষ্যতে, উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে বছরে আরও ২০০ মিলিয়নের বেশি মার্কিন ডলার মূল্যের স্পট কার্গো আসার সম্ভাবনা রয়েছে।উল্লেখ্য, এই চুক্তিটি ইতোমধ্যে ২০২৩ সালের ২৩ নভেম্বর স্বাক্ষরিত হয়েছে, যা বিগত বিএনপি সরকারের আমলে বিশেষ বিধানে অনুমোদিত হয়েছিল। বর্তমানে চলমান অস্থির রাজনৈতিক পরিস্থিতির মধ্যে এটিকে এতোদিন বহাল রাখা হয়েছে, কারণ এটি আইনের দিক থেকে বাধ্যবাধকতা তৈরি করেছিল।প্রকৌশলী মো. শাহ আলম, রূপান্তরিত প্রাকৃতিক গ্যাস কোম্পানি লিমিটেডের (আরপিজিসিএল) এ বিষয়ে বলেন, দেশের জ্বালানি সংকট কমাতে এই চুক্তি গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষ করে, ডিজেলসহ অন্যান্য জ্বালানি পণ্য আমদানির জন্য সরকার এই দীর্ঘমেয়াদি চুক্তিকে গুরুত্ব দিয়েছে।এছাড়া, সরকার দীর্ঘমেয়াদি চুক্তির পাশাপাশি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে ডিজেল ও অন্যান্য জ্বালানি আনয়নের জন্য আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে। ভবিষ্যতে এলপিজি চাহিদা মেটাতে মার্কিন সরবরাহকারীদের সঙ্গে তিক্ত দর কষাকষি করে কার্গো কেনার পরিকল্পনাও রয়েছে। এই উদ্যোগগুলো জ্বালানি নিরাপত্তা বৃদ্ধি এবং আমদানি বিভ্রান্তি কমাতে বেশ গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল।