বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, যখন মানুষ প্রাণীদের প্রতি সহানুভূতিশীল হয় এবং তাদের নিরাপদ আবাসস্থল নিশ্চিত করে, তখন সেটি মানবসমাজের পরিপক্বতা এবং উন্নত নৈতিকতার প্রতিফলন। এজন্য আমাদের নিজস্ব প্রয়োজন অনুযায়ী প্রাণীদের রক্ষা করতে হবে এবং তাদের আবাসস্থল অক্ষত রাখতে হবে।
শনিবার রাজধানীর চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত ‘প্রাণী ও প্রাণের মিলন মেলা’ শীর্ষক প্রদর্শনীতে তিনি ভার্চুয়ালি অংশ গ্রহণ করে এ মন্তব্য করেন। এই আয়োজন করে বাংলাদেশ অ্যানিমেল ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন।
তারেক রহমান বিবৃতিতে বলেন, ব্যক্তিগতভাবে আমি মনে করি, গণতন্ত্রের সঙ্গে মানুষের অধিকার এবং বাস্তুতন্ত্রের সঙ্গে পশুপ্রাণী ও বন্যপ্রাণীর অধিকার যেমন সম্পর্কিত, ঠিক তেমনি সম্পর্ক। তাই রাষ্ট্রনীতি ও শুদ্ধাচার প্রতিষ্ঠিত থাকলে পরিবেশ ও বাস্তুতন্ত্রের অখণ্ডতা রক্ষা হয়।
তিনি এ সময় একটি স্লোগানও দেন—‘প্রাণ বাঁচাও, প্রাণী বাঁচাও, দেশ হোক সব প্রাণের নিরাপদ আশ্রয়স্থল’—এ গানে তিনি তাদের المثاقের মূলে রাখার আহ্বান জানান।
প্রাণীর গুরুত্ব তুলে ধরে তারেক রহমান বলেন, কিছু প্রজাতি যেমন ব্যাঙ, বিপদ থেকে রক্ষা পেতে কাজে আসে। ব্যাঙ দেশের জন্মগতভাবে বেশ উপকারী, কারণ তারা এডিস মশার লার্ভা খেয়ে মশার বিস্তার নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। তাহলে শহর ও নগর জুড়ে তাদের জন্য নিরাপদ আবাসস্থল সৃষ্টি করতে হবে যাতে প্রাকৃতিক উপায়ে মশার প্রকোপ কমে আসে।
আন্তর্জাতিক গবেষণার ভিত্তিতে তারেক রহমান জানান, বাংলাদেশে প্রায় ১ হাজার ৬০০ করে বিভিন্ন প্রজাতির প্রাণী ছিলো, যার মধ্যে প্রায় ৩০০ প্রজাতি বিলুপ্তির পথে। এর জন্য শুধু বাংলাদেশ নয়, বিশ্বের বিভিন্ন দেশেও মানুষের কারণেই প্রকৃতি ও প্রাণীদের অস্তিত্ব সংকটের সম্মুখীন। ৮০ এর দশকে সুন্দরবনে বাঘের সংখ্যা ছিল আনুমানিক ৪০০-র বেশি, কিন্তু সাম্প্রতিক জরিপে তা শতকের কাছাকাছি এসে দাঁড়িয়েছে। হাতির সংখ্যাও বর্তমানে ২০০’র নিচে।
তিনি দৃঢ়তার সঙ্গে উল্লেখ করেন, দেশের প্রাণী ও পরিবেশ রক্ষায় আইনগুলোর অবদান অনেক। যেমন: প্রাণীকল্যাণ আইন ২০১৯, বন্যপ্রাণীর সংরক্ষণ আইন, জীববৈচিত্র্য রক্ষা আইন, পরিবেশ উন্নয়ন আইন, জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্ট আইন প্রভৃতি। বাংলাদেশে ভবিষ্যতে বিএনপি ক্ষমতায় গেলে এসব আইনের কার্যকারিতা বাড়ানো এবং প্রয়োজন অনুযায়ী আপডেট করার প্রতিশ্রুতি দেন।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ অ্যানিম্যাল ওয়েলফেয়ার এর আহ্বায়ক চিত্রনায়ক আদনান আজাদ। এতে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী, শীর্ষ নেতৃবৃন্দ, শিক্ষাবিদ, পরিবেশ ও প্রাণী সংরক্ষণ আইনজীবী, ক্রিকেট তারকা তামিম ইকবালসহ আরও অনেক বিশিষ্ট ব্যক্তি।
অতিরিক্ত, অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ব্যবসায়ী অভীক ইসকান্দার, বিএনপির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ, সাংবাদিক ও সমাজের অন্যান্য ব্যক্তিরা। এই দিনটি প্রাণী ও পরিবেশের জন্য সচেতনতা সৃষ্টি এবং তাদের রক্ষার গুরুত্ব তুলে ধরলো গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবন্ধকতা ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা রূপান্তর করতে।