ভেনেজুয়েলার সঙ্গে উত্তেজনা বেড়ে যাওয়ার পরিস্থিতিতে পুয়ের্তো রিকোতে ৫টি মার্কিন এফ-৩৫ স্টেলথ যুদ্ধবিমান অবতরণ করতে দেখা গেছে। কয়েকদিন আগে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প ক্যারিবীয় অঞ্চলে মাদক কারবারিদের মোকাবেলা করার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক শক্তি বৃদ্ধির নির্দেশ দিয়েছিলেন, যার অংশ হিসেবে এই বিমানগুলো মোতায়েন করা হয়।
শনিবার এক মার্কিন আলোকচিত্রী রয়টার্সের জন্য ওইবছার পুয়ের্তো রিকোর পুরনো রুজভেল্ট রোডের সামরিক ঘাঁটিতে এফ-৩৫ বিমানগুলোকে অবতরণরত অবস্থায় ক্যামেরাবন্দী করেন। এর আগে এই ঘাঁটিটিতে বেশ কয়েকটি মার্কিন হেলিকপ্টার, অসপ্রে এয়ারক্রাফট ও অন্যান্য পরিবহন বিমান দেখা গেছে, যা মার্কিন সামরিক প্রস্তুতির চিত্র ফুটিয়ে তোলে।
উত্তেজনা বেড়ে যাওয়ার মধ্যে কয়েক দিন আগে শীর্ষ মার্কিন জেনারেলসহ দেশের অন্যান্য সামরিক কর্মকর্তা সেখানে ঘুরে গিয়েছিলেন, এর ঠিক পরই এই এফ-৩৫ বিমানগুলো সেখানে এসেছে। এফ-৩৫ হলো অত্যাধুনিক স্টেলথ প্রযুক্তিযুক্ত যুদ্ধবিমান, যা ভেনেজুয়েলার বিমান বাহিনীকে প্রতিযোগিতা দিতে সক্ষম। ভেনেজুয়েলার কাছে কিছু পুরনো এফ-১৬ যুদ্ধবিমান থাকলেও, এই আধুনিক যুদ্ধবিমানগুলো যেকোনো পরিস্থিতিতে কার্যকর বটে।
প্রসঙ্গত, মার্কিন ট্রাম্প প্রশাসন ক্যারিবীয় অঞ্চলে মাদকবিরোধী অভিযানের অংশ হিসেবে পুয়ের্তো রিকোয় ১০টি এফ-৩৫ পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছিলেন। এছাড়া সেখানে আরও যুদ্ধবিমান পাঠানোর প্রস্তুতি চলছিল। ট্রাম্পের দাবি ছিল, এই অঞ্চলে তাদের লক্ষ্য হলো মাদক কারবারি ও চোরাকারবারিদের দমন করা, এবং তারা ভেনেজুয়েলায় সরকার পালাতে চান না।
অন্যদিকে, এই পরিস্থিতিতে ফের ভিন্ন দাবি উত্থাপন করছে ভেনেজুয়েলা। তার মতে, মার্কিন নৌযানে হামলা চালিয়ে ১১ জনকে হত্যা করা হয়েছে, যাদের মধ্যে কেউ মাদক চোরাকারবারি নয় বলে দাবি তারা। সম্প্রতি মার্কিন নৌকার ওপর হামলা চালানো হয়, যা তাদের প্রথম প্রকাশ্য অভিযান বলে বিবেচিত।
অবশ্য ভেনেজুয়েলা এই হামলার জন্য যুক্তরাষ্ট্রকে দায়ী করলেও, ওয়াশিংটন এখনও এই ঘটনার বিষয়ের কোনও মন্তব্য করেনি। অন্যদিকে, বৃহস্পতিবার এক মার্কিন ডেস্ট্রয়ার ভেনেজুয়েলার একটি টুনা মাছ ধরার নৌযানকে থামিয়ে তল্লাশি চালিয়েছে, যেখানে ৯ জন জেলে ছিলেন। এ ঘটনায় ভেনেজুয়েলা অভিযোগ করেছে, এই নৌযানটি অপ্রচলিতভাবে ও বৈধতা ছাড়া পরীক্ষার আওতায় আনা হয়।
ভেনেজুয়েলার বিমানবাহিনীর বিরুদ্ধে পশ্চিমা শক্তির চাপের মধ্যেও, দেশের হাতে কিছু পুরনো এফ-১৬ যুদ্ধবিমান থাকলেও, মার্কিন এফ-৩৫ এর উপস্থিতি তাদের জন্য পরীক্ষামুলক এবং সম্ভাব্য সংঘর্ষের ক্ষেত্রে বেশ কার্যকর বলে মনে করা হচ্ছে।
এই সব ঘটনা বোঝায় যে, ক্যারিবীয় অঞ্চলে উত্তেজনা ব্যাপক হারে বেড়ে এসেছে, এবং আন্তর্জাতিক চাপের মাঝে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হতে পারে।