ইউক্রেনে গোলযোগ চালানোর সময় রাশিয়ার একটি ড্রোন সীমান্ত পেরিয়ে রোমানিয়ার আকাশসীমায় প্রবেশ করে। এই ঘটনাটি ঘটার পরপরই রোমানিয়া দ্রুত সতর্ক হন এবং যুদ্ধবিমান উড়িয়ে দেয় পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য। রোববার (১৩ সেপ্টেম্বর) রোমানিয়ানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এই ঘটনার নিশ্চিত করেছে।
প্রতিবেদনে জানানো হয়, রোমানিয়ার আকাশসীমায় ঢুকে পড়া ড্রোনটিকে অনুসরণ করে বিভিন্ন যুদ্ধবিমান, যেখানে দুটি এফ–১৬ এবং দুটি জার্মান ইউরোফাইটার বিমান ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়। শেষ খবর অনুযায়ী, রাডারে ড্রোনটি পূর্বে চিলিয়া ভেচে গ্রামে দেখা গেছে।
রোমানিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োনুত মোস্টেনেউ জানিয়েছেন, তারকা এফ–১৬ পাইলটরা ড্রোনটি ভূপাতিত করার খুব কাছাকাছি পৌঁছে গিয়েছিলেন। কিন্তু হঠাৎ করে সেটি আবার ইউক্রেন সীমান্তের দিকে ফিরে যায়। এদিকে, সম্ভাব্য ধ্বংসাবশেষ খুঁজে বের করার জন্য হেলিকপ্টারও মোতায়েন করা হয়েছে।
ন্যাটো সদস্য রাষ্ট্র হিসেবে রোমানিয়া অঙ্গীকারবদ্ধ, পরিস্থিতি উদ্বেগজনক ও সতর্ক। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি সামাজিক মাধ্যমে জানিয়েছেন, রুশ ড্রোনটি প্রায় ১০ কিলোমিটার ভেতরে প্রবেশ করে প্রায় ৫০ মিনিট ন্যাটো দেশের আকাশসীমায় উড়ে গেছে। তিনি উপসংহারে বলেছেন, এটি রাশিয়ার যুদ্ধ সম্প্রসারণেরই এক পদ্ধতি।
জেলেনস্কি আরও যোগ করেছেন, রাশিয়ার বিরুদ্ধে কঠোর নিষেধাজ্ঞা, বাণিজ্যে শুল্ক বৃদ্ধি ও যৌথ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা আরও জোরদার করা খুবই জরুরি হয়ে পড়েছে।
এছাড়াও, সুইডেন এই ঘটনা গভীর নিন্দা জানিয়ে বলেছে, এটি ন্যাটো আকাশসীমায় অগ্রহণযোগ্য একটি লঙ্ঘন। দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী মারিয়া মালমার স্টেনেরগার্দ বলেছেন, এটি খুবই দুঃখজনক ও অগ্রহণযোগ্য ঘটনা।
এরই মধ্যে, গত সপ্তাহে পোল্যান্ড তাদের আকাশসীমায় প্রবেশ করে থাকা রুশ ড্রোন ভূপাতিত করে। এটি ছিল রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধের মধ্যে প্রথমবারের মতো ন্যাটো মিত্ররা গুলি চালিয়েছে। এরপরই ন্যাটো পূর্ব ইউরোপের সীমান্তে আরও কড়াকড়ি এবং প্রস্তুতি গ্রহণের ঘোষণা দেয়।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও বলেন, পোল্যান্ডে ড্রোন প্রবেশের ঘটনা ‘অগ্রহণযোগ্য ও বিপজ্জনক’, তবে এটি ইচ্ছাকৃত কিনা, সে বিষয়টি তদন্তাধীন। তিনি সতর্ক করে বলেছেন, যদি এটি সরাসরি পোল্যান্ডকে লক্ষ করে করা হয়, তাহলে সেটি হবে ‘চরম উসকানিমূলক পদক্ষেপ’।
পোল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী ডোনাল্ড টাস্ক তার প্রতিক্রিয়ায় জানিয়েছেন, তারা এই ঘটনার জন্য খুবই দুঃখিত। তবে সত্যতা প্রমাণিত হয়েছে যে, এটি একটি ইচ্ছাকৃত হামলা।
উল্লেখ্য, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, যদি সমস্ত ন্যাটো দেশ একসঙ্গে কঠোর পদক্ষেপ নেয় এবং রাশিয়ার তেল কেনা বন্ধ করে দেয়, তবে তারা মস্কোর উপর বড় ধরনের অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপের জন্য প্রস্তুত।