বাংলাদেশে গণতন্ত্রের পুনঃপ্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে সবাইকে একসাথে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। রবিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় এক ফেসবুক পোষ্টের মাধ্যমে তিনি এ ঘোষণা দেন।
তারেক রহমান বলেছেন, প্রতি বছর ১৫ সেপ্টেম্বর বিশ্বব্যাপী পালিত হয় আন্তর্জাতিক গণতন্ত্র দিবস। এই দিবসের মাধ্যমে গণতন্ত্রের মূল ভিত্তি, পাশে থাকা শক্তি এবং এর গুরুত্বের বিষয়ে মানুষের মধ্যে সচেতনতা বাড়ানো হয়। জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে এই দিনটি গণতান্ত্রিক চর্চার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ স্মারক হিসেবে পালিত হয়। তিনি আবারও উল্লেখ করেন, গণতন্ত্রের জন্য জীবন উৎসর্গকারী শহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা ও তাদের আত্মার শান্তির জন্য প্রার্থনা। আহতদের প্রতি সমবেদনা জানিয়ে তিনি বলেন, বিশ্বের সকল গণতন্ত্রপ্রেমী মানুষের প্রতি আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন।
তিনি স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন, মহান স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান বহুদলীয় গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করেছিলেন একদলীয় বাকশালের ওপর থেকে। বাংলাদেশের মূল ধারণা ছিল বহুদলীয় গণতন্ত্র, যেখানে মানবিক মর্যাদা, ব্যক্তির স্বাধীনতা, বাকস্বাধীনতা, সামাজিক ন্যায়বিচার ও সাম্য প্রতিষ্ঠা मुख्य ভিত্তি। দেশনেত্রী খালেদা জিয়া শহীদ জিয়ার দর্শনকে সামনে রেখে সামনের দিকে এগিয়ে চলেছেন, যদিও তাকে নানা স্বৈরশাসনের কঠিন বাধার সম্মুখীন হতে হয়েছে।
বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর থেকেই স্বৈরশাসনের হানা হয়েছিল, যা গণতান্ত্রিক বিভাগ, গণমাধ্যম ও নির্বাচনী প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত করেছে। নির্বাচনে ভুয়া ভোট, গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলো ধ্বংস, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এই সব অপকর্ম চালানো হয়েছে ক্ষমতা দীর্ঘস্থায়ী করার লক্ষ্যেই। গত প্রায় এক দশক ধরে আওয়ামী লীগের শাসনামলে দেশে গণতন্ত্র ছিল অবরুদ্ধ, এবং গণতন্ত্রের মূলনীতিগুলোর প্রতি উপেক্ষা প্রকাশ করা হয়েছে।
তারেক রহমান আরও বলেন, এবারের আন্তর্জাতিক গণতন্ত্র দিবসের মূল স্লোগান হলো ‘এ্যাচিভিং জেন্ডার ইকুইলিটি একশন বাই একশন’, অর্থাৎ লিঙ্গ সমতার জন্য নিরন্তর পদক্ষেপ নিতে হবে। গণতন্ত্রে নারীর পাশাপাশি সব লিঙ্গের মানুষের সমানাধিকার এবং মর্যাদা প্রতিষ্ঠিত হয়, যা মূল মানবাধিকার। একজন গণতান্ত্রিক সমাজে, যেখানে সব ধরনের বৈষম্য রোধ করা হয়, সেখানে প্রতিবাদ ও সমতা সবসময় জয়ের জন্য লড়া চালিয়ে যেতে হতে পারে।
তিনি আরও বলেন, গণতন্ত্র হলো একটি সার্বজনীন মূল্যবোধ ও রাজনৈতিক প্রক্রিয়া, যেখানে জনগণের স্বাধীন ইচ্ছে, দৃষ্টিভঙ্গি এবং সকল ক্ষেত্রে অংশগ্রহণ জরুরি। গত বছরের জুলাই মাসে ছাত্র-জনতার দির্ঘনিয়ন গণঅভ্যুত্থানে ৫ আগস্ট একটি অন্ধকার স্বৈরশাসনের পতন ঘটেছে। তাই, এখন আমাদের অবশ্যই ঐক্যবদ্ধ হয়ে বাংলাদেশে গণতন্ত্রের ফের প্রতিষ্ঠার জন্য নিরলস প্রচেষ্টা চালাতে হবে। আমাদের মূল ভিত্তি হবে সুবর্ণ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন; বিচার বিভাগ ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতা এবং গণতন্ত্রের প্রতিটি মূলনীতির বাস্তবায়ন।
আসুন, ইনশাআল্লাহ, একটি গণতান্ত্রিক, সম্পৃক্ত ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তুলবো যেখানে আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম স্বনির্ভর, অন্নপূর্ণ, উদারনৈতিক, সামাজিক শান্তি ও ন্যায়ের আবহে জীবনের অগ্রগতি লাভ করবে।