নেপাল একটি গুরুত্বপূর্ণ পালাবদলের পথে। গত সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর), দেশটির অন্তর্বর্তী সরকারে অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন তিনজন নতুন মন্ত্রী, যা সহ মোট মন্ত্রিসভার সদস্য সংখ্যা পৌঁছেছে সর্বোচ্চ ১৫ জনে। এই সিদ্ধান্তটি প্রধানমন্ত্রীর সুশীলা কার্কির নেতৃত্বে নেওয়া হয়েছে, এবং এটি দেশের রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যস্থতায় একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পাওয়ার দুই দিন পর, রোববার তিনি তার মন্ত্রিসভা সম্প্রসারণ করেন। নতুন মন্ত্রিসভায় জাতীয় নেতৃত্বে কিছু গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন এসেছে। সাবেক অর্থসচিব রমেশ্বর খনালকে অর্থমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়েছে, খ্যাতিমান আইনজীবী ওম প্রকাশ আর্যালকে তার প্রথম দফায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীর দায়িত্ব দেওয়া হয়, পাশাপাশি নেপাল বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষের সাবেক নির্বাহী পরিচালক কুলমান ঘিসিংকে জ্বালানি ও সেচমন্ত্রী হিসাবে নিযুক্ত করা হয়। এছাড়া, ঘিসিংকে অতিরিক্ত দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে পদ্ম কাঠামো, পরিবহন ও নগর উন্নয়নের বিষয়েও। খবরের সূত্র অনুযায়ী, সোমবার এই নেতৃত্বদানকারীদের শপথ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে।
প্রথম দিকে, প্রধানমন্ত্রী কার্কি তার মন্ত্রিসভার সদস্য সংখ্যা ১৫ জনের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখার পরিকল্পনা করেছেন। বাকি সদস্যদের ধাপে ধাপে নিয়োগ দেওয়া হবে বলে জানা গেছে। কার্কির ঘনিষ্ঠ সূত্র বলেছে, এই পরিবর্তনের মূল লক্ষ্য হলো দেশের সাধারণ জনগণের আস্থা পুনরুদ্ধার, অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনা, এবং বিভিন্ন পক্ষের মধ্যে বিশ্বাস স্থাপন। বিশেষ করে, অর্থ ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীর দায়িত্ব নিয়ে সত্যতা ও দক্ষতা দেখানোর জন্য প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, অ্যাডভোকেট আর্যাল প্রথমে সরকারের বাইরে থেকে সহযোগিতা করতে চাইলেও শেষ পর্যন্ত তিনি মন্ত্রী হওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। তিনি ইতিমধ্যে রাষ্ট্রপতি রামচন্দ্র পাউডেল, প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক ও রাজনৈতিক আলোচনায় অংশ নিয়েছেন। একই সময়ে, জেন জি আন্দোলনের ব্যানারে সম্প্রতি দুই দিনব্যাপী দুর্নীতির বিরুদ্ধে জাতীয় বিকল্প বিক্ষোভে কমপক্ষে ৭০ জন নিহত হন, যা দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে আরও উত্তেজিত করে তোলে।
গত সপ্তাহে, কার্কি মন্ত্রিসভার সম্প্রসারণের ব্যাপারে আলোচনা শুরু করেন। রোববার রাতে তিনি বিষয়টি চূড়ান্ত করেন, যেখানে অ্যাডভোকেট আর্যাল স্বরাষ্ট্র ও আইন বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব নেবেন। এর আগে তিনি খনালকে অর্থমন্ত্রী ও ঘিসিংকে জ্বালানি মন্ত্রী হিসেবে নিশ্চিত করেন। এই পদক্ষেপগুলো দেশের অস্থির পরিস্থিতি শান্তিপূর্ণভাবে মোকাবেলা করার চেষ্টা হিসেবে দেখা হচ্ছে।