ফিলিস্তিনের গাজায় চলমান দীর্ঘ ২৩ মাসের বেশি সময় ধরে চলা সামরিক আগ্রাসন এবং কাতারে ইসরায়েলি হামলার কঠোর পদক্ষেপের জবাব দিতে এবার একটি ঐক্যবদ্ধ উদ্যোগ গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়েছেন ইরাকের প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ শিয়া আল-সুদানি। তিনি বলেছেন, ইসরায়েলের এই ধরনের মারাত্মক আগ্রাসন আর কোনও দল বা দেশের একার পক্ষে মোকাবেলা করা সম্ভব নয়; বরং মুসলিম এবং আরব দেশগুলোর যৌথ কার্যক্রম অপরিহার্য হয়ে উঠেছে। এ জন্য তিনি ইসলামী সামরিক জোট গঠনের প্রস্তাব দেন, যা সামরিক, নিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে একসঙ্গে কাজ করবে।
আল-সুদানি এই গুরুত্বপূর্ণ মন্তব্য করেন কাতারে অনুষ্ঠিত আসন্ন আরব-ইসলামিক সম্মেলনের আগে, আল জাজিরার সঙ্গে এক একান্ত সাক্ষাৎকারে। তিনি বলেন, ‘গত মঙ্গলবার দোহার ইসরায়েলি হামলায় পাঁচ হামাস নেতা ও এক কাতারি নিরাপত্তা কর্মকর্তার মৃত্যু হয়, যা আন্তর্জাতিক আইনের চরম লঙ্ঘন। এ ধরনের ভয়াবহ হামলার মাধ্যমে ইসরায়েল স্পষ্ট করে দিয়েছে যে, তার কর্মকাণ্ড পুরো অঞ্চলটির নিরাপত্তার জন্য বড় হুমকি।’
তিনি আরও বলেন, ‘মুসলিম দেশগুলোর জন্য আত্মরক্ষার কোনও বাধা নেই। আমাদের উচিত রাজনৈতিক, নিরাপত্তা এবং অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব বাড়ানো। এর মাধ্যমে আলেমের ঐক্য আরও দৃঢ় হবে।’
এই মন্তব্যের মধ্যে দিয়ে তিনি এমন এক পরিস্থিতিতে নিজের বক্তব্য ব্যক্ত করছেন যেখানে দোহার আসন্ন আরব-ইসলামী সম্মেলনে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার ব্যাপারে আলোচনা হবে। প্রায় এক দশক আগে মিশর এ উদ্যোগের প্রস্তাব দিয়েছিল। আজকের সময়ে আল-সুদানি সতর্ক করে বলেছেন, ‘ইসরায়েলকে প্রতিরোধের জন্য ইসলামী বিশ্বে অনেক উপায় রয়েছে। গাজায় চলমান স্থায়ী আক্রমণ কেবলমাত্র এখানেই থাকছে না, তা দ্রুত অন্যত্র ছড়িয়ে যেতে পারে।’
প্রসঙ্গত, আল-জাজিরা জানিয়েছে যে, দোহার এই সম্মেলন দুটি দিনব্যাপী, যেখানে হামাস নেতাদের লক্ষ্য করে ইসরায়েলি হামলার ঘটনা এবং এর প্রতিক্রিয়া নিয়ে আলোচনা হবে। গত সপ্তাহে কাতারে এই সম্মেলনের আয়োজন করা হয় যেখানে ফিলিস্তিনি আন্দোলনকারী গোষ্ঠী হামাসের পক্ষে সমর্থন প্রকাশ করা হয়। হামাসের দাবি, এই হামলায় তাদের পাঁচজন সদস্য নিহত হলেও শীর্ষ নেতারা অক্ষত রয়েছেন। এরই মধ্যে এখন আন্তর্জাতিক মহলে এ আলোচনাগুলো আরও জোরাল হয়ে উঠছে।