বাংলাদেশের বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দিন বলেছেন, যদি আমাদের বাণিজ্য ঘাটতি কমানো যায়, তাহলে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে শুল্ক হ্রাসের সম্ভাবনা আরও বাড়তে পারে। রবিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) বিকেলে সচিবালয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য প্রতিনিধি কার্যালয়ের (ইউএসটিআর) দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক সহকারী ব্রেন্ডান লিঞ্চের নেতৃত্বে তিন সদস্যের প্রতিনিধিদলের সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ শেষে তিনি এই আলাপকো বলতেন। এই সংলাপে তিনি জানান, বাংলাদেশের সঙ্গে চলমান আলোচনা অব্যাহত থাকবে এবং তারা আমাদের অনুরোধে শুল্ক হ্রাসের ব্যাপারে ইতিবাচক মনোভাব প্রদর্শন করেছেন। সূত্র মতে, শুল্ক হ্রাসের জন্য তারা আমাদের বাণিজ্য ঘাটতি কমাতে উত্সাহিত করছেন। এই অবস্থায়, চুক্তির সময়সূচি এখনও চূড়ান্ত হয়নি, তবে আলোচনা চলমান রয়েছে এবং ভবিষ্যতে শুল্ক হ্রাসের সুযোগ খুঁজছেন আমরা। তিনি বলেন, প্রাথমিক অগোচর অগ্রগতির ভিত্তিতে আমদানি ধীরে ধীরে বাড়ছে। যখন পর্যন্ত আমাদের সন্তোষজনক পর্যায়ে পৌঁছাবে না, ততক্ষণ শুল্ক হ্রাস হবে না। কৃষিপণ্য, জ্বালানি ও অন্যান্য পণ্যের সম্ভাবনাময় আমদানি ক্রমবর্ধমান রয়েছে। পাশাপাশি বিমানের অর্ডার ও এলএনজির মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আলোচনা হচ্ছে। এর মাধ্যমে আমাদের বাণিজ্য ঘাটতি ধাপে ধাপে কমানোর চেষ্টা চলছে বলে তিনি মন্তব্য করেন। যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিরা সন্তোষজনক অগ্রগতি প্রকাশ করেছেন, বিশেষ করে পোশাক শিল্পে তুলা কিনে শুল্ক হ্রাসের আলোচনায়। আমাদের দেশের জন্য তারা গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করেন তিনি। সমবায়ভাবে, আমাদের বেসরকারি খাত থেকে আমদানির দাম অপ্রতিযোগী হলে সরকারি দৃষ্টিতে তা বাধ্যতামূলক নয়, বলেও জানান উপদেষ্টা। বর্তমানে তুলার দামে আন্তর্জাতিক বাজারে অবস্থা একটু ভিন্ন, যা আমাদের উপকারে আসতে পারে। অন্য বিষয়ে, বাণিজ্য ঘাটতির বাইরে অন্য কোনও আলোচনার হয়নি বলে জানিয়েছেন তিনি। বাণিজ্য সচিব বলেন, বাংলাদেশের যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে প্রায় ছয় বিলিয়ন ডলার পরিমাণ বাণিজ্য ঘাটতি রয়েছে। এই অংকের মধ্যে এককভাবে সয়াবিন ও তুলার আমদানি অন্যতম। চলতি অর্থবছরে ইতিমধ্যে আমদানির অঙ্ক উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। ভবিষ্যতে সম্ভাব্য চুক্তিতে শুল্ক কমানোর বিষয়টি নির্ভর করবে আমাদের বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর উপর। বোয়িং বিমান সংস্থার ব্যাপারে, শেখ বশিরউদ্দিন জানান, এটি একটি দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা, যা ২০৩২ সালের আগে সম্পন্ন হবে না। বোয়িং থেকে আমাদের অধিক পরিমাণে বিমান আনার জন্য দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা চলছে। তিনি উল্লেখ করেন, বোয়িং দিয়ে দীর্ঘমেয়াদে বাণিজ্য ঘাটতি কমানো সম্ভব, এবং যদি আমরা সফলভাবে তা করতে পারি, তাহলে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে প্রবেশের অগ্রাধিকার বাড়বে, এর ফলে আমাদের আমদানি ও রপ্তানি উভয়ই বাড়বে।