পাকিস্তানের সঙ্গে সৌদি আরব একটি গুরুত্বপূর্ণ এবং দীর্ঘমেয়াদী প্রতিরক্ষা চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। এই চুক্তি তাদের দুজনের মধ্যে চলমান নিরাপত্তা সম্পর্ককে আরও গভীর এবং শক্তিশালী করবে, যা সম্প্রতি দুই দেশের মধ্যে সম্পাদিত হয়েছে। রাষ্ট্রীয় সংবাদ মাধ্যমের মাধ্যমে এই তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।
বুধবার, ১৭ সেপ্টেম্বর, একটি যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়েছে, এই চুক্তি দুই দেশের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে, অঞ্চল ও বিশ্বজুড়ে শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে তাদের অঙ্গীকারের প্রতিফলন। এর মূল লক্ষ্য হলো দ্বিপাক্ষিক প্রতিরক্ষা সহযোগিতা বাড়ানো এবং কোনো ধরনের আগ্রাসনের প্রতিরোধ গড়ে তোলা। চুক্তিতে স্পষ্ট করে বলা হয়েছে, যে কোনো দেশের ওপর অন্য কোনো দেশের আক্রমণকে উভয় দেশের জন্য আঘাত হিসেবে গণ্য করা হবে।
সৌদি প্রেস এজেন্সির (এসপিএ) সূত্র বলেছে, এই প্রতিরক্ষা চুক্তিটি ঐতিহাসিক অংশীদারিত্ব এবং গভীর কৌশলগত স্বার্থের ভিত্তিতে করা হয়েছে। এদিকে, বুধবার রিয়াদে সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান ও পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফের মধ্যে বৈঠক হয়, যেখানে পরিস্থিতি, কৌশলগত অংশীদারিত্ব বাড়ানোর উপায় এবং আঞ্চলিক-আন্তর্জাতিক ঘটনাবলী নিয়ে আলোচনা করা হয়। তারা নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা অর্জনের জন্য একসাথে কাজ করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।
প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ বর্তমানে সৌদি আরবে রাষ্ট্রীয় সফরে রয়েছেন।
চুক্তির স্বাক্ষর নিয়ে যখন প্রশ্ন করা হয়, তখন একজন জ্যেষ্ঠ সৌদি কর্মকর্তা রয়টার্সকে জানান, এটি বহু বছর ধরে চলা আলোচনা ও সমঝোতার ফল। এটি কোনো নির্দিষ্ট দেশের বা ঘটনার প্রতিক্রিয়া নয়; বরং দুই দেশের নিরাপত্তা মনোভাবকে প্রশস্ত করতেই এই চুক্তি স্বাক্ষর করা হয়েছে।
পারমাণবিক অস্ত্রের ব্যবহার বা এর সংক্রান্ত অন্যান্য প্রশ্নের জবাবে, নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অফিসার বলেন, এটি একটি বিস্তৃত প্রতিরক্ষামূলক চুক্তি যেটি সব ধরনের সামরিক কার্যক্রমকে অন্তর্ভুক্ত করে।
এই চুক্তিটি আরব লীগ এবং ইসলামিক সহযোগিতা সংস্থার (ওআইসি) এক যৌথ বৈঠকের দুদিন পর স্বাক্ষরিত হলো, যা গত ৯ সেপ্টেম্বর কাতারের দোহায় ইসরায়েলের হামলার পর অনুষ্ঠিত হয়। ওই হামলায় হামাসের রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দকে লক্ষ্য করে আক্রমণ করা হয়েছিল, যখন তারা মার্কিন-সমর্থিত যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনা করছিলেন। এই ঘটনারতারা ইসরায়েলের নির্মম পদক্ষেপের নিন্দা জানায়।