ইসরায়েলের সঙ্গে পূর্বনির্ধারিত প্রীতি ফুটবল ম্যাচ বাতিল করায় আর্জেন্টিনাকে ধন্যবাদ জানিয়েছে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। দলটির রাজনৈতিক দফতরের সদস্য হেসাম বাদরান বলেছেন, আর্জেন্টিনার এই সিদ্ধান্ত থেকে প্রমাণিত হয়েছে, গণমানুষের চাপ বাস্তব ফল বয়ে আনতে পারে।
তিনি বলেন, বিশ্বব্যাপী ইসরায়েলের বিরুদ্ধে বয়কট, পুঁজি প্রত্যাহার ও নিষেধাজ্ঞা আরোপের যে ‘বিডিএস’ আন্দোলন চলছে তা এক ধরনের প্রতিরোধ। এর মাধ্যমে দৃশ্যমান সাফল্য অর্জন করা সম্ভব। ইসরায়েলকে কোণঠাসা করতে এ আন্দোলনের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে।
হামাসের টুইটার অ্যাকাউন্ট থেকেও আনুষ্ঠানিকভাবে আর্জেন্টিনাকে ধন্যবাদ জানিয়েছে পোস্ট দেওয়া হয়েছে।
আর্জেন্টিনার ক্রীড়াবিষয়ক ওয়েবসাইট মিনুতুনো জানিয়েছেন, সহিংসতা বৃদ্ধির আশঙ্কা, হুমকি ও সমালোচনার মুখে লিওনেল মেসির নেতৃত্বাধীন আর্জেন্টিনার ফুটবল দল ইসরায়েলের সঙ্গে ৯ জুনের প্রস্তুতি ম্যাচটি বাতিল করেছে। এই সিদ্ধান্তের পর ফিলিস্তিন ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন আর্জেন্টিনার ফুটবল খেলোয়াড়দের ধন্যবাদ জানিয়েছে।
আর্জেন্টিনার এমন সিদ্ধান্তে ক্ষিপ্ত ইসরায়েল। দেশটির প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু আর্জেন্টিনার প্রেসিডেন্ট মরিসিও মার্সিকে ফোন করে খেলা বাতিলের সিদ্ধান্ত পরিবর্তনের অনুরোধ জানিয়েছেন। জবাবে আর্জেন্টিনার প্রেসিডেন্ট বলেছেন, তার দেশের ফুটবল ফেডারেশন একটি স্বতন্ত্র প্রতিষ্ঠান। তাদের সিদ্ধান্তে তিনি হস্তক্ষেপ করবেন না।
আগামী ১৬ জুন এই ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। ফিলিস্তিনি শহর নাবি সালেহ শহর থেকে তাদের ফুটবল দল এক ভিডিও বার্তায় ম্যাচ বাতিলের আর্জেন্টাইন সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে। তারা এই সিদ্ধান্তকে স্বাধীনতা, সুবিচার ও সমতার পক্ষে বলে উল্লেখ করেছে।
এর আগে প্রীতি ফুটবল ম্যাচটি বাতিলের জন্য আর্জেন্টিনার প্রতি আহ্বান জানিয়েছিল ফিলিস্তিনি ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন (পিএফএ)। সোমবার আর্জেন্টিনার ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন, দক্ষিণ আমেরিকা ফুটবল কনফেডারেশন ও বিশ্ব ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থা ফিফা’র কাছে পাঠানো এক চিঠিতে এই আহ্বান জানায় তারা। পিএফএ সভপাতি জিবরিল রাজৌব চিঠিতে লেখেন, দখলদার ইসরায়েল খেলার সার্বজনীন মূল্যবোধ ও নৈতিকতা লঙ্ঘন করছে। তারা অখণ্ড জেরুজালেমকে ইহুদিদের শহর দাবি করে আর্জেন্টিনার জনগণের কাছে ভুল বার্তা দিচ্ছে।
জেরুজালেমের যে হাইফা এলাকায় এই ম্যাচ আয়োজনের পরিকল্পনা করেছিল ইসরায়েল এক সময় সেটি ছিল ফিলিস্তিনি গ্রাম। পরে গ্রামটি দখল করে সেখানকার বাসিন্দাদের তাড়িয়ে দেয় ইসরায়েল। ম্যাচটির আয়োজকদের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, খেলা দেখতে টিকিট কেনার জন্য ৬ লাখ মানুষ আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। স্টেডিয়ামটিতে ৩১ হাজার ৭৩৩ জন দর্শক খেলা দেখতে পারেন। আর্জেন্টিনাকে অংশগ্রহণের জন্য ৩০ লাখ ডলার ফি-ও দেওয়া হয়। সূত্র: পার্স টুডে, টেলিগ্রাফ।