রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে খুবই কঠোরভাবে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন টোমাহক ক্ষেপণাস্ত্র ইস্যুতে। পুতিন সতর্ক করেছেন, ইউক্রেনে দীর্ঘপাল্লার এই ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহ করলে মস্কো ও ওয়াশিংটনের সম্পর্ক গুরুতরভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। দুই নেতার মধ্যে প্রায় আড়াই ঘণ্টার ফোনালাপে এ বিষয়ে আলোচনা হয়, যেখানে ইউক্রেন যুদ্ধ এবং ভবিষ্যৎ শান্তি আলোচনা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়। এই খবর নিশ্চিত করেছে সংবাদমাধ্যম টিআরটি ওয়ার্ল্ড।
মস্কো জানিয়েছে, পুতিন স্পষ্টভাবে বলেছেন যে, টোমাহক ক্ষেপণাস্ত্র যুদ্ধের বাস্তবতা বদলাতে পারবে না। বরং এই ক্ষেপণাস্ত্রগুলো দুই দেশের সম্পর্কের জন্য ক্ষতিকর হয়ে উঠবে এবং ইউক্রেনে শান্তিপূর্ণ সমাধানে বাধা সৃষ্টি করবে। পুতিনের ভাষ্যে, এই আলোচনা খুবই ফলপ্রসূ, খোলামেলা এবং গোপনীয় ছিল। ইউক্রেন যুদ্ধই আলোচনার মূল বিষয় ছিল, যেখানে পুতিন ব্যাপকভাবে পরিস্থিতির মূল্যায়ন উপস্থাপন করেন।
রুশ কর্মকর্তারা মনে করেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে রুশ বাহিনী এখনও সম্পূর্ণ ফ্রন্টলাইনে কৌশলগত নিয়ন্ত্রণ বজায় রেখেছে। অন্যদিকে, ট্রাম্প বারবার বলেছেন, যুদ্ধ দ্রুত শেষ করা প্রয়োজন। আমেরিকার প্রেসিডেন্টের অন্যতম মূল বক্তব্য ছিল, ইউক্রেনের সংঘাত বন্ধ হলে রাশিয়া-আমেরিকার মধ্যে অর্থনৈতিক সুযোগ বাড়বে।
আলোচনায় ভবিষ্যতে সরাসরি সাক্ষাতের সম্ভাবনাও উত্থাপিত হয়েছে। উভয় পক্ষ পরবর্তী বৈঠকের জন্য প্রস্তুতি শুরু করতে সম্মত হয়েছে, যেখানে সম্ভাব্য স্থান হিসেবে হাঙ্গেরির রাজধানী বুদাপেস্টের নাম উঠেছে।
পুতিন ও ট্রাম্পের শেষ মুখোমুখি সাক্ষাৎ Augustে আলাস্কায় হয়েছিল, কিন্তু সেসময় থেকে শান্তির আলোচনার অগ্রগতি বন্ধ হয়ে গেছে। এরপর থেকে ট্রাম্প ন্যাটো মিত্রদের সঙ্গে নতুন কৌশল অবলম্বন করে রাশিয়ার উপর চাপ বাড়ানোর পরিকল্পনা নিয়েছেন।
বৃহস্পতিবারের ফোনালাপের পর ট্রাম্প তার ট্রুথ সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মে লেখেন, তিনি এবং পুতিন বুদাপেস্টে সাক্ষাৎ করে ‘যুদ্ধের অবসান নিয়ে আলোচনা’ করবেন। দুই দেশের উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধি দল আগামী সপ্তাহে বৈঠক করবে বলে জানানো হয়েছে।
এছাড়াও, শুক্রবার হোয়াইট হাউসে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে বৈঠক করবেন ট্রাম্প। এই আলোচনায় মূল বিষয় হবে ইউক্রেনকে আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ও দীর্ঘপাল্লার অস্ত্র সরবরাহ।
প্রসঙ্গত, চলতি মাসের শুরুর দিকে ট্রাম্প বলেছিলেন, তিনি ইউক্রেনকে টোমাহক ক্ষেপণাস্ত্র দেওয়ার বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের কাছাকাছি রয়েছেন।