অগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে নির্বাচন কমিশন (ইসি) একটি বিশদ পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে যাতে নির্বাচন সম্পন্ন হয় শান্তিপূর্ণ, অবাধ ও সুষ্ঠুভাবে। এই পরিকল্পনার আওতায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নির্বাচনকালীন সময়ে তিনটি পর্যায়ে কঠোর নীতি অনুসরণ করা হবে। প্রথমে, তফসিল ঘোষণার আগে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তত্ত্বাবধানে অপরাধী ও সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে, অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার এবং সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখতে বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হবে। দ্বিতীয় পর্যায়ে, তফসিল ঘোষণা থেকে নির্বাচন পর্যন্ত, নির্বাচন পর্যবেক্ষণ ও ভোটারদের নিরাপদে ভোট দেয়ার ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে পুলিশ, র্যাব, বিজিবি, পুলিশি টিম, ব্যাটালিয়ন আনসারসহ অন্যান্য বাহিনী মোতায়েন থাকবে। এই সময়ে প্রচার-প্রচারণা ও ভোটের প্রশাসনিক কার্যক্রম স্বচ্ছ ও নির্বিঘ্ন রাখতে প্রতিটি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তৃতীয় পর্যায়ে, নির্বাচন পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে সহিংসতা এড়াতে মোবাইল টিম ও স্ট্রাইকিং ফোর্স মোতায়েন থাকবে এবং বিচার ব্যবস্থাও জোরদার করা হবে। নির্বাচন প্রস্তুতিমূলক কার্যক্রমের মধ্যে ভোটার তালিকা হালনাগাদ, নির্বাচনি এলাকা নির্ধারণ, রাজনৈতিক দল নিবন্ধন, ভোটকেন্দ্র স্থাপনের কাজ সম্পন্ন হয়েছে বা চলমান। পাশাপাশি, নির্বাচন শান্তিপূর্ণ ও সুষ্ঠু রাখতে কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় প্রশাসন একযোগে কাজ করবে। সংখ্যালঘু ও ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করে অন্তর্ঘাতমূলক কর্মকাণ্ড এড়াতে কঠোর নজরদারি চালানো হবে। অবৈধ অস্ত্রের ব্যবহার নিয়ন্ত্রণে যৌথ অভিযান চালানো হবে, এবং নির্বাচনি এলাকায় ড্রোন ব্যবহার বন্ধের নির্দেশনা জারি করা হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এআই প্রযুক্তি ব্যবহার করে বিভ্রান্তিকর বা মানহানিকর ভুল তথ্য প্রচার রোধে কার্যকর কৌশল উন্নয়নে কাজ চলছে। বিদেশি পর্যবেক্ষক ও সাংবাদিকের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সর্বোচ্চ পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। প্রবাসী ও পোস্টাল ভোটের নিরাপত্তা ও সংশ্লিষ্ট ব্যবস্থাগুলোর দিকনির্দেশনা প্রস্তুত ও বাস্তবায়নের জন্য পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। শেষমেশ, নির্বাচনের নিরাপত্তা ও স্বচ্ছতা রক্ষায় সশস্ত্র বাহিনী মোতায়েনের পরিকল্পনাও প্রস্তুত করা হচ্ছে। বিশেষ করে, ড্রোন ব্যবহার নিষিদ্ধ করার জন্য আইনসঙ্গত ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়া চলমান, যাতে নির্বাচনি এলাকায় গোপনীয়তা ও নিরাপত্তা বজায় থাকে। এই সব পরিকল্পনাগুলোর মাধ্যমে সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণ ও অবাধ নির্বাচনের লক্ষ্য অর্জন সম্ভব হবে বলে আশা করা হচ্ছে।