নির্বাচনে পিআর পদ্ধতি নিয়ে জামায়াতে ইসলামীর উদ্যোগকে রাজনৈতিক প্রতারণা বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। রবিবার (১৯ অক্টোবর) বিকেল সময় তিনি ফেসবুকে তার ভেরিফায়েড পেজে এক পোস্টে এ বক্তব্য প্রকাশ করেন।
নাহিদ লিখেছেন, যেখানে ‘আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব’ বা পিআর আন্দোলন শুরু হয়েছিল, সেটি আসলে একটি পরিকল্পিত রাজনৈতিক প্রতারণার অংশ। এর মাধ্যমে ঐক্যমত কমিশনের সংস্কার প্রক্রিয়াকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টার পাশাপাশি, জাতীয় সংলাপের মূল প্রশ্ন থেকে জনগণের দৃষ্টি সরানোর চেষ্টা করা হয়েছিল। এটি করে তারা গণঅভ্যুত্থানের আলোকে সরকার ও সংবিধানের প্রক্রিয়াগুলোকে বিকৃত করার অপচেষ্টা চালিয়েছে।
নাহিদ জানান, ভোটের ভিত্তিতে আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বের মাধ্যমে উচ্চকক্ষ নির্মাণের দাবি বা সংস্কারটি ছিল একান্তই সাংবিধানিক নিরাপত্তার একটি অংশ। তিনি বলেন, আমরা এই মূল বিষয়টি নিয়ে একটি শক্তিশালী আন্দোলন গড়ে তুলতে চেয়েছিলাম এবং ব্যাপক জাতীয় ঐক্য সৃষ্টি করে ৭৮ সনের আইনের ভিত্তিতে একটি সুদৃঢ় কাঠামো প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করেছিলাম।
কিন্তু জামায়াত ও তার মিত্ররা এই মূল এজেন্ডাকে ছিনিয়ে নিয়ে এটিকে একটি ক্ষুদ্র প্রযুক্তিগত পিআর ইস্যুতে পরিণত করে ফেলে। তারা নিজেদের দলীয় স্বার্থের জন্য এই আন্দোলনকে দর-কষাকষির একটি অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করে। তাদের লক্ষ্য ছিল সংস্কারের পক্ষে নয়, বরং কৌশলী অপব্যবহার।
নাহিদ আরও উল্লেখ করেন, জামায়াতে ইসলামী কখনোই সংস্কার আলোচনা শুরু করেনি— না এর আগের, না পরবর্তী সময়ে। তারা কোনো গঠনমূলক প্রস্তাব দেয়নি বা সাংবিধানিক দৃষ্টিভঙ্গি উপস্থাপন করেনি। এমনকি, তারা এক আদর্শ গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের প্রতিও কোনো অঙ্গীকার দেখায়নি।
তিনি বলছেন, ঐক্যমত কমিশনের মধ্যে অপ্রত্যাশিত সংস্কারসম্মত আহ্বান ছিল তাদের আস্থার বহিঃপ্রকাশ নয়, বরং একটি কৌশলগত অনুপ্রবেশ এবং সংস্কারবাদের মুখোশে এক ধরনের রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র। আজ বাংলাদেশের মানুষ এই প্রতারণা স্পষ্টভাবে বুঝতে পেরেছে। তারা সত্যের পথে জেগে উঠেছে এবং শীঘ্রই আর কখনো মিথ্যা সংস্কারবাদী বা চতুর শক্তিগুলোর প্রভাবের কাছে আপোষ করবে না। সর্বশক্তিমান আল্লাহ এবং এই দেশের সার্বভৌম জনগণ কখনোই অসৎ, দুর্নীতি ও নৈতিক দেউলিয়াদের কাছে শাসনকার্য পরিচালনা করতে দেবে না।