দেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিনে পরিবেশবান্ধব এবং টেকসই পর্যটন নিশ্চিত করতে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় নতুন ১২ দফা নির্দেশনা জারি করেছে। বুধবার (২২ অক্টোবর) মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব আব্দুল্লাহ আল মামুন স্বাক্ষরিত এ প্রজ্ঞাপন প্রকাশ করা হয়।
পরিবেশ অধিদপ্তর কক্সবাজার জেলা কার্যালয়ের পরিচালক মো. জমির উদ্দিন জানান, দ্বীপের অসাধারণ প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, বৈচিত্র্য ও প্রতিবেশ রক্ষা করে পর্যটন কার্যক্রম চালানোর লক্ষ্যে এসব নির্দেশনা চালু করা হয়েছে। এর মাধ্যমে দ্বীপের পরিবেশের ক্ষতিসাধন রোধ ও জীববৈচিত্র্য রক্ষা করা সম্ভব হবে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে।
নির্দেশনাগুলোর মধ্যে উল্লেখ করা হয়েছে, আগামী ডিসেম্বর ও জানুয়ারিতে পর্যটকদের রাত্রিযাপন অর্থাৎ রাতযাপন করার অনুমতি দেয়া হবে। তবে নভেম্বর মাসে শুধুমাত্র দিনভর ভ্রমণ করা যাবে। একalie ফেব্রুয়ারিতে দ্বীপে সব ধরনের পর্যটন কার্যক্রম সম্পূর্ণ বন্ধ থাকবে।
নতুন নির্দেশনা অনুযায়ী, বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) এখন থেকে পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন ছাড়া সেন্টমার্টিনে কোনো নৌযান চলাচলের অনুমতি দেবে না। পর্যটকদের অবশ্যই অনলাইনে বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের অনুমোদিত ওয়েবসাইট থেকে টিকিট সংগ্রহ করতে হবে। প্রতিটি টিকিটে ট্রাভেল পাস ও কিউআর কোড থাকতে হবে এবং কিউআর কোড ছাড়া টিকিট অবৈধ বলে গণ্য হবে।
দ্বীপে প্রতিদিন সর্বোচ্চ দুই হাজার পর্যটক ভ্রমণ করতে পারবে। রাতের সময় সৈকতে আলো জ্বালানো, শব্দ সৃষ্টি, বারবিকিউ পার্টি, কেয়া বনে প্রবেশ, সামুদ্রিক জীব বা প্রবাল সংগ্রহ কঠোরভাবে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। পাশাপাশি, সৈকতে মোটরসাইকেল, সি-বাইকসহ যেকোনো ধরণের মোটরচালিত যানবাহন চলাচল নিষিদ্ধ।
প্রতিষ্ঠানটি আরও জানিয়েছে, দ্বীপে পলিথিন বহন বা বহন করানো যাবে না। একবার ব্যবহারের জন্য তৈরি প্লাস্টিকের সামগ্রী যেমন চিপসের প্যাকেট, প্লাস্টিক চামচ, স্ট্র, শ্যাম্পুর মিনিপ্যাকের ব্যবহারও নিষিদ্ধ করা হয়েছে। পর্যটকদের নিজস্ব পানির ফ্লাস্ক সঙ্গে রাখার পরামর্শ দেয়া হয়েছে যেন পরিবেশের ক্ষতি কমানো যায়।
সরকার মনে করে, এইসব নির্দেশনা যথাযথভাবে বাস্তবায়নের মাধ্যমে সেন্টমার্টিনের নাজুক পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য রক্ষা সম্ভব হবে। দ্বীপটি হবে দায়িত্বশীল ও পরিবেশবান্ধব পর্যটনের এক আদর্শ উদাহরণ।

