ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজের শেষ ও অলিখিত ফাইনালে টস জিতে প্রথমে ব্যাটিং করার সিদ্ধান্ত নিচ্ছে বাংলাদেশ। সিরিজের প্রথম দুই ম্যাচে সহজ জয়ের পথে থাকলেও, দুই নম্বর ম্যাচে অবিশ্বাস্যভাবে সুপার ওভারে হেরে যাওয়ার জন্য এখন সিরিজের হারের শঙ্কা সৃষ্টি হয়েছে বাংলাদেশের জন্য। ঘরের মাঠে পছন্দের উইকেট বানিয়ে থাকলেও, এই ম্যাচে দুর্দান্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতার মাধ্যমে বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের বিপক্ষে জয় নিশ্চিত করার লক্ষ্য তারা রাখছে।
বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) মিরপুরের শের-ই বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডেতে বাংলাদেশ এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এই গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে বাংলাদেশের একাদশে কোনো পরিবর্তন আনা হয়নি।
বাংলাদেশের জন্য जीतই এখন একমাত্র লুকানো লক্ষ্য। যদি তারা এই ম্যাচে জয় অর্জন করতে সক্ষম হয়, তবে ১৯ মাস পরে বাংলাদেশের ট্রফি ক্যাবিনেটে যুক্ত হবে নতুন এক ওয়ানডে সিরিজের ট্রফি। তবে হারে গেলে, এটি তাদের জন্য প্রথমবারের মতো ২০১১ সালের পর যশস্বীভাবে আন্তর্জাতিক সিরিজ হারার ঘটনা। তাই মিরপুরের এই ম্যাচটি সাধারণ কোনো ম্যাচ নয়—it’s একটি মর্যাদা ও মান রক্ষার সংগ্রাম।
প্রায় আড়াই বছর পর ঢাকায় আবারও অনুষ্ঠিত হয়েছে ওয়ানডে ক্রিকেটের ফিরতি খেলা, এ সিরিজের মাধ্যমে। তিন ম্যাচের লড়াইয়ে সবচেয়ে আলোচিত বিষয় হলো স্পিনারদের আধিপত্য। প্রথম দুই ম্যাচে মিলিয়ে ৯২ ওভার বল করে স্পিনাররা, যা শুরুতে কিছুটা ধীরগতির মনে হলেও, শেষের সুপার ওভার নাটকীয়তা দিয়ে এই সিরিজের আকর্ষণ আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। ফলে, এবারের শেষ ম্যাচটি হয়ে উঠেছে একেবারে ‘অলিখিত ফাইনাল’।
বাংলাদেশের সামনে দুই প্রাপ্তির সুযোগ। একদিকে, ঘরের মাঠে প্রায় দেড় দশক ধরে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে সিরিজ হেরে আসছে টাইগাররা; অন্যদিকে, ২০২৪ সালের মার্চের পর এটিই হতে পারে তাদের প্রথম দ্বিপাক্ষিক ওয়ানডে সিরিজ জয়। পাশাপাশি, এই জয় ২০২৭ বিশ্বকাপে সরাসরি খেলার যোগ্যতা অর্জনের জন্যও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।
তবে হিসাবের খাতায় অন্য দিক রয়েছে। চলতি দশকে ওয়ানডেতে সবচেয়ে বেশি হারের বিব্রতকর রেকর্ড এখন ক্যারিবিয়ানদের। গত পাঁচ বছরে, তারা ৪৩টি ম্যাচে হেরেছে। অন্যদিকে, বাংলাদেশও খুব পিছিয়ে নয়—৮১ ম্যাচে হেরেছে ৪১টিতে। পরাজয়ের হার যেখানে ৫০.৬১ শতাংশ, সেখানে ওয়েস্ট ইন্ডিজের হার প্রায় ৫৬ শতাংশ। এই সংখ্যাগত পার্থক্য ম্যাচের ফল এবং দুই দলের মনোবলকে প্রভাবিত করছে।
মিরাজের নেতৃত্বে বাংলাদেশ যদি সিরিজটি হোয়াইটওয়াশ করার সুযোগ পায়, তবে তা – সুপার ওভারে ব্যাটিং ক্ষমতার অভাবে – অপূর্ণই রয়ে গেছে। তবে, সিরিজ জয়ে তাদের এই ব্যর্থতা পুষিয়ে নেওয়ার আশা রয়েছে। মিরপুরের এই ম্যাচে বাংলাদেশ অঙ্গীকার করে, ট্রফি হাতে হাসিমুখে মাঠ ত্যাগ করতে।
আজকের খেলায় জয় বা পরাজয়, দুই দলকেই প্রভাবিত করবে এই খেলার ফল, কারণ এটি কেবল এক ম্যাচ নয়, পুরো সিরিজের মানসিকতা ও ভবিষ্যতের দিকনির্দেশ নির্ধারণ করবে।