পর্তুগালের মন্তিজো শহরের একটি বাসস্টপের পাশে প্রদর্শিত একটি বিলবোর্ড দেশটিতে ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে। এই বিলবোর্ডে পর্তুগালকট্টর-ডানপন্থী দল শেগার নেতা আন্দ্রে ভেনতুরার ছবি ব্যবহার করে বড় করে লেখা হয়েছে—‘Isto não é Bangladesh’, অর্থাৎ ‘এটি বাংলাদেশ নয়’। প্রবাসী বাংলাদেশিরা দ্রুত এই ঘটনাকে ঘৃণা ও অসন্তোষের চোখে দেখেছেন। এর পাশাপাশি, ভেনতুরার আরেকটি বিলবোর্ডে লেখা দেখা গেছে, ‘অভিবাসী সম্প্রদায়কে অবশ্যই আইন মানতে হবে’—এর মাধ্যমে তিনি তাদের প্রতি কঠোর নির্দেশনা বুঝাতে চেয়েছেন।
আন্দ্রে ভেনতুরা পর্তুগালের প্রধান বিরোধী দল শেগার রক্ষণশীল নেতা। তাঁর দল বর্তমানে অভিবাসনবিরোধী অবস্থান নিয়ে আগামী জানুয়ারির প্রেসিডেন্ট নির্বাচন জয় করার লক্ষ্য রাখছে। ইতোমধ্যে ভেনতুরা এই নির্বাচনী প্রচারনায় সক্রিয়। স্থানীয় গণমাধ্যমের তথ্যানুযায়ী, এসব পোস্টার তার দলের নির্বাচনী কৌশলের অংশ।
গত রোববার (২৬ অক্টোবর), নিজে ইনস্টাগ্রামে একটি পোস্টের মাধ্যমে বলেন, ‘ওরা ইতোমধ্যেই রাস্তায় নেমে পড়েছে। ১৮ জানুয়ারি আমরা এই দেশকে পরিবর্তন করে দেব। ভয় নেই!’
পর্তুগালে বসবাসরত বাংলাদেশি প্রবাসীরা এই বিলবোর্ড ও এর বার্তার তীব্র নিন্দা ও ঘৃণা প্রকাশ করেছেন। তাদের অনেকে সামাজিক মাধ্যমে ভেনতুরার এ hànhেলকে ‘বর্ণবাদী ও অপমানজনক’ বলে আখ্যায়িত করেছেন।
মইটা মেয়র কার্লোস আলবিনো বলেন, এই ধরনের পোস্টার আইন লঙ্ঘন করছে। তিনি আরও বলেন, ‘আইন মানা সকলের জন্য অপরিহার্য। এটি কোনও নির্দিষ্ট সম্প্রদায়ের জন্য নয়। অভিবাসীরা যেন আইন মানে, শেগার দলের সদস্যরাও যেন মানে—এটাই আমাদের লক্ষ্য। ভেনতুরার মত নেতা থেকে শুরু করে সবাইকে আইন মানতে হবে। জেনোফোবিয়া ও বর্ণবাদেকে অপরাধ হিসেবে দেখা উচিত।’ তিনি উল্লেখ করেন, নগর পরিষদ এই পোস্টারের বিরুদ্ধে সরাসরি অভিযোগ দাখিল করবে না, বরং বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে তদন্ত করা হবে।
বাংলাদেশ দূতাবাস সোশ্যাল মিডিয়ায় জানিয়েছে, তারা প্রবাসী বাংলাদেশিদের শান্ত থাকার আহ্বান জানাচ্ছে ও বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখছে।
পর্তুগালে বসবাসরত বাংলাদেশি সাংবাদিক ফারিদ পাটোয়ারি মন্তব্য করেন, ‘অনলাইনে এসব বার্তা দেখা যায়, কিন্তু রাস্তায় পোস্টার থাকলে তার প্রভাব আরও বেশি হয়।’ তিনি আরও বলেন, ‘পর্তুগাল সবসময় নিরাপদ ও আতিথেয় দেশ হিসেবে পরিচিত। তবে দেশের কোথাও এই ধরনের বার্তা দেখা গেলে আমাদের সোচ্চার হতে হবে। আমাদের অবশ্যই প্রতিক্রিয়া জানাতে হবে।’
উল্লেখ্য, ২০২৬ সালের জানুয়ারিতে পর্তুগালে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এর মধ্যে বর্তমান রাষ্ট্রপ্রধান মার্সেলো রেবেলো দে সুসা, এছাড়া সম্ভাব্য প্রার্থীদের মধ্যে থাকছেন লুইস মার্কেস মেন্ডেস, আন্তোনিও হোসে সেগুরো, আন্দ্রে ভেনতুরা, হেনরিক গোভেইয়া ই মেলো, জোয়াও কোট্রিম দি ফিগেইরেদো, আন্তোনিও ফিলিপ, ক্যাটারিনা মার্টিনস ও হোর্হে পিন্টো।

