অন্তর্বর্তী সরকারের রোডম্যাপ অনুযায়ী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের নির্ঘণ্টের কাছাকাছি পৌঁছে গেছে। এ বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন তারিখ ঘোষণা হতে পারে বলে ধারণা করছেন সংশ্লিষ্টরা। এই পরিস্থিতিতে নির্বাচন পর্যবেক্ষণের জন্য বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন (ইসি) নতুন একটি নীতিমালা জারি করেছে, যার নাম হলো ‘নির্বাচন পর্যবেক্ষণ নীতিমালা ২০২৫’। এই নীতিমালা শুধুমাত্র দেশীয় পর্যবেক্ষকদের জন্য প্রযোজ্য থাকবে। এর মূল উদ্দেশ্য হলো সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচনের জন্য সম্ভাব্য ত্রুটি ও দুর্বলতা চিহ্নিত করা এবং নির্বাচন প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা নিশ্চিত করে ভোটারদের আস্থা বাড়ানো।
বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) ইসির সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা এই নতুন নীতিমালা জারির কথা নিশ্চিত করেছেন।
নতুন এই নীতিমালায় বলা হয়েছে, যারা গণতন্ত্র, সুশাসন এবং মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায় কার্যকর কাজ করছে, তাদের নিবন্ধিত সংগঠনই নির্বাচন পর্যবেক্ষণের জন্য আবেদন করতে পারবে। আবেদনপত্রের জন্য দৈনিক পত্রিকায় ১৫ দিন আগে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করতে হবে। আগ্রহী সংস্থাগুলি নির্ধারিত ফরম (EO-1) এবং সংশ্লিষ্ট দস্তাবেজসহ আবেদনপত্র জমা দিতে হবে।
এছাড়া, যেসব সংস্থা বা ব্যক্তির সাথে কোনো রাজনৈতিক দলের সরাসরি সম্পর্ক বা অংশীদারিত্ব রয়েছে তারা এই ধরণের নিবন্ধনের জন্য আবেদন করতে পারবে না। প্রার্থী হতে চাওয়া কেউ যদি তদন্তাধীন হয় বা সংস্থার প্রধান নির্বাহী বা পরিচালনা পর্ষদের কেউ যদি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত থাকে, তবে সেই সংস্থা নিবন্ধন পাবে না। তদ্ব্যতীত, নিবন্ধনকারী সংগঠনের সদস্যরা যাতে কোনো রাজনৈতিক দল বা প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে না পারেন, সেদিকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। সবশেষে, নিবন্ধনের মেয়াদ পাঁচ বছর এবং মেয়াদ শেষে কিছু শর্ত সাপেক্ষে নবায়ন করা যাবে।
নিবন্ধিত সংগঠনগুলোকে নির্ধারিত সময়ে অবশ্যই নির্বাচনের পর্যবেক্ষণ করে প্রতিবেদন জমা দিতে হবে – এটি অন্তত একবার সাধারণ নির্বাচন ও চারটি স্থানীয় নির্বাচন পর্যবেক্ষণের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। প্রতিটি সংগঠনকে দু’বছরে একবার দ্বিপাক্ষিক প্রতিবেদনও দাখিল করতে হবে।
পর্যবেক্ষকদের জন্য নির্ধারিত যোগ্যতাগুলোর মধ্যে রয়েছে: বাংলাদেশের নাগরিক হওয়া, বয়স কমপক্ষে ২১ বছর, উচ্চমাধ্যমিক উত্তীর্ণ, নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার অযোগ্যতা থাকা, রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সরাসরি বা ব্যক্তিগত যোগসাজশ না থাকা এবং সংশ্লিষ্ট নির্বাচনী এলাকার বাসিন্দা বা ভোটার হওয়া চলবে না। পর্যবেক্ষক মোতায়েনের জন্য উপজেলা বা মেট্রোপলিটন থানা বা সংসদীয় এলাকার যোগ্যতা থাকছে।
নীতিমালা লঙ্ঘনের বা রাষ্ট্রের শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট সংস্থাকে ১০ দিনের মধ্যে নোটিশ দেওয়া হবে। জবাব সন্তোষজনক না হলে বা অভিযোগ প্রমাণিত হলে ইসি সংস্থার নিবন্ধন বাতিল করার অধিকার সংরক্ষণ করেছে। এই সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত বলে বিবেচিত হবে।
 
			 
		    
