অন্তর্বর্তী সরকার ১৪ মাসেও নিজেদের ফিটনেস বা ক্ষমতা শৈল্পিকভাবে প্রতিষ্ঠিত করতে পারেনি বলে অভিযোগ করেছেন গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান। তিনি বুধবার (৩০ অক্টোবর) সকালে একটি ফেসবুক পোস্টে এই মন্তব্য করেন।
রাশেদ খান লিখেছেন, ভোটের সময় একদিনে জাতীয় নির্বাচন ও গণভোটের পক্ষে নানা আলোচনা হয়েছিল। তিনি উল্লেখ করেছেন, জাতীয় নির্বাচনের আগে গণভোটের যে প্রস্তাবনাও হয়েছিল, তখন বেশিরভাগ দল, বিশেষ করে জামায়াতের বাইরে অন্যান্য দলগুলো এই প্রতিপাদ্যে একমত হয়েছিলেন। এমনকি এনসিপিওও (ন্যাশনাল প্লাটফর্ম) এই পরিকল্পনাকে সমর্থন করেছিল। তবে পরবর্তী সময়ে এনসিপি তার অবস্থান পরিবর্তন করে এবং বিষয়টি মিডিয়ায় উঠে আসে।
তিনি জানিয়েছেন, এনসিপি ও জামায়াতের মধ্যে সম্পর্কের বিষয়টি গোপন রাখতে চায় তারা। মিডিয়ায় বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই দুই দলের সম্পর্ক আলাদা এবং আসলে কোনও সম্পর্ক নাই। আইনকম্যুনিকেটাররা এমন ভাবনা ছড়ানোর জন্য ডিজাইন করছে যেন তারা একসাথে সম্পর্ক রাখে।
রাশেদ খান উল্লেখ করেছেন, তিনি আগে থেকেই বলেছিলেন, জামায়াতের যা করা সম্ভব, সেটার অধিকাংশই এনসিপি দ্বারা পরিচালিত। তারা জামায়াত-শিবিরের নেতাদের দিয়ে তাদের প্রভাব বিস্তার করে। তিনি উল্লেখ করেছেন, এনসিপির কিছু নেতার অভিযোগ যে জামায়াতের নেতাদের সঙ্গে সম্পর্কের ফাটল তৈরি হচ্ছে, এটি মূলত রাজনৈতিক কৌশল।
তাঁর মতে, জামায়াত যা করতে পারেনা, তা এনসিপির মাধ্যমে করে। এই বিষয়টি গণঅধিকার পরিষদ ও এনসিপি বেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে তার বিশ্লেষণ। তিনি আরও যোগ করেন, কিছু দিন আগে তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলম একটি পোস্টে বলেছিলেন, নতুন দল দরকার নেই—যদিও এতদিন এই দলনেতারা এমনি এমনি কাজ করছে। এর মাধ্যমে বোঝা যায়, এনসিপি বিভিন্ন রাজনৈতিক প্রক্সি দলের দিকে ঝুঁকছে এবং তার নিজস্ব রাজনৈতিক স্ট্র্যাটেজি তৈরির অন্য কোন পথ নেই।
সরকারের সমালোচনা করে রাশেদ খান বলেন, ১৪ মাসের বেশি সময়ে সরকারের পর্যাপ্ত প্রস্তুতি নেই। হাতে এখনও মাত্র ৪ মাস সময়, তার মধ্যে দুটো নির্বাচন আয়োজনের ক্ষমতা কি সরকারের থাকবে? বরং নভেম্বরের গণভোটের ইস্যু তুলে ফেব্রুয়ারি সরকার পলিটিক্যাল ষড়যন্ত্র শুরু করেছে, যা মূলত আওয়ামীলীগের স্বার্থে কাজ করছে।
সবশেষে, তিনি বলেন, ঐকমত্য কমিশন যেহেতু সরকারের নোট অব ডিসেন্ট ছাড়াই সুপারিশ করেছে, সেক্ষেত্রে ৯ মাসের রাষ্ট্রীয় ব্যয় কেন? ৮৪টি বিষয়ে ৯ মাসের মধ্যেই গণভোট আয়োজন করা সম্ভব ছিল। তিনি উল্লেখ করেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ও ঐকমত্য কমিশন জামায়াত ও এনসিপি ছাড়া অন্যান্য সব দলের সঙ্গে প্রতারণা করেছে, যা দেশের বিরুদ্ধে গভীর ষড়যন্ত্র চালানো হচ্ছে। এর ফলে এক-এগারো প্লটের পুনরাবৃত্তির শঙ্কা তৈরি হয়েছে।

