জুলাই সনদ বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া ও গণভোটের সময় নির্ধারণের বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে তীব্র বিরোধ এবং মতানৈক্য স্পষ্টভাবে দেখা যাচ্ছে। আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল এ ব্যাপারে বলেছেন, এই বিভক্তি হতাশাজনক ও উদ্বেগজনক। তিনি বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকের পর সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন।
তিনি উল্লেখ করেন, গণভোটের বিষয়টি নিয়ে সরকারের মূল চিন্তাভাবনা ও আলোচনা ইতিমধ্যে দীর্ঘদিন ধরেই চলছে। কিন্তু প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে চলমান মতবিরোধের কারণে এখন পরিস্থিতি জটিল হয়ে পড়েছে। বিশেষ করে, কিভাবে জুলাই সংক্রান্ত সনদ পাস হবে, তা নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে মতৈক্য তৈরি হচ্ছে না। কেউ বলছেন, সংবিধান সংশোধনের জন্য এই সনদ পাসের পদ্ধতিই একটি বড় চ্যালেঞ্জ।
অপরদিকে, এই সনদ পাসের জন্য গণভোটের তারিখ নির্ধারণ নিয়েও সংশয় ও দ্বন্দ্ব বিরাজ করছে। রাজনৈতিক দলগুলোর এই মতবিরোধ এতটাই তীব্র যে, পরিস্থিতি এখন মুখোমুখি দ্বৈরথের পরিস্থিতিতে পৌঁছেছে। আসিফ নজরুল বলেন, রাজনৈতিক দলগুলো একে অপরের বিরুদ্ধে এতটাই দৃঢ় অবস্থান নেয়া এবং উত্তেজনাপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে যে, সরকারের জন্য সিদ্ধান্ত নেওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে।
তিনি আরও জানান, আলোচনার সাফল্য না থাকায় এখন সরকার কীভাবে এগিয়ে যাবে, তা নিয়ে চিন্তা ভাবনাও শুরু হয়েছে। বৈঠকে এই বিষয়গুলো নিয়ে সাধারণ আলোচনা হয়েছে বলে তিনি জানান। আলোচনায় দেখা গেছে, দুইটি বিকল্প উপস্থাপন করা হয়েছে: এক, জুলাই সনদ বাস্তবায়ন ও গণভোটের মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নেওয়া। আর দুই, এই দায়িত্ব বর্তমান নির্বাচিত সংসদের হাতে দেওয়া। এই দুই বিকল্পের মধ্যে কোনটা গ্রহণযোগ্য হবে, তা-ই মূল হয়ে দাঁড়িয়েছে এবং এতে দলের মধ্যে মতভেদের হারRECসের গতি বাড়ছে।
বিশেষ করে, গণভোটের আয়োজনের দিনক্ষণ নির্ধারণ নিয়ে সহমত না হওয়ায় পরিস্থিতি আরো জটিল হয়ে পড়েছে। আসিফ নজরুল জানিয়ে দেন যে, দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে হবে, যা প্রধান উপদেষ্টার নেতৃত্বে নেওয়া হবে। তিনি স্পষ্ট করেন, এই সিদ্ধান্ত সরকার বা কোনো একক দল নয়, বরং প্রধান উপদেষ্টার সিদ্ধান্ত হবে, এবং প্রয়োজন হলে পরামর্শ নেওয়া হবে। তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন, খুব শিগগিরই সফল সিদ্ধান্ত নেওয়া যাবে।
অন্যদিকে, কোনো দল যদি এককভাবে তাদের অবস্থানকে চাপিয়ে দেয় বা আলটিমেটাম দেয়, সেটি ভাবিয়ে তোলে যে, দলীয় বিভক্তি এখনও কাটিয়ে উঠা যাচ্ছে না। তিনি বলেন, এই অনৈক্য এবং দলীয় বিভেদের কারণে দেশের সামগ্রিক পরিস্থিতি দুর্বোধ্য হয়ে উঠতে পারে।
অতঃপর, আসিফ নজরুল জানিয়েছেন, কমিশনের সুপারিশ অনুমোদন ও বাস্তবায়নের ব্যাপারে সরকারের স্বাধীনতা আছে। তবে এর জন্য সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে প্রধান উপদেষ্টার নেতৃত্বে। সবশেষে, তিনি বলেন, সরকার এই সিদ্ধান্তগুলো খুব দ্রুত বাস্তবায়ন করবে, এবং এর জন্য পর্যাপ্ত সময় ও আলোচনা চলছে।
 
			 
		    
