মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প স্পষ্ট করেছেন যে, তিনি ভেনেজুয়েলায় কোনো হামলার পরিকল্পনা করছেন না। তবে এই মুখরোচক বক্তব্যটি তাঁর অগাস্টে দেওয়া মন্তব্যের সঙ্গে বিপরীত বলে মনে হচ্ছে, যেখানে তিনি হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন যে, পরিস্থিতি উন্নত না হলে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। অপরদিকে, এখনো অঞ্চলে মার্কিন সামরিক শক্তির উপস্থিতি দৃশ্যমান। আল জাজিরার খবরে জানানো হয়েছে, ক্যারিবীয় অঞ্চলে মার্কিন যুদ্ধবিমান, যুদ্ধজাহাজ ও হাজার হাজার সেনা মোতায়েন রয়েছে। বলা হচ্ছে, বিশ্বের বৃহত্তম যুদ্ধজাহাজ—বিমানবাহী রনতরী ইউএসএস জেরাল্ড আর ফোর্ড ভেনেজুয়েলার উপকূলে এগিয়ে আসছে।
শুক্রবার, ৩১ অক্টোবর, এয়ার ফোর্স ওয়ানে মার্কিন প্রেসিডেন্টের ভেনেজুয়েলার অভ্যন্তরে হামলার পরিকল্পনা ছিল বলে প্রতিবেদনের জবাবে ট্রাম্প স্পষ্টতই বলেছেন, “না,”—এই প্রশ্নের জবাবে তিনি একপ্রকার প্রত্যাখ্যান করেছেন। পাশাপাশি, মিয়ামি হেরাল্ডে প্রকাশিত এক নিবন্ধে বলা হয়েছিল যে মার্কিন বাহিনী ভেনেজুয়েলায় হামলার জন্য প্রস্তুত। এর প্রতিক্রিয়ায় মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও একইভাবে স্পষ্ট করেছেন, ‘‘আমরা হামলার পরিকল্পনা করি না।’’
আল জাজিরা মনে করছে, ট্রাম্পের এ ধরনের সংক্ষিপ্ত প্রতিক্রিয়া অক্টোবরের শুরুতে তার ভেনেজুয়েলা সম্পর্কিত মন্তব্যের সঙ্গে পুরোপুরি মিল নয়। গত সপ্তাহে ট্রাম্প বলেছিলেন, ‘‘আমরা যুদ্ধ ঘোষণা করব না, তবে আমরা সেইসব মানুষকে হত্যা করব যারা আমাদের দেশে মাদক নিয়ে আসে।’’ এর মানে হলো, তিনি স্পষ্ট করেছেন, যুদ্ধের পক্ষে নয়, বরং মাদক ব্যবসার বিরুদ্ধে কঠোর।
অপরদিকে, সেপ্টেম্বরের শুরু থেকে মার্কিন সেনাবাহিনী ক্যারিবীয় ও প্রশান্ত মহাসাগরের এলাকায় ধারাবাহিকভাবে জাহাজে হামলা চালানো হয়, যেখানে কমপক্ষে ৬২ জন নিহত হন, ১৪টি নৌকা এবং একটি আধা-সাবমেরিন ধ্বংস হয়। মার্কিন প্রশাসন দাবি করছে, এই আক্রমণ মূলত মাদক চোরাচালান রোধে, তবে এখনো কোনও প্রমাণ দেয়নি তা।
বিশ্বের শীর্ষ মানবাধিকার সংস্থা, জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার ভলকার টার্ক এই হামলার নিন্দা জানিয়ে বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের এ ধরনের আক্রমণ অগ্রহণযোগ্য। তিনি বলেন, “যুক্তরাষ্ট্রকে অবশ্যই এই হামলা বন্ধ করতে হবে এবং ধরা পড়া মানুষের বিচারবিহীন হত্যা রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে।”

