বরিশালে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ এক সাক্ষাৎকারে স্পষ্ট করে বলেছেন, জুলাই সনদের বাস্তবায়ন ও কার্যকরী প্রক্রিয়ার জন্য আদেশ জারি করা জরুরি, এবং সেই আদেশটাই ড. মুহাম্মদ ইউনূসকেই দিতে হবে। যদি এই আদেশ চুপ্পুর কাছ থেকে নিতে হয়, তাহলে সেটি বলিষ্ঠ বিক্ষোভের জন্য শেষ প্রহর হিসেবে বিবেচিত হবে।
রোববার (০২ নভেম্বর) বিকেলে বরিশাল জেলা শিল্পকলা একাডেমির মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) জেলা ও মহানগর সম্মেলন ও সমন্বয় সভায় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, যারা হেড অফিসের ফ্যাসিস্ট আচরণ দেখাচ্ছে, তাদের কাছ থেকে যদি অভ্যুত্থানের স্বীকৃতি নিতে হয়, তাহলে সেটি লজ্জার বিষয় হবে। আমাদের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো, আমরা তিনশটি আসনে সাংগঠনিক শক্তি বিকাশের কাজ করে যাচ্ছি। এই এসকল নির্বাচনে আমাদের পলিসি ও দৃষ্টিভঙ্গি সুসংগঠিত করতে হবে।
অন্য রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যোগ দেওয়ার বিষয়ে তিনি উল্লেখ করেন, আমাদের মূল দিক হলো কারা সংস্কার করতে আগ্রহী, সেটাই মুখ্য। আমাদের অবস্থান স্পষ্ট ও মৌলিক।
ভোলার ঘটনাগুলোর প্রসঙ্গে বলেন, এসব ঘটনা ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে, এবং ভবিষ্যতেও এর পুনরাবৃত্তি ঘটবে। এই ধরনের পরিস্থিতি যেন দীর্ঘমেয়াদি না হয়, সেজন্য কঠিন বাস্তবায়ন ও কাঠামোগত পরিবর্তনের মাধ্যমে গুণগতভাবে এগিয়ে যেতে হবে। আমাদের লক্ষ্য রয়েছে, ভবিষ্যতের নির্বাচনে সবাই সুবিধাজনক, অবাধ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন নিশ্চিত করা।
তিনি আরও বলেন, জনগণ ভোট দিয়ে যে কাউকে ক্ষমতায় আনবে, সেই ব্যক্তি দেশের স্তম্ভিত চালক হবেন। যারা ভোটের জন্য বিশ্বাসযোগ্য সুষ্ঠু পরিবেশ তৈরি করবে, তারা থাকবেন মূল কেন্দ্রীয় শক্তি। আমাদের আরেকটি দাবি হলো, নির্বাচনী ব্যবস্থায় কোনও প্রভাব বা হস্তক্ষেপ যেন না হয়।
নির্বাচন কমিশনের কার্যক্রম নিয়েও তার উদ্বেগ প্রকাশ করে তিনি বলেন, তাদের সিদ্ধান্তে কোনও রূপরেখা নেই। প্রতীক দেওয়ার সময় লিগ্যাল নিয়ম অবশ্যই থাকা উচিত। নির্বাচন কমিশনের স্বেচ্ছাচারী আচরণের বিষয়ে আমরা উদ্বিগ্ন। শাপলা কেন দেবে না বা কেন দিবে, এই প্রশ্নের কোনও যুক্তিসঙ্গত ব্যাখ্যা তারা দিতে পারেনি। সুষ্ঠু নির্বাচন না হলে, ব্যালট বক্সে চুরি বা কারচুপির ঘটনাও ঘটতে পারে, তখন যদি তারা ব্যাখ্যা চায়, তারা দেবে না। এর বিরুদ্ধে আমাদের লড়াই অব্যাহত থাকবে।
প্রশিক্ষিত এ সমন্বয় সভার প্রধান বক্তা ছিলেন এনসিপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আদীব। সভাপতিত্ব করেন বরিশাল জেলার সমন্বয়কারী আবু সাঈদ মুসা। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মুজাহিদুল ইসলাম শাহিন, দক্ষিণাঞ্চলের যুগ্ম মুখ্য সংগঠক ডা. মাহমুদা আলম মিতু, যুগ্ম সদস্য সচিব ফয়জাল মাহমুদ শান্ত, আরিফুর রহমান তুহিন, দক্ষিণাঞ্চলের সংগঠক আসাদ বিন রনি ও কেন্দ্রীয় সদস্য রফিকুল ইসলাম কনক।
তার আগে, রোববার সকালেই ভোলায় জেলা এনসিপির সমন্বয় সভায় প্রধান অতিথির হিসাবে উপস্থিত ছিলেন হাসনাত আবদুল্লাহ সহ কেন্দ্রীয় নেতারা। সেখানে দলের নেতাকর্মীদের বিভিন্ন দিকনির্দেশনা দেন তিনি।

