ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথম দুটি ম্যাচ হেরে ইতিমধ্যেই সিরিজ হাতছাড়া করে বসে ছিল বাংলাদেশ। তাই তৃতীয় ম্যাচটি ছিল তাদের জন্য মানসিকভাবে জয় বা পরাজয় নির্ধারণের গুরুত্বপূর্ণ লড়াই। কিন্তু এই ম্যাচেও একরকম ব্যর্থতা যুক্ত হলো বাংলাদেশের জন্য। ব্যাটিং ও বোলিং উভয় বিভাগেই তারা বিশাল চাপের মধ্যে ছিল। অন্ধকারের দিকে এগিয়ে যায় বাংলাদেশের মূল দল। ওয়েস্ট ইন্ডিজ ৫ উইকেট জয় নিয়ে সিরিজে হোয়াইটওয়াশের অপরাধে অনায়াসে জিতে যায়। টেস্টের হারের মতো এই সিরিজেও বাংলাদেশের জন্য হতাশায় ভরা এক দৃশ্য দেখা গেল চট্টগ্রামের মাঠে। টস জিতে আগে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে সবকটি উইকেট হারিয়ে ১৫১ রান করে বাংলাদেশ। দলের হয় সর্বোচ্চ ৮৯ রান করেন তানজিদ তামিম। জবাবে ১৬ ওভার ৫ বল খেলে ৫ উইকেট হারিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজের জয়ের স্বপ্ন পূরণ হয় এবং তারা সহজে ৫ উইকেটের জয় নিশ্চিত করে।
বোলিংয়ে শুরুটা ভালোই করেছিলেন শেখ মেহেদি হাসান এবং শরিফুল ইসলাম। তৃতীয় ওভারে আলিক আথানজেকেকে ফিরিয়ে প্রথম ব্রেকথ্রু দেন মেহেদি। পরবর্তীতে ব্রেন্ডন কিংকে দ্রুত ফেরান নাসুম আহমেদ। কিং ৭ বলে ৮ রান করেন।
দুই উইকেট দ্রুত হারালেও ক্যারিবীয় ব্যাটার আমির জাঙ্গু সক্রিয় থাকেন। আক্রমণাত্মক ব্যাটিং করে ২৩ বলে ৩৪ রান করেন। বাংলাদেশ র ৫২ রানে ৩ উইকেট নিয়েও পরিস্থিতি সামাল দেয়ার চেষ্টা করছিল। তবে চতুর্থ উইকেট জুটিতে রোস্টন চেজ ও আকিম অগাস্টে তাদের জয় থেকে দূরে সরিয়ে দেন। দুজনেই পেয়েছেন ব্যক্তিগত ফিফটি। চেজ ৫০ রানে ফিরে গেলেও জেস অগাস্টে ২৫ বলে ৫০ রান করে দলের এগিয়ে যাওয়ার পথ সহজ করে দেন।
ফিফটি করে দ্রুতই অন্য ব্যাটাররা ফিরে গেলেও তখন ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ সম্পূর্ণই তাদের হাতে চলে আসে। বাকি কাজ সহজে সম্পন্ন করে নেয় ওয়েস্ট ইন্ডিজের পাওয়েল ও মোতি, যা বাংলাদেশকে বিশাল এক ব্যবধানে পরাজিত করে।
অন্যদিকে, বাংলাদেশের ব্যাটাররা শুরুতেই সতর্ক থাকলেও দ্রুতই আক্রমণাত্মক মেজাজ দেখাতে শুরু করে। তানজিদ তামিম ও পারভেজ ইমন প্রথমে একটু দেখেশুনে খেললেও ইমন ১০ বলে ৯ রান করে আউট হন। এরপর তামিম দেখান দুর্দান্ত ব্যাটিং। তিনে নামার প্রথম বলেই বাউন্ডারি হাঁকান। তবে খুব বেশি সময় টিকতে পারেননি। ১০ বলে ৯ রান করে আউট হন।
লিটন দাস একপ্রান্তে আক্রমণ চালিয়ে যান। প্রথম বলেই বাউন্ডারি মারেন, কিন্তু পরেরটি বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি। ৯ বলে ৬ রান করেই আউট হন। এরপর সাইফ হাসান চার নম্বর খেলতে নামলে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন, যদিও ধীরগতির ব্যাটিং করেন। ২২ বলে ২৩ রান করে আউট হন।
তামিমের দুর্দান্ত শুরুতে শুরু হয় তার ব্যক্তিগত ফিফটি। ৩৬ বলের মধ্যে তিনি ৬২ বলে ৮৯ রান করে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে নিজের ক্যারিয়ার সেরা ইনিংস খেলে গেছেন। তবে শেষ ওভারে আউট হওয়ার আগ পর্যন্ত তিনি দলের মূল চালিকা শক্তি ছিলেন। অন্য ব্যাটাররা প্রায় সবাই অক্ষম থাকলেও তামিমের মহানো দলের জন্য ছিল প্রেরণা। তবে দলের অন্যান্য ব্যাটাররা সুবিধা করতে না পেরে অলআউট হয় বাংলাদেশ ১৫১ রানে, এবং এইভাবে সিরিজে হোয়াইটওয়াশের লজ্জা নিতে হয়।

