নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা পুনঃপ্রতিষ্ঠা করতে আপিল বিভাগে শুনানি শেষ করেছে বিএনপি। এই শুনানিতে বিএনপি সংবিধানে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অন্তর্ভুক্তি ফিরে আনার জন্য আকুল আবেদন জানিয়েছে। দলের পক্ষ থেকে এই শুনানি পরিচালনা করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল। তিনি উল্লেখ করেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকারকে বাতিল করার ফলে দেশের ভাগ্য অন্ধকারে নিমজ্জিত হয়েছে, কারণ এটি সংবিধানের গুরুত্বপূর্ণ অংশ। বুধবার (৫ নভেম্বর) সকাল ৯টা ৫০ মিনিটে প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে সাতজন বিচারপতির পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে এই আপিলের অষ্টম দিনের শুনানি অনুষ্ঠিত হচ্ছে। বিএনপির পক্ষে শুনানি করছেন ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল, এবং অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে যুক্তি দেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল অনীক আর হক। এর আগে ২ নভেম্বর, ২৯ অক্টোবর, ২৮ অক্টোবর, ২৩ অক্টোবর, ও ২২ অক্টোবর তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা ফেরানোর জন্য বিভিন্ন সময় এই আপিলের টানা শুনানি চলেছে। ২১ অক্টোবর এই বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে আবারো শুনানি শুরু হয়। উল্লেখ্য, এর আগে ২৭ আগস্ট ২০০৪ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিলের রায় পুনর্বিবেচনার জন্য আবেদন করা হয়, যার পরিপ্রেক্ষিতে ২০০৫ সালে আপিলের অনুমতি দেওয়া হয়। সংবিধানে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা অন্তর্ভুক্ত করে ১৯৯৬ সালে ত্রয়োদশ সংশোধনী আনা হয়। এই সংশোধনী নিয়ে ১৯৯৮ সালে দুটি সংবিধানবিরোধী রায় হয়, যা পরে ২০০৪ সালে হাইকোর্টে রায় খারিজ করে দেয়। এরপর ২০১১ সালে এই রায় বাতিল করে নতুন করে সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী প্রত্যাহার করা হয়। ২০১৪ সালে সরকার পরিবর্তনের পর সেই রায় পুনর্বিবেচনার জন্য বিভিন্ন আবেদন জমা পড়ে। সম্প্রতি, বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও জামায়াতের সাংগঠনিক নেতা মিয়া গোলাম পরওয়ারসহ নেতৃবৃন্দ সংবিধানে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রক্রিয়া ফিরিয়ে আনার জন্য মূলক আবেদন করেন। এই বিষয়ে এখন আপিল বিভাগে শুনানি চলছে, যেখানে দেশের ভবিষ্যৎ গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার দিকনির্দেশনা নির্ধারিত হবে।

