ভারতের জম্মু ও কাশ্মীরের শ্রীনगर সংলগ্ন নওগাম থানায় ভয়াবহ একটি বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে, যেখানে অন্তত নয়জন নিহত এবং ২৯ জন আহত হন। এই বিস্ফোরণটি শুক্রবার (১৪ নভেম্বর) মধ্যরাতে ঘটে, তখন পুলিশ জব্দ করা বিপুল পরিমাণ রাসায়নিক substance নিয়ে পরীক্ষা করছিলেন। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি এই খবর নিশ্চিত করেছে।
প্রধানত নিহত ব্যক্তিরা পুলিশ সদস্য এবং ফরেনসিক বিশ্লেষকদের তালিকায় রয়েছেন, যারা ওই বিস্ফোরকগুলো পরীক্ষা করছিলেন। এছাড়া শ্রীনগর প্রশাসনের দুই কর্মকর্তা ও নিরাপত্তা বাহিনীর কর্মীরাও পৌঁছে যান ঘটনাস্থলে এবং পুরো এলাকা ঘিরে फেলে।
প্রথমে জানা যায়, বিস্ফোরণটি হিরিয়ানার ফরিদাবাদ থেকে আনা বিস্ফোরক সামগ্রী যাচাইয়ের সময় ঘটে। এটিকে সন্ত্রাসবাদের সঙ্গে সম্পর্কিত বলে ধারণা করা হচ্ছে। আহতদের দ্রুত হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে, যেখানে তাদের চিকিৎসা চলছে।
নওগাম পুলিশ এই ঘটনায় জইশ-ই-মোহাম্মদ সংক্রান্ত পোস্টার ও যোগাযোগের খোঁজ পাওয়ার জন্য তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছে। এসব পোস্টারে ভয়াবহের হুমকি ও পরিকল্পনা প্রকাশিত হয়, যেখানে উচ্চশিক্ষিত পেশাজীবীদের মাধ্যমে সন্ত্রাসী নেটওয়ার্কের গঠন প্রমাণিত হয়। ধরা পড়ে বেশ কিছু বিস্ফোরক ও ‘টেরর ডাক্তার’ গ্রেফতার হয়েছে।
অক্টোবরের শেষের দিকে গ্রেফতার হওয়া আদিল আহমদের একটি পোস্টার সাঁটানোর দৃশ্যও তদন্তে উঠে আসে। এই পোস্টারে কাশ্মীরে বিদেশি হামলার পরিকল্পনা ও হুমকি প্রকাশ পায়। তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে উদ্ধার হয় বড় ধরনের বিস্ফোরক ও বিপুল পরিমাণ অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট। এরপর আরও কয়েকজন চিকিৎসককেও গ্রেফতার করা হয়।
বিস্ফোরণের অনেক তদন্তের পরে জানা যায়, এই সন্ত্রাসী গোষ্ঠীটি একটি ‘হোয়াইট-কলার টেরর ইকোসিস্টেম’ এর অংশ, যেখানে বিদেশি হ্যান্ডলার ও স্থানীয় প্রভাবশালী পেশাজীবীরা সক্রিয়ভাবে জড়িত। পুলিশ সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে আদিলের শনাক্ত করে, যিনি গত বছরের অক্টোবর পর্যন্ত সরকারি হাসপাতালে কর্মরত ছিলেন। তার লকার থেকে একটি অ্যাসল্ট রাইফেলও উদ্ধার হয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে অন্য চিকিৎসকের নাম উত্থাপিত হয়—মুজাম্মিল শাকিল, যিনি ফরিদাবাদের আল-ফালাহ মেডিক্যাল কলেজে কাজ করতেন। তার অনুসন্ধানে পাওয়া যায়, জম্মু-কাশ্মীর ও হরিয়ানায় ব্যাপক পরিমাণ বিস্ফোরক ও বিস্ফোরক সামগ্রী সংগ্রহ করা হয়েছে। আরও তদন্তে উঠে আসে, শাহীন সাঈদ নামের আরেক চিকিৎসককে।
তার কয়েক ঘণ্টা পরই দিল্লির লালকেল্লার কাছে একটি গাড়িতে ভয়াবহ বিস্ফোরণ ঘটে, যেখানে ১৩ জন নিহত এবং ২০ জনের বেশি আহত হন। পাশের গাড়িগুলিও ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তদন্ত সূত্র জানায়, বিস্ফোরণের আগে উমার নবি নামে একজন চালককে সন্দেহ করা হচ্ছে, যিনি ওই গাড়ি চালাচ্ছিলেন।
এনআইএ’র এক সূত্র জানায়, এই বিস্ফোরণের প্রকৃতি ইঙ্গিত দেয় যে অন্য কেউ ইমপ্রোভাইজড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইসটি সংযোজনের ব্যাপারে দ্বিধায় পড়ে। তারা হয়তো আতঙ্কে বিক্ষিপ্ত হয় এবং ঠিকমতো সক্রিয় পদক্ষেপ নিতে পারেনি। তদন্তকারীরা বলছেন, এই ঘটনার মধ্যে আন্তর্জাতিক চক্রান্ত ও বিপজ্জনক ষড়যন্ত্রের আলামত রয়েছে।

