আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে সরকারী প্রশাসন ও পুলিশের রদবদল নিয়ে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী গভীর সন্দেহ প্রকাশ করেছে। নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সঙ্গে সংলাপে অংশ নিয়ে দলটির প্রতিনিধিরা জানিয়েছেন, তফসিল ঘোষণার পর একদিনে সব জেলা প্রশাসক (ডিসি) ও পুলিশ সুপার (এসপি) একযোগে বদলি করতে হবে। তারা সুপারিশ করেছেন, নিরপেক্ষতা নিশ্চিতের জন্য সম্ভব হলে লটারির মাধ্যমে এই রদবদল পরিচালনা করা উচিত।
জামায়াতের নেতৃত্ব মনে করেন, সাম্প্রতিক সময়ে একের পর এক রদবদল যেন কোনো পরিকল্পনা বা চরিত্রবিহীন সিদ্ধান্ত নয়, বরং একটি মূল লক্ষ্য পূরণের জন্য কৌশলীভাবে করা হচ্ছে। তারা বলেন, যখন নির্বাচন কমিশন তফসিল ঘোষণার পর এসব বিষয়ে নিজেদের কর্তৃত্ব গ্রহণ করবে, তখন দলীয় প্রভাবমুক্ত নির্বাচন নিশ্চিত করতে প্রশাসনের বদল দ্রুত ও একযোগে করা দরকার।
বুধবার (১৯ নভেম্বর) ইসির সঙ্গে সংলাপে জামায়াতের নেতারা এ মত প্রকাশ করেন। তারা আরও মনে করেন, ভোটের কেন্দ্রগুলোতেও নিরাপত্তা জোরদারের জন্য সেনা মোতায়েনের দাবি তুলেছেন, যেখানে একাধিক সদস্য বা দলীয় প্রতিনিধিদের নিয়োজিত করা সুবিধাজনক হবে। এছাড়াও, তারা আচরণবিধি কঠোরকারী, প্রবাসীদের জন্য পোস্টাল ভোটের সুবিধা নিশ্চিত করার পাশাপাশি, অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে প্রশাসনের কার্যকর পদক্ষেপের আহ্বান জানান।
জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এএইচএম হামিদুর রহমান আযাদ, ইসির প্রস্তুতি ও আন্তরিকতার প্রশংসা করলেও বলেছেন, স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন নিশ্চিত করতে হলে এক্ষেত্রে সাহসী পদক্ষেপও দরকার। তিনি অভিযোগ করেন, বর্তমান সরকারের পরিবর্তনের পরও প্রভাবশালী আমলাতন্ত্রের মধ্যে মৌলিক পরিবর্তন হয়নি, এবং দলীয় মনোভাব সম্পন্ন কর্মকর্তাদের উপস্থিতি অব্যাহত রয়েছে।
নেতা বলেন, গোয়েন্দা রিপোর্টের ভিত্তিতে নিয়োগ-বদলি হচ্ছে, যেখানে জামায়াতের সঙ্গে সম্পৃক্ত লোকজনকে নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে, যা নির্বাচন প্রক্রিয়াকে প্রশ্নবিদ্ধ করে তোলে। তিনি দাবি করেন, ডিসি, এসপি, ওসি ও অন্যান্য নির্বাচনী কর্মকর্তাদের নিয়োগ লটারির মাধ্যমে নিশ্চিত করতে হবে যাতে সব পক্ষের জন্য সমান সুযোগ সৃষ্টি হয়।
সংলাপে আরও গুরুত্ব দিয়ে বলে, সরকারের সঙ্গে সমন্বয় করে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার এবং নির্বাচনের জন্য সমতাসূচক পরিবেশ তৈরি করতে হবে। পাশাপাশি, ভোটকেন্দ্রে সিসি ক্যামেরার আধুনিক ব্যবস্থাপনা ও অপ্রয়োজনীয় ব্যালট পেপার নিয়ে সম্ভাব্য অভিযোগ এড়াতে সতর্ক থাকতে হবে। তিনি উল্লেখ করেন, চাইলে ভোটের ট্রান্সপারেন্সি নিশ্চিত করতে অতিরিক্ত সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।

