সিরিজের শেষ দিন ভারতের জন্য ছিল কঠিন চ্যালেঞ্জ। ৫৪৯ রানের লক্ষ্য নিয়ে তারা ব্যাট করছিল। প্রথম কয়েক ঘণ্টায় আস্থা রেখে ড্র করার ভাবনা ছিল, তবে দিন শুরুতেই তারা বিপদে পড়ে যায়। খেলা শুরু হয় যখন ভারত ২ উইকেটে ২৭ রান করে, তখনই হয়ে যায় জোড়া ধাক্কা। সিমন হারমার প্রথম সেশনের মাঝামাঝি সময়ে কুলদীপ যাদব ও ধ্রুব জুরেলকে দ্রুত আউট করেন। এরপর ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক ঋশাভ পান্তকেও মাঠ ছাড়া হয়। ভারত ৫৮ রানে ৫ উইকেট হারায়, এমন পরিস্থিতিতে তারা কোণঠাসা হয়ে পড়ে। তবে সাই সুদর্শন ও রবীন্দ্র জাদেজার কঠোর প্রতিরোধ ভারতকে আবার ঘুরে দাঁড়ানোর আশা দেখায়। সুদর্শন ১৩৮ বলে ১৪ রানে অপরাজিত থাকেন, আর জাদেজা ৪০ বলে ২৩ রান নিয়ে টিকে থাকেন। চা-বিরতিতে ফিরে দ্বিতীয় সেশনে, দক্ষিণ আফ্রিকার পঞ্চম বলেই বড় বিপর্যয় ঘটে। সেনুরান মুথুসারামির বলে সুদর্শন ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান। ১৩৯ বলে ১৪ রানে তিনি আউট হন। এরপর জাদেজার সঙ্গে ৯৯ বলের জুটি গড়ে ৩৭ রান যোগ করেন। এরপর ওয়াশিংটন সুন্দর ও জাদেজা ম্যাচ বাঁচানোর জন্য লড়ছিলেন। ওয়াশিংটন ৭৭ বলে ৩৫ রান করে মারক্রামের বলে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান, আর তার ক্যাচ নিয়ে বিশ্ব রেকর্ড গড়েন দক্ষিণ আফ্রিকার ফিল্ডার। মারক্রাম এক টেস্টে সর্বোচ্চ ৯ ক্যাচ নিয়ে ইতিহাসে নাম লেখান, যা আগে ছিল আজিঙ্কা রাহানের ২০১৫ সালের রেকর্ড। ওই ক্যাচে মারক্রাম একজন দ্বাদশ খেলোয়াড়ের মতো প্রমাণ দেন। এরপর, পরের ওভারেই নিতিশ রেড্ডি কামিয়ে ফেলেন। জাদেজা ও সিরাজের জোড়া শিকার নিয়ে দলটি শেষ হয়। সিরাজ ৫৪ রানে ২ উইকেট নিয়েছেন, হারমার ২৩ ওভার বল করে ৩৭ রান দিয়ে ছয় উইকেট। এই সিরিজে তিনি সর্বোচ্চ ১৭ উইকেট সংগ্রহ করেন এবং ম্যাচের সেরা খেলোয়াড় হন। অন্যদিকে, জানসেন ব্যাট ও বল—দুই বিভাগেই অসাধারণ পারফরমেন্স করেন। প্রথম ইনিংসে ৯৩ রান করেন এবং ভারতের প্রথম ইনিংসের মধ্যে ৬ উইকেট শিকার করেন। মোট দুই ইনিংসে ছয় উইকেট নিয়ে সিরিজের সেরা খেলোয়াড়ের মর্যাদা অর্জন করেন। এই ঐতিহাসিক জয়ের ফলস্বরূপ, দক্ষিণ আফ্রিকা শুধু সিরিজটি জেতেনি, নতুন এক ইতিহাস সৃষ্টি করেছে।

