বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, শেখ হাসিনা ও এরশাদ একই চরিত্রের ব্যক্তি। তিনি এই মন্তব্য করেছেন বৃহস্পতিদিন (২৭ নভেম্বর) রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে একটি আলোচনা সভায়। রুহুল কবির রিজভী উল্লেখ করেন, বর্তমানে দেশের বিভিন্ন স্থানে ভূত যেন উঠেছে, আর তার নাম রাম। তিনি বলেন, জাতীয় পার্টি এখন বলছে যে মত প্রকাশের স্বাধীনতা নেই। এরশাদ শাসনামলে তারা আওয়ামী লীগের সহযোগী ছিল এবং আঁতাত করেছিল। যদি সেই সময় তারা দলটির সঙ্গে অঙ্গীকার না করতেন, তাহলে হয়তো এখনই গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনাটা সহজ হয়ে যেত। ১৯৯০-এর দশকেও এরশাদবিরোধী আন্দোলনে একই পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হয়েছিল। তিনি বলেন, এরশাদ ও শেখ হাসিনা একই চরিত্রের মানুষ, যারা গণতন্ত্রকে আঘাত করেছেন। এরশাদ ব্যাংক লুট করে গেছেন, আর শেখ হাসিনা তার রূপে গণতন্ত্রের ক্ষত সৃষ্টি করেছেন। রিজভী আরও জানান, আমাদের রাজনৈতিক জীবনে নানা ধরনের নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছে। বেগম জিয়াকে বিশেষ করে গ্রেপ্তার করা হয়, যা অত্যন্ত দুঃখজনক। শেখ হাসিনার অবস্হা ছিল তীব্র, যা কৃত্রিমভাবে তৈরি করা। তিনি অপপ্রচার চালিয়ে তাঁর খাবার ও ওষুধের মাধ্যমে বেগম জিয়াকে অসুস্থ করার চেষ্টা করেছেন। এরশাদ ও শেখ হাসিনা দুজনেরই বিরুদ্ধে নানা মামলায় গত ২১ বছর যাবৎ সাজা দেয়া হয়েছে। বর্তমানে সরকারের মাধ্যমে বিচার প্রক্রিয়া চললেও তিনি বলেন, আসলে এসবের পেছনে শেখ হাসিনা নিজেই ছিল। রাজবন্দিরা এখন গুম-খুনের শিকার হচ্ছে না, বলে তিনি উল্লেখ করেন, কারণ এখন কোনো রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ নেই সরকারে। আগে যা হয়েছিল, তাতে কোর্ট নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছিল। এখন সবকিছু বিচারবহির্ভূত। রাজনীতি মুক্ত বলে দাবি করলেও, কিছু তথাকথিত বুদ্ধিজীবী বলছেন যে সবকিছু একইভাবে চলছে। কিন্তু প্রশ্ন হলো, বর্তমানে কে এই সব কার্যক্রম পরিচালনা করছে? সবই শেখ হাসিনার তৈরি ট্রাইব্যুনাল ও বিচারব্যবস্থার মাধ্যমে। তিনি বলেন, দেশের সাধারণ মানুষ এখন আর গুম-খুনে অনুভূত হচ্ছে না, কারণ কোনো হস্তক্ষেপ নেই। তবে যারা নিজের দেশের নিজস্ব সন্তান, ছাত্র ও শ্রমিক হত্যা করে — তাদের বিচার হবে অবশ্যম্ভাবী। পাপ কাউকে ছাড়ে না, তা হোক শোষক বা শোষিত। শেষমেশ, বিচারহীনতা এ দেশে থাকতেই পারে না। তিনি অবাক করে বলেন, ব্যাংকের টাকা ফেরত না দিলে, ঋণ নিয়ে খেলাপি হন, আবার নতুন করে ঋণ নেন—এটাই হলো শেখ হাসিনার অর্থনীতি।

