অপর এক আর্তনাদ নিয়ে বলা যায় যে, আরও ৩৯ জন বাংলাদেশিকে দেশে ফিরিয়ে আনলো যুক্তরাষ্ট্র। এই ফিরে আসা কর্মীদের মধ্যে বেশিরভাগই নোয়াখালীর, মোট ২৬ জন। তারা শুক্রবার (২৮ নভেম্বর) ভোর সাড়ে ৫টার সময় একটি বিশেষ মার্কিন সামরিক ফ্লাইটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছান। বিমানবন্দরের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে দেশে ফেরত আসা এই কর্মীদের জন্য ব্র্যাকের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় পরিবহন সহায়তা ও জরুরি সেবা প্রদান করা হয়। ফেরত আসা কর্মীদের মধ্যে নোয়াখালীর পাশাপাশি কুমিল্লা, সিলেট, ফেনী ও লক্ষ্মীপুরের দুজন করে এবং চট্টগ্রাম, গাজীপুর, ঢাকা, মুন্সিগঞ্জ ও নরসিংদীর একজন করে রয়েছেন। উল্লেখ্য, এর আগে এই वर्ष মার্কিন প্রশাসন মোট ১৮৭ বাংলাদেশিকে ফেরত পাঠিয়েছে। এর মধ্যে সম্প্রতি, ৬ জুন একটি চার্টার্ড ফ্লাইটে ৪২ জন এবং মার্চ থেকে এপ্রিলের মধ্যে একাধিক ফ্লাইটে আরও ৩৪ জনকে ফিরিয়ে আনা হয়। এভাবে, ২০২৪ সালের শুরু থেকে আগস্ট মাস পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্র থেকে ফেরত পাঠানো বাংলাদেশির সংখ্যা এখন ২২০ ছাড়িয়েছে। ব্র্যাকের মাইগ্রেশন প্রোগ্রামের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এই ৩৯ জনের মধ্যে অন্তত ৩৪ জনজনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ বুরো (বিএমইটি) থেকে অনুমতি নিয়ে ব্রাজিলে গিয়েছিলেন। সে অবস্থায় তারা ব্রাজিল, তারপর মেক্সিকো হয়ে অবৈধভাবে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করেন। আর বাকিরা, দুই জন সরাসরি যুক্তরাষ্ট্রে পৌঁছান ও তিনজন দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে। এসব সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসের জন্য আবেদন করলে তাদের আইনি প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সিদ্ধান্তে তারা বাংলাদেশের ফিরিয়ে আনা হয়। ব্র্যাকের সহযোগী পরিচালক শরিফুল হাসান বলেন, সরকারি পক্ষ থেকে ব্রাজিলে বৈধভাবে কর্মী পাঠানোর অনুমতি দেওয়ার পর, তারা যদি সরাসরি যুক্তরাষ্ট্রে যেতেন তাহলে সেটি নিশ্চিত করার জন্য কি সতর্কতা বা কৌশল ছিল? এই যে, অনেকেই ৩০ থেকে ৩৫ লাখ টাকা খরচ করে বিদেশে গেলেন, কিন্তু শেষে শূন্য হাতে ফিরলেন—তাহলে তার দায় কার? এভাবে বৈধভাবে অবৈধ পথে যাওয়ার জন্য উৎসাহ দেওয়া খুবই দুঃখজনক এবং দায়িত্বহীনতা। যারা এজেন্সির মাধ্যমে তাদের পাঠায় এবং যারা এই অনুমোদন প্রক্রিয়ায় ছিল, তাদের জবাবদিহির আওতায় আনা উচিত। কয়েক হাজার কর্মী এভাবে ব্রাজিল গেছে। সরকারের উচিত হবে আগে সতর্ক হওয়া, যাতে ভবিষ্যতে এমন ঘটনা না ঘটে।

