অবিস্মরণীয় একটি দিন ৬ ডিসেম্বর, ১৯৯০ সালের এই দিনে রক্তাক্ত পিচ্ছিল পথে অবসান হয়েছিল স্বৈরশাসনের জাদুঘর। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এই দিনটিকে বাংলাদেশের গণতন্ত্র মুক্তির অবিস্মরণীয় দিন হিসেবে উল্লেখ করেছেন। তিনি শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) রাতে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এক পোস্টে বলেন, এই দিনটি বাংলাদেশের ইতিহাসে এক উল্লেখযোগ্য অধ্যায়।
তারেক রহমান লেখেন, ষোড়শ সংশোধনীকে বাতিল করে ১৯৮২ সালের ২৪ মার্চ ক্ষমতা দখলের মাধ্যমে এরশাদ সরকার গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে ধ্বংস করে একনায়কতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থা চালু করেছিলেন। সেই সময় তিনি রাষ্ট্রপতি বিচারপতি আব্দুস সাত্তারকে অস্ত্রের মুখে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দিয়ে গণতন্ত্রকে ইতিহাসের চুলচেরা অন্ধকারে ঠেলে দেন।
তিনি আরও বলেন, বাংলার একমাত্র বহুদলীয় গণতন্ত্রের মূল ভিত্তি নির্মাণ করেছিলেন স্বাধীনতার মহান ঘোষক শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান। কিন্তু হোসেইন মোহাম্মদ এরশাদ এই প্রতিষ্ঠানগুলোকে ধ্বংসের পায়রা উড়িয়ে গণতান্ত্রিক পথে বৈরি সূচনা করেন। দীর্ঘ নয় বছর ধরে দেশের নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া নিরলস সংগ্রাম চালিয়ে গড়েছেন দুর্বার গণ-আন্দোলন। এই আন্দোলনের ধারাবাহিকতায়, ৯০ সালের ৬ ডিসেম্বর ছাত্র-জনতার ঐক্যবদ্ধ শক্তিতে স্বৈরশাসককে পরাজিত করে গণতন্ত্র আবারো মুক্ত হয়।
তারেক রহমান বলেন, এ স্বাধীনতার চেতনা আবারও ধারণ করে, ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতা আবার একবার ফ্যাসিবাদী শক্তিকে পরাস্ত করে ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি ঘটিয়েছে। তিনি বলেন, ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ গণতন্ত্রের শত্রু হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে, এবং শেখ হাসিনার দুঃশাসনের অবসান ঘটিয়ে দেশের জন্য নতুন যুগের অঙ্গীকার করতে হবে।
তিনি আরও উল্লেখ করেন, শেখ হাসিনার দুঃশাসনের কারণে দেশের ‘গণতন্ত্রের মা’ বিএনপি নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার ওপর বিভিন্ন নিপীড়ন চালানো হয়েছে। বর্তমানে তিনি অসুস্থ, তার সুস্থতা কামনা করছেন সকল দেশবাসী। এই সংগ্রামে ঢেলে সাজানো হয়েছে দেশের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা। সেই সঙ্গে, লক্ষ লক্ষ নেতাকর্মীর ওপর নিপীড়ন চালানো হয়েছিল, দেশের প্রতিটি কোণ অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছিল।
স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে শহীদদের স্মরণ করে তারেক রহমান বলেন, আমার গভীর শ্রদ্ধা ওrochenা তাদের রুহের জন্য, যারা ১৯৮২ থেকে ১৯৯০ বছর মাটির মতো রক্তকালিমায় অঙ্গীকারবদ্ধ হয়ে গণতন্ত্রের জন্য জীবন উৎসর্গ করেছেন। তিনি এই দিনটিতে পারস্পরিক ঐক্য এবং গণতন্ত্রের প্রতিশ্রুতি পুনরায় ব্যক্ত করেন, যেন আর কখনো এই স্বৈরাচার ফের রাজত্ব করার সুযোগ না পায়।
উল্লেখ্য, আজ ৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশের দীর্ঘ প্রতীক্ষিত দিন, স্বৈরশাসকের পতনের স্মারক। ১৯৯০ সালের এ দিনে স্বৈরশাসক জেনারেল এরশাদ আনুষ্ঠানিকভাবে পদত্যাগ করেন। সেই সংগ্রামী গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে স্বৈরশাসন মুক্ত হয় এবং জনতার প্রেরণায় বাংলাদেশে নতুন প্রজন্মের জন্য গণতন্ত্রের আসন্ন সূচনা ঘটে।

