পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদ জেলার বেলডাঙায় বাবরি মসজিদের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানটি ঘিরে ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। এই ঐতিহাসিক কর্মসূচির উদ্যোক্তা হলো তৃণমূল কংগ্রেস থেকে বরখাস্ত এক বিধায়ক হুমায়ুন কবির। তিনি নিজেও শনিবার (৬ ডিসেম্বর) উপস্থিত থাকার কথা জানিয়েছেন।
স্থানীয় সূত্রের খবর, শুক্রবার বিকেল থেকেই বেলডাঙা থানায় অতিরিক্ত পুলিশ ও নিরাপত্তা বাহিনী মোতায়েন করা হয়। প্রশাসন এই ঘটনাকে অত্যন্ত সংবেদনশীল হিসেবে বিবেচনা করে সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নিয়েছে যাতে কোন অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে।
বেলডাঙার এই অনুষ্ঠানে অংশ নিতে উত্তর বারাসতের বাসিন্দা সাফিকুল ইসলামকে ইট মাথায় দিয়ে বহন করতে দেখা গেছে। তিনি জানান, এই ইটগুলো মসজিদ নির্মাণের কাজে ব্যবহার করা হবে। খবর অনুযায়ী, এই কর্মসূচিতে মোট প্রায় ২০ হাজার স্বেচ্ছাসেবক অংশগ্রহণ করবেন।
জনস্বার্থে উচ্চ আদালতের নির্দেশে পশ্চিমবঙ্গ সরকারকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে যে, এই অভিযান চালানোর সঙ্গে সম্পৃক্ত যে কোনও সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা નিবার জন্য সক্রিয় পদক্ষেপ নিতে হবে। কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি সুজয় পালের নেতৃত্বাধীন ডিভিশন বেঞ্চ রাজ্য সরকারকে কঠোর আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখার পাশাপাশি স্থানীয় বাসিন্দাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার নির্দেশ দিয়েছে।
এই ঘটনার কারণে রাজনৈতিক উত্তপ্ত পরিস্থিতি তৈরির আশঙ্কাও দেখা দিয়েছে। বৃহস্পতিবার তৃণমূল কংগ্রেস হুমায়ুন কবিরকে দল থেকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করে। শুক্রবার রাতে তাকে রেজিনগর থানায় কয়েক ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। এর আগে তিনি জানান, সমস্ত প্রস্তুতি পুরোপুরি চালু রয়েছে।
হুমায়ুন কবির বলেন, ‘প্রতিবেদন অনুযায়ী, অনুষ্ঠানস্থলে প্রায় ৩০,০০০ প্যাকেট বিরিয়ানি প্রস্তুত করা হচ্ছে। আমি আশ্বাস দিচ্ছি, এটি একটি শান্তিপূর্ণ, অরাজনৈতিক ও ধর্মীয় অনুষ্ঠান। এখানে কোনও বক্তৃতা, দলের পতাকা বা রাজনীতি হবে না। দুই ঘণ্টা ধরে কোরআন তিলাওয়াত হবে। এটি নতুন কোনও ঘটনা নয়।’
তিনি আরও উল্লেখ করেন যে, বিভিন্ন ধর্মীয় সংগঠনের সমর্থন এই কর্মসূচির পক্ষে রয়েছে। অন্যদিকে, তৃণমূল কংগ্রেস এই অনুষ্ঠানে নিজেদের কোনভাবেই জড়িত থাকার চেষ্টায় নেই। দলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ অভিযোগ করেন, রাজনৈতিক প্রতিপক্ষরা আসন্ন নির্বাচনের সুবিধার জন্য একছেৎ ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে।
এদিকে, বেলডাঙার স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে নিরাপত্তা জোরদার হওয়ার কারণে কিছুটা উদ্বেগ ও কৌতূহল সৃষ্টি হয়েছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে সবাইকে শান্তিপূর্ণভাবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে বলা হয়েছে, গুজব না ছড়ানোর এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীকে সহযোগিতা করার অনুরোধ জানানো হয়েছে।

