কুমিল্লার দেবীদ্বারে প্রসূতির মৃত্যুকে কেন্দ্র করে একটি বড় ধরনের অরাজকতা ও হামলার ঘটনা ঘটেছে। ‘আল মদিনা হাসপাতাল ও ট্রমা সেন্টারে’ দুর্বৃদ্ধরা হামলা চালিয়ে ভাঙচুর, লুটপাটের ঘটনা ঘটায়। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, এই ঘটনার ফলে মোট ৪৪ লাখ ৫৫ হাজার ১৪৯ টাকার ক্ষতি সাধিত হয়েছে।
সোমবার (৮ ডিসেম্বর) বিকেলে দেবীদ্বার মা-মনি হাসপাতালে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ তুলে ধরেন হাসপাতালের কো-চেয়ারম্যান মো. সুলতান আহাম্মদ মুন্সী। এ সময় লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন, সেখানে উপস্থিত ছিলেন দেবীদ্বার প্রাইভেট হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক মালিক সমিতির সভাপতি মো. তাজুল ইসলামসহ বিভিন্ন হাসপাতালের পরিচালক ও প্রতিনিধিরা।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, গত ৪ ডিসেম্বর রাতে লিজা আক্তার নামে একজন মুমূর্ষু প্রসূতিকে হাসপাতালে আনা হয়। ডেলিভারির পর তার শারীরিক অবস্থা দ্রুত খারাপ হওয়ায় তাকে কোয়ালিটিতে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয়। কিন্তু পথ্যেমধ্যে ওই প্রসূতির মৃত্যু হয়। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে রোগীর স্বজন ও স্থানীয় কিছু ব্যবসায়ী উত্তেজিত হয়ে পড়েন। তাদের উসকানিতে বাইরে থেকে কয়েকজন সন্ত্রাসী সন্ধ্যার দিকে হাসপাতালে প্রবেশ করে ভাঙচুর শুরু করেন। তারা বিভিন্ন কক্ষ, থাই গ্লাস, লোহাগেট, দরজা-জানালা, আসবাবপত্র ভাঙচুর করে প্রায় ৩৫ লাখ টাকার ক্ষতি করেন।
আরও অভিযোগ করা হয়, সন্ত্রাসীরা ক্যাশ কাউন্টারের ক্যাশভর্তি ফাইল ও নগদ টাকা ভেঙে ৩ লাখ ৯৫ হাজার ৩৪৯ টাকা লুট করে নেন। পাশাপাশি ল্যাপটপ, কম্পিউটার, থ্রিডি আলট্রাসনো মেশিন, এক্সরে মেশিন ও অন্যান্য প্যাথলজি সরঞ্জামসহ প্রায় ৪ লাখ ৬০ হাজার টাকার মালামাল নিয়ে যান। হামলায় দায়িত্বপ্রাপ্ত চিকিৎসক ও হাসপাতালের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মারধরও করা হয়।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, হামলার সময় তারা ৯৯৯ নম্বরে ফোন করলে ঘটনা জানতে পেরে দেবীদ্বার থানা পুলিশ ও সেনাবাহিনী দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ ঘটনায় থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে এবং ক্ষতিগ্রস্ত সিসি ক্যামেরার ফুটেজ পুলিশ কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
অভিযোগের ভিত্তিতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ দাবি করেছেন, হামলা ও লুটপাটের সঙ্গে জড়িতদের দ্রুত শনাক্ত ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানানো হয়েছে, যাতে ভবিষ্যতে এই ধরনের ঘটনা আবার না ঘটে।

