জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান সতর্ক করে বলেছেন, আমরা ইতোমধ্যে ঋণের ফাঁদে পড়ে গেছি। এ সত্যকে সত্যিই स्वीकार না করলে সামনে অগ্রসর হওয়া অত্যন্ত কঠিন হয়ে পড়বে। তিনি আরও জানান, কিছু বছর আগেও সরকারের কর-জিডিপি অনুপাত ছিল ১০ শতাংশের বেশি, কিন্তু বর্তমানে সেটা প্রায় ৭ শতাংশের ঘরে ঘোরাফেরা করছে। এর কারণ হলো, দেশের বিভিন্ন খাতে জিডিপির ভিত্তিতে রাজস্ব সংগ্রহের হার কমে আসছে। এর ফলে দেশের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি ব্যাহত হচ্ছে এবং ঋণের বোঝা দিন দিন বেড়ে চলেছে।
সেমিনারে এনবিআর চেয়ারম্যান আরও জানান, অন্তর্বর্তী সরকারের সময়ে দেশের দুটি ব্যাংক শ্রেণির সমন্বয় প্রক্রিয়া দ্রুত বাস্তবায়িত হবে এবং ডিপোজিট গ্যারান্টি হার বাড়িয়ে ১ লাখ থেকে ২ লাখ টাকায় উন্নীত করা হয়েছে। এর ফলে বোঝা যায়, আসন্ন কিছুদিনের মধ্যেই শিগগিরই আমানতকারীরা তাঁদের অর্থ ফেরত পাবেন এবং ব্যাংকগুলো দ্রুত মুনাফার মুখ দেখবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
অর্থনৈতিক বিশ্লেষকদের মধ্যে সিপিডির ফেলো মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ঋণের এই ফাঁদ আমাদের দেশের জন্য খুবই বিরূপ। ঋণ নেওয়া মানে আবার ঋণ পরিশোধের চক্রে আবদ্ধ হওয়া। ইতিমধ্যে সরকারের বাজেটের প্রধান ব্যয় খাতগুলো হলো সরকারি কর্মচারীদের বেতন ও পেনশন, এরপর রয়েছে কৃষি ও শিক্ষা। কিন্তু বর্তমানে এই খাতগুলোতে অগ্রাধিকার কমে গিয়ে ঋণের সুদ পরিশোধের ধাক্কা বৃদ্ধি পেয়েছে।
এনবিআর চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান সতর্ক করে আরও বলেছেন, দেশের অর্থনীতি যত দ্রুত সম্ভব এ পরিস্থিতির থেকে মুক্ত না হবে, ততই উন্নয়নের পথে বাধা আরও বাড়বে। তিনি এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের জন্য সরকারের দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপের ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন অর্থনৈতিক উপদেষ্টা আসনের বিশেষ সহকারী আনিসুজ্জামান চৌধুরী। বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর তাদের মধ্যে অন্যতম। এই অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম ও অন্যান্য কর্মকর্তারা।

