এক দিনের ব্যবধানেই ভারত থেকে পেঁয়াজের আমদানির অনুমতি দেওয়ার পরে কেজিপ্রতি দাম ২০ থেকে ৪০ টাকা কমে গেছে। এর ফলে বাজারে কিছুটা স্বস্তি ফিরে এসেছে। ব্যবসায়ীরা আশাবাদ ব্যক্ত করছেন যে, আমদানি অব্যাহত থাকলে এবং মুড়িকাটা পেঁয়াজের সরবরাহ বেশি হলে দাম আরো হ্রাস পাবে। রবিবার বিভিন্ন বাজারের খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ঢাকায় পেঁয়াজের কেজি বিক্রি হয়েছে ১৩০ থেকে ১৫০ টাকায়, যা একদিন আগে ছিল প্রায় ১৫০ টাকায়। দিনাজপুর ও চট্টগ্রামের দাম আরও কম, দিনাজপুরে এর দাম around ১০০ টাকা এবং চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জে ১০০ থেকে ১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এর আগে একদিন আগেও এই দুই জেলায় পেঁয়াজের কেজি খুচরায় ১৩০ থেকে ১৫০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।
প্রথমে অস্থিরতা দেখা দেয় পেঁয়াজের বাজারে, চার-পাঁচ দিনের মধ্যে দাম ৪০ টাকার মতো বেড়ে যায়। তখন কেজিতে দাম পৌঁছায় ১১৫ থেকে ১২০ টাকায়। সরকারের সিদ্ধান্তে আমদানির অনুমোদন দেওয়া হলে ধীরে ধীরে দাম কমতে শুরু করে; এর ফলে দাম falling to ১০৫ থেকে ১১0 টাকায়। তবে যখন সরকারের সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসা হয়, তখন আবার দাম ফিরে যায় ১৫0 টাকায়। অবশেষে, বাজারে স্থিতিশীলতা ধরে রাখতে ও দাম নিয়ন্ত্রণে আনতে রবিবার থেকে সীমিত আকারে আমদানির অনুমতি দেয় সরকার।
সপ্তাহান্তে জানানো হয়, প্রতিদিন ৫০টি করে আইপি (আমদানির অনুমতি) ইস্যু করা হবে, যাতে প্রতিটি আইপিতে সর্বোচ্চ ৩০ টন পেঁয়াজের অনুমোদন দেওয়া হবে। ১ আগস্ট থেকে আবেদনকারীদের কেবল তারাই আবেদন করতে পারবেন, যারা আগ্রহী। একজন আমদানিকারক একবারের জন্যই আবেদন করতে পারবেন, এবং সরকারি নির্দেশনা না আসা পর্যন্ত এই কার্যক্রম চলমান থাকবে।
হিলি স্থলবন্দর দিয়ে তিন মাস পরে প্রথমবারের মতো ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি শুরু হয়েছে। রবিবার বিকেল সাড়ে ৪টায় তিনটি ট্রাক পেঁয়াজ বোঝাই করে বন্দরে প্রবেশ করে। এই খবর পেয়ে এই বন্দর এলাকায় খুচরা বাজারে কেজির দাম ৩০ থেকে ৩৫ টাকা কমে গেছে।
আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান রনি এন্টারপ্রাইজ জানিয়েছেন, ভারতের নাসিক জাতের পেঁয়াজ তারা আমদানি করেছে, তবে বিক্রির জন্য এখনও প্রস্তুত নেই; কাস্টমসের প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলে বিক্রি শুরু হবে। কাস্টমসের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ব্যবসায়ীরা শুল্কায়ন ও পরীক্ষণের জন্য আবেদন না করলে, কাস্টমসের কার্যক্রম শুরু সম্ভব নয়।
হিলি বন্দর পরিচালনা গ্রুপের সহ-সভাপতি শহিদুল ইসলাম জানিয়েছেন, আগস্ট থেকে নভেম্বর পর্যন্ত পেঁয়াজ আমদানির জন্য অনেক ব্যবসায়ী বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেছিলেন, কিন্তু কৃষকের ক্ষতি বিবেচনায় অনুমতি না দেওয়ায় বাজার অস্থির হয়ে পড়ে। রবিবার সন্ধ্যায় খুচরা ব্যবসায়ী মোকারম হোসেন জানিয়েছেন, শনিবারের দাম ১৩০ টাকায় বিক্রি হওয়া পেঁয়াজ এখন বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকায়। মোড়কজাত পেঁয়াজের দামও কমে ৮৫ টাকায় এসে দাঁড়িয়েছে।
চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জে, দেশের অন্যতম বৃহৎ পাইকারি বাজার, পেঁয়াজের দাম কমেছে কেজিতে ৩০ থেকে ৪০ টাকা। একদিন আগে যেখানে পাইকারিতে দাম ছিল ১১০ থেকে ১২০ টাকা, এখন তা বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ৯০ টাকায়। খুচরা বাজারেও ডাক্তারের আউটলেট হিসেবে দাম পড়েছে। একদিন আগে পেঁয়াজ বিক্রি হতো ১৪০ থেকে ১৫০ টাকা প্রতি কেজিতে, এখন তা ১০০ থেকে ১২০ টাকায়। ব্যবসায়ীরা বলেছেন, সরবরাহ বেড়েছে এবং আমদানির অনুমতিও পেয়ে গেছে, তাই দাম দ্রুত কমছে।
খাতুনগঞ্জের বড় মোকাম হামিদুল্লাহ মার্কেটের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ ইদ্রিস বলেন, সরকারের অনুমতি পাওয়ার খবর শুনে এক দিনেই দাম অনেকটা কমে গেছে। বাজারে সরবরাহও বেড়েছে। আশা করছেন, এক সপ্তাহের মধ্যে পুরোপুরি মুড়িকাটা পেঁয়াজ বাজারে আসবে, তখন দাম আরো কমবে বলে জানান।

