গাজা উপত্যকায় যুদ্ধবিরতি চলতে থাকলেও অবরুদ্ধ ফিলিস্তিন অঞ্চলের পশ্চিম তীরে ইসরায়েল নতুন করে ইহুদি বসতি গড়ে তোলার পরিকল্পনা নিয়ে তৎপরতা বাড়িয়েছে। এরইমধ্যে, ইসরায়েলের সরকার ৭৬৪টি নতুন বাড়ির নির্মাণের জন্য অনুমোদন দিয়েছে। এই অনুমোদন পাওয়ার খবর বুধবার (১০ ডিসেম্বর) তুর্কি সংবাদ সংস্থা আনাদোলু ও ইসরায়েলি মিডিয়া চ্যানেল সেভেনের প্রতিবেদনে জানানো হয়। সূত্র জানিয়েছে, মঙ্গলবার (৯ ডিসেম্বর) ইসরায়েলি সরকারের এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এতে উল্লেখ করা হয়েছে, হাশমোনাইম এলাকায় ৪৭৮টি, বেইতার ইল্লিতে ২৩২টি এবং গিভাত জেএভ এলাকায় ৫৬টি করে মোট ৭৬৪টি বাড়ি নির্মাণের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। তবে, এই ব্যাপারে এখনো সরকারি আনুষ্ঠানিক কিছু প্রকাশ হয়নি।
বিশ্লেষকদের মতে, আন্তর্জাতিক আইন ও সাধারণ জনমতের তোয়াক্কা না করেই ইসরায়েল ধীরে ধীরে পশ্চিম তীরে দখলকৃত অঞ্চল বাড়াতে থাকছে। ২০২২ সালে প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর নেতৃত্বে নতুন সরকার গঠনের পর থেকে এই প্রক্রিয়া আরও দ্রুততর হয়েছে। ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী, গত তিন বছরে নেতানিয়াহুর আমলে পশ্চিম তীরের বিভিন্ন এলাকায় ৫১,৩৭০টি নতুন বাড়ি নির্মাণের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
পশ্চিম তীর ও পূর্ব জেরুজালেমে বর্তমানে প্রায় ২ লাখ ৫০ হাজার থেকে ৪ লাখ ৫০ হাজারের বেশি ইহুদি বসতি বসবাস করছে। জাতিসংঘের তথ্যমতে, মধ্যপ্রাচ্যের আল-আকসা অঞ্চলে ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনের পৃথক রাষ্ট্রের স্বীকৃতি থাকলেও, অবৈধ দখলদারিত্বের কারণে ইসরায়েল বারবার তাদের বসতি বাড়িয়ে চলেছে। প্রতি বছরই এই সংখ্যা বাড়ছে, যা প্রস্তাবিত স্বতন্ত্র ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের ভূখণ্ড সংকুচিত করছে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের বহুবার আপত্তি সত্ত্বেও ইসরায়েল এই পদক্ষেপ থেকে বিরত হয়নি।
গত বছরের জুলাই মাসে জাতিসংঘের ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অব জাস্টিস পশ্চিম তীর ও পূর্ব জেরুজালেমে নতুন বাড়িঘর নির্মাণকে অবৈধ আখ্যায়িত করে, ইসরায়েলকে এই বসতি অপসারণের নির্দেশ দিয়েছে। এরপরও এখনও পর্যন্ত ঐ নির্দেশনা বাস্তবায়নে কোন প্রকার পদক্ষেপ নেয়নি ইসরায়েল।
সূত্র: আনাদোলু এজেন্সি
আজকের খবর / এমকে