বিশ্ব রাজনীতি জটিল ও উত্তপ্ত সময়ে ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোকে কেন্দ্র করে রাশিয়া ও তার মিত্র দেশগুলো নতুন দিক নির্দেশনা দিচ্ছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যখন ভেনেজুয়েলার বর্তমান সরকারকে সরিয়ে দেওয়ার জন্য চাপ বাড়াচ্ছেন, ঠিক তখনই রাশিয়া ও বেলারুশ মাদুরোকে সমর্থন জানিয়েছে। ক্রেমলিনের মুখপাত্র জানিয়েছেন, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন গত ১১ ডিসেম্বর ফোন কলের মাধ্যমে ভেনেজুয়েলার নেতাকে জানান তিনি মাদুরো সরকারের নীতিকে পর্যাপ্ত সমর্থন দিচ্ছেন। অন্যদিকে, বেলারুশের রাষ্ট্রপ্রধান আলেকজান্দার লুকাশেঙ্কো গত ১৭ ডিসেম্বর মস্কোয় ভেনেজুয়েলার রাষ্ট্রদূত হেসুস রাফায়েল সালাজার ভেলাসকেজের সঙ্গে এক বৈঠক করেন। বেল্টা সংস্থা জানিয়েছে, লুকাশেঙ্কো ২৫ নভেম্বর বলেছিলেন যে, বেল্যারুশ সব সময় মাদুরোকে স্বাগত জানাতে প্রস্তুত। তবে রয়টার্সের পক্ষ থেকে লুকাশেঙ্কোর দপ্তরে প্রশ্ন করা হয়েছিল, মাদুরো যদি পদত্যাগ করেন তবে বেল্যারুশ তার জন্য কি প্রস্তুত—কিন্তু কোনো উত্তর পাওয়া যায়নি। অন্যদিকে, মার্কিন প্রশাসন বলছে, তারা ২০১৩ সাল থেকে ক্ষমতায় থাকা মাদুরোকে ভেনেজুয়েলার বৈধ প্রেসিডেন্ট হিসেবে স্বীকৃতি দেয় না। গত বছর তিনি নিজেকে পুনরায় নির্বাচিত বললেও মার্কিন ও পশ্চিমা গোষ্ঠী তা ভুয়া বলে দাবি করেছে। স্বাধীন পর্যবেক্ষকদের মতে, বিরোধী প্রার্থীরা ব্যাপক ব্যবধানে জয় লাভ করেছিলেন। সাম্প্রতিক মাসগুলোতেও ট্রাম্প তার দমন-পীড়নের মাধ্যমে ভেনেজুয়েলাতে চাপ আরো বাড়িয়েছেন, বিশেষ করে ক্যারিবীয় অঞ্চলে সেনাবাহিনীর উপস্থিতি বাড়িয়ে। এই সপ্তাহে পলিটিকোকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প বলেছিলেন, মাদুরোর সময় শেষ হতে চলেছে, তবে মার্কিন সেনা পাঠানোর ব্যাপারে কিছু বলেননি। বেলারুশের ইতিহাসে নেতৃত্ব দিচ্ছেন এক বিশিষ্ট স্বৈরাচারী নেতা, লুকাশেঙ্কো, যিনি ভেনেজুয়েলার সঙ্গে তাদের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রেখেছেন। আগের সূত্রগুলো জানিয়েছে, মাদুরো ২১ নভেম্বর ট্রাম্পের ফোনে বলেছিলেন, তিনি ভেনেজুয়েলা ছেড়ে যেতে প্রস্তুত, তবে শর্ত ছিল তাঁর ও তাঁর পরিবারের সম্পূর্ণ আইনি ক্ষমা। এই সব তথ্যের মাধ্যমে বোঝা যায়, পরিস্থিতি আরও জটিল ও উত্তেজনাপূর্ণ হয়ে উঠছে বিশ্ব রাজনীতির ডানপাশে।

